তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে একটি বড় চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার। এই চুক্তির আওতায় প্রতি বছর ৫০ লাখ টন (৫ মিলিয়ন টন) এলএনজি কিনবে বাংলাদেশ। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানাভিত্তিক আর্জেন্ট এলএনজি কোম্পানি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে আর্জেন্ট এলএনজি কোম্পানিটি লুইজিয়ানায় বার্ষিক ২৫ মিলিয়ন টন (এমটিপিএ) এলএনজি উৎপাদন সক্ষমতার অবকাঠামো নির্মাণ করছে। বাংলাদেশের সঙ্গে এই চুক্তিটি একটি বাধ্যবাধকতাহীন চুক্তি হিসেবে স্বাক্ষরিত হয়েছে। যদি লুইজিয়ানায় পোর্ট ফোরশনে আর্জেন্ট এলএনজির প্রকল্পটি সম্পন্ন হয়, তবে এর কার্গোগুলো বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি সংস্থা পেট্রোবাংলার কাছে বিক্রি হতে পারে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর চুক্তিটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম বড় এলএনজি সরবরাহ চুক্তি। শিল্প বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি নতুন প্রশাসনের জ্বালানি বান্ধব নীতির প্রতি আস্থার প্রতিফলন। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন। এসব পদক্ষেপের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি বিভাগের এমন লাইসেন্স স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করাও অন্তর্ভুক্ত। ফলে সেই দেশগুলোতে সুপার-কোল্ড গ্যাস রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রকে অনুমতি দেয়, যেসব দেশের সঙ্গে দেশটির মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই।
যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গে এই চুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথোরিটির (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে জানান, এই চুক্তি বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্প ভিত্তির জন্য নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করবে। এ ছাড়াও এটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও শক্তিশালী করবে।
জ্বালানি চাহিদা মেটানোর জন্য বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি সমাধান খুঁজছে। এ ছাড়াও এলএনজির ব্যবহার বাড়ানোর দিকে জোর দেওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তবে ২০২২ সালে যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয় তখন এলএনজির মূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঘটে। এরপর থেকে সস্তা কয়লা ব্যবহারের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এলএনজি সরবরাহে বাংলাদেশ ১৫ বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় কাতার এনার্জি ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে। চুক্তির আওতায় তারা বাংলাদেশে বছরে ১ মিলিয়ন বা ১০ লাখ টন এলএনজি সরবরাহ করবে। ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এই এলএনজি সরবরাহ শুরু করার কথা রয়েছে।
মন্তব্য করুন