প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড়াল ২১ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে দেশের রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ১৪০ কোটি ডলার।
রোববার (০৯ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের মার্চের ৬ তারিখ পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৬০ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬৬০ কোটি ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী বর্তমানে রিজার্ভ হলো ২১ দশমিক ৪০ বিলিয়ন বা ২ হাজার ১৪০ কোটি ডলার।
এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ১৩ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬১৩ কোটি ডলার। ওই দিন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৯০ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৯০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ২ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এ ছাড়া গত ফেব্রুয়ারি মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে প্রায় চার বিলিয়ন (৩.৯৭ ) ডলার, যা গত বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় ২ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৪ বিলিয়নের ডলারের নিচে নামে। সেসময় বৈদেশিক ঋণ ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কেনার মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানো হয়। বর্তমান সরকারের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ আছে। আবার বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার যোগ হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এতে ধারাবাহিকতায় ক্রমেই বাড়ছে রিজার্ভ।
এদিকে গত ডিসেম্বর মাসে দেশে প্রবাসী আয়ের নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে নতুন রেকর্ড হয়। ২০২৪ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২ হাজার ৬৮৯ কোটি ডলার (২৬ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন) সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়েছেন। এর আগে এত বড় অঙ্কের রেমিট্যান্স কোনো বছরে আসেনি। অর্থাৎ দেশের ইতিহাসে এটি এক বছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অন্যতম উপাদান হলো প্রবাসী আয়, রপ্তানি আয় ও বিদেশি ঋণ। তবে এর মধ্যে প্রবাসী আয় ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয় না, আবার কোনো দায়ও পরিশোধ করতে হয় না; কিন্তু রপ্তানি আয়ের বিপরীতে দেশে ডলার এলেও তার জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে আবার বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয়। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতেও ডলারের প্রয়োজন হয়। ফলে প্রবাসী আয় বাড়লে দেশে রিজার্ভ বাড়ে এবং অর্থনীতি শক্তিশালী হয়।
মন্তব্য করুন