বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের লকার খোলার অনুমতি পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (০৩ জানুয়ারি) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন এ আদেশ
আদালতের আদেশে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নমনীয় লকার বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে খুলে প্রাপ্ত সামগ্রী ইনভেন্টরি করার নিমিত্ত অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করার জন্য ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানকে নিয়োগ করা হলো।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ আদেশের ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সেইফ ডিপোজিট তল্লাশির বাধা কাটলো।
এদিকে মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকা অন্য কর্মকর্তাদের লকার খুলতে আদালতের অনুমতি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে অন্য কর্মকর্তাদের লকারেও অবৈধ সম্পদ থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের তথ্য পেলে অন্য ব্যাংকগুলোর লকারেও দুদক অভিযান চালাবে বলে জানান তিনি।
এর আগে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা ভল্টে কর্মকর্তাদের অর্থ-সম্পদ জমা রাখার ব্যক্তিগত সব লকার সাময়িকভাবে অবরুদ্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গভর্নরকে চিঠি দেয় দুদক। ওই চিঠি পাওয়ার পর ব্যাংকে সংরক্ষিত সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের সব লকার ফ্রিজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র। সূত্র জানায়, বর্তমানে লকারে কোনো সম্পদ রাখতে দেওয়া হচ্ছে না। একইসঙ্গে কোনো সম্পদ বের করতে দেওয়া হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান চলমান থাকার কথা জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, ‘গত ৩০ জানুয়ারি বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রক্ষিত সম্পদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ওই ভল্টে রক্ষিত সম্পদ সাময়িকভাবে ফ্রিজের সম্মতি দিয়েছেন।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি টিম গত ২৬ জানুয়ারি আদালতের অনুমতি নিয়ে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েন ভল্টে রক্ষিত সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরীর সেফ ডিপোজিট তল্লাশি করে। সেখানে তিনটি সিলগালা কৌটা খুলে ৫৫ হাজার ইউরো, ১ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলার, ১হাজার৫ দশমিক৪ গ্রাম স্বর্ণ এবং ৭০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া যায়।
মন্তব্য করুন