নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচা করায় সাত মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে ছয়টির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এসব মানি চেঞ্জার বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনে ডলার কেনাবেচা করবে বলে মুচলেকা জমা দেওয়ায় এই প্রত্যাহার দেওয়া হয়েছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠান এখন থেকে আবার স্বাভাবিকভাবে লেনদেন করতে পারবে।
এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক কালবেলাকে বলেন, তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মের ব্যত্যয় করে বেশি দামে ডলার কেনাবেচা করেছিল বলেই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। এখন তারা অঙ্গিকারনামা দিয়ে বলেছে, এখন থেকে তারা আর নিয়মের ব্যত্যয় করবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনেই তারা তাদের কার্যক্রম করবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সের স্থগিতাদেশ তুলে দেওয়া হয়েছে।
একই বিষয়ে মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল শিকদার কালবেলাকে বলেন, নির্ধারিত দরের বাইরে ডলার কেনাবেচা করায় এসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছিল। এখন তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে তাদের ভুল স্বীকার করে ভবিষ্যতে আর এ ধরনের কাজ করবে না বলে ক্ষমা চেয়ে মুচলেকা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের ক্ষমা করে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এটি অব্যশ্যই খুব ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ কাজ করতে গেলে তো একটু ভুল-ত্রুটি হয়ই। আর সবসময় তো মালিকরা থাকেও না। কর্মচারীরা অসাবধানতাবশত হয়তো কিছু ভুল করেছে। এজন্য তো প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করা ঠিক না। কারণ লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান আছে মাত্র ২৩৫টা। এর মধ্যে যদি ৬/৭ টা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল হযে যায় তাহলে থাকে কি। এই বিবেচনায় আমাদের অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও লাইসেন্স স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে।
লাইসেন্ড স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হওয়া ছয় মানি চেঞ্জারগুলো হলো- ইয়র্ক মানি এক্সচেঞ্জ, জামান মানি চেঞ্জিং হাউস, জেনি মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড মানি এক্সচেঞ্জ, জেবি মানি এক্সচেঞ্জ ও বেঙ্গল মানি এক্সচেঞ্জ। এর বাইরে মার্সি মানি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি, এজন্য স্থগিতাদেশ বহাল আছে।
স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হওয়া মানি চেঞ্জারগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনে এক কাউন্টারের মধ্যে ডলার কেনা বেচার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পাশাপাশি নির্ধারিত দামে ব্যাবসা করার আশ্বাস দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংকের চেয়ে সর্বোচ্চ ১ টাকা বেশি দামে নগদ ডলার বিক্রি করতে পারবে মানি চেঞ্জারগুলো। ফলে ডলারের দাম হয় ১১২-১১৩ টাকার মধ্যে। তবে এখন খোলা বাজারে ডলার ১১৯-১২০ টাকা। ব্যাংকেও নগদ ডলার মিলছে না।
ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচা করাও আরও ১০ মানি চেঞ্জারের কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সবাই ব্যাখ্যা না দেওয়ায় এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। ব্যাখ্যা তলব করা ১০ মানি চেঞ্জার হলো- নিউ প্রাইম মানি চেঞ্জার, উত্তরা মানি চেঞ্জার, মিসা মানি এক্সচেঞ্জ, যমুনা মানি এক্সচেঞ্জ, পাইওনিয়ার মানি এক্সচেঞ্জ, বুড়িগঙ্গা মানি এক্সচেঞ্জ, স্কাফ মানি চেঞ্জার, হযরত খাজা বাবা মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র, গ্লোরি মানি এক্সচেঞ্জ ও মাতৃক মানি চেঞ্জার।
মন্তব্য করুন