দেশের প্রধানতম রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের জন্য ৭টি সুনিদিষ্ট নির্দেশনা জারি করেছে খাত সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বা বিকেএমইএ। এর মধ্যে শ্রমিক অসন্তোষ; নিয়োগ বন্ধ রাখা; কারখানা তথ্য সরবরাহে সচেতনতা বাজায় রাখা; শ্রমিকদের তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা; সিসি টিভির ফুটেজ নিরাপদে সংরক্ষণ করা; শ্রমিকদের অভিযোগ গুরুত্বসহ সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া এবং শ্রমিক কর্মবিরতি বা কারখানা থেকে বের হয়ে গেলে শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় কারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি চিঠি কারখানা মালিকদের নিকট পাঠিছেন বিকেএমইএর সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান।
চিঠিতে তিনি বলেন, নিটশিল্প বর্তমানে একটি ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি সারা বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের ডামাডোলের কারণে অর্থনৈতিক সংকট প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও নেতিবাচকভাবে পড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই দেশের প্রধানতম রপ্তানি খাত নিটশিল্প খাতে এর প্রবাহ আমরা ইতোমধ্যেই লক্ষ্য করতে শুরু করেছি।
তিনি বলেন, এর মধ্যেই ন্যূনতম মজুরি কাঠামো ঘোষিত হয়েছে, যা কষ্টকর হলেও বাস্তবায়ন করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী বা মহল এই সুযোগে এই শিল্পটিকে ধ্বংস করার জন্য নানা ধরনের ষড়যন্ত্রের ছক আঁকছে। মনে রাখতে হবে, দেশের স্বার্থে, দেশের অর্থনীতির স্বার্থে এবং শ্রমিকদের স্বার্থে এই শিল্পকে আমাদের টিকিয়ে রাখতে হবে।
সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার স্বার্থে সামনের দিনগুলোকে বিকেএমইএর নিম্নোক্ত নির্দেশনাগুলো মেনে চলার জন্য সহযোগিতা কামনা করছি।
বিকেএমইএর ৭ নির্দেশনায় কারখানা মালিকদের কারখানায় যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা; জরুরি প্রয়োজন না হলে কারখানায় শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ রাখা, কারখানার গেইটে ‘নিয়োগ বন্ধ’ নোটিশটি দৃশ্যমান করার ব্যবস্থা করা। নতুন নিয়োগ প্রয়োজন হলে শ্রমিকের সব তথ্য যাচাইপূর্বক নিয়োগ প্রদান করা। প্রয়োজনে ওয়ার্কার্স ডাটাবেইজসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্যাদি সম্পর্কে নিশ্চিত করা।
তথ্য সরবরাহের সচেতন হওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে, বিকেএমইএর লিখিত অনুমোদন ব্যতীত তৃতীয় কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট কারখানার তথ্য বা উপাত্ত প্রদান থেকে বিরত থাকা; তথ্য ভাণ্ডারের বিষয়ে বলা হয়েছে, কারখানার ওয়ার্কার ডাটাবেইজ আবশ্যিকভাবে হালনাগাদ করতে হবে। কারণ, শ্রমিকদের যে কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান বা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নিয়োগসংক্রান্ত তথ্যাদি অত্যাবশ্যকীয়; নিরাপত্তার বিষয়ে কারখানার সব ধরনের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রশাসনিক তদারকি বাড়াতে হবে এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিরাপদে সংরক্ষণে রাখতে হবে। নিয়মিতভাবে শ্রমিকদের সাথে আলোচনাসহ তাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো শোনা ও তা লিপিবন্ধ করা এবং কোনো সমস্যা চিহ্নিত হলে তা দ্রুত সমাধান করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
কারখানা বন্ধের বিষয়ে বলা হয়েছে, যেসব কারখানার শ্রমিকরা কাজ করা থেকে বিরত থাকবে বা কারখানা ছেড়ে বেড়িয়ে যাবে, সেসফল কারখানার মালিক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যথাযথ আলোচনা সাপেক্ষে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ১৩(১) এর বিধান মোতাবেক কারখানা বন্ধ করে দিতে পারেন।
মন্তব্য করুন