২০২৩ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে দেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ কমেছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। নির্বাচন, ঋণ পুনঃতপশিল আর অবলোপনের কারণে খেলাপি ঋণ কমেছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ডিসেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকগুলো মোট ঋণ বিতরণ করেছে ১৬ লাখ ১৭ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৯ শতাংশ।
গত সেপ্টেম্বর শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা। এটি ছিল মোট বিতরণকৃত ঋণের ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি কমেছে ৯ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। এটি গত বছরের (ডিসেম্বর-২০২২) একই সময়ের চেয়ে ২৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা বেশি। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা।
তথ্য বলছে, কাগজে-কলমে খেলাপি ঋণ কমেছে দেখা গেলেও এসব ঋণ পুনঃতপশিল বা অবলোপন হয়েছে। ২০২৩ সালের প্রথম ৯ মাসে ব্যাংক খাতে পুনঃতপশিল হয়েছে ১৮ হাজার ৮১২ কোটি টাকা। আর শেষ তিন মাসে পুনঃতপশিল হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। এর বাইরে গত বছর সুদ মওকুফ করা হয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কাগজে-কলমে কমলেও মূলত উল্টো বেড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন কালবেলাকে বলেন, খেলাপির যে চিত্র যা উঠে এসেছে প্রকৃত চিত্র এটা না। প্রকৃত চিত্র আরও ভয়াবহ, আরও বড় হবে। তবে এখানে যে ঋণ কম দেখানো হয়েছে এগুলো কি আদায় হয়েছে? আদায় না হলে বুঝতে হবে এসব ঋণও মন্দমানের ঋণ। কাগজে-কলমে খেলাপি ঋণ কম না দেখিয়ে খেলাপি ঋণ আদায়ে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
মন্তব্য করুন