সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ১০০টি ইকোনমিক জোন করার কথা ছিল বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষের (বেজা)। তবে আপাতত একসঙ্গে সবগুলোর কার্যক্রম চলবে না। প্রথমধাপে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি মাত্র ৫টি ইকোনমিক জোন নিয়ে কাজ করবে বেজা। এগুলোর সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সার্বিক কাজ আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে শেষ করা হবে। পরে আরও ৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ শুরু হবে।
মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বেজার সম্মেলন কক্ষে মিট দ্য প্রেসে এ তথ্য জানান সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।
চেয়ারম্যান বলেন, ১০০ ইকোনমিক জোন নির্মাণের জায়গা থেকে আমরা সরে যাচ্ছি না। তবে এখন আমাদের মনে হচ্ছে, আগামী ১০ বছরের মধ্যে আমরা ১০টি ইকোনমিক জোনের কাজ পরিপূর্ণভাবে শেষ করতে চাই। এই ৫টা সম্পূর্ণভাবে ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন হয়ে গেলে এবং পরবর্তী প্রয়োজন হলে আমরা বাকি জোনগুলোতে কাজ শুরু করব। যেসব এলাকায় মানুষ পিছিয়ে আছে, সেখানে বেজার কাজ হচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও কর্মসংস্থানর সৃষ্টি করা। বেজার কাজ প্রফিট করা নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখনো সরকারি এই ৫টি ইকোনমিক জোনে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ দিতে পারিনি। তবে আমরা পরিকল্পনা করেছি, আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে এই ৫টি ইকোনমিক জোনে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও যোগাযোগ ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া বেসরকারি ইকোনমিক জোনের জন্য রোডম্যাপ করা হবে। এই রোডম্যাপ অনুযায়ীই বেসরকারি ইকোনমিক জোনগুলোতে যোগাযোগ, পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ কর হবে।
আশিক চৌধুরী বলেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে আড়াই লাখ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা হবে। সরকারের দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা আছে। কিন্তু পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয় না। আমি আগামী দুই বছরের মধ্যে আমরা এই পাঁচটি ইকোনমিক জোনে সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সম্ভব হবে। কিন্তু আমাদেরও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনাও আছে। বর্তমানে বেজার ওয়েবসাইট থেকে ৬০টি ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু আছে এবং আরও সার্ভিস চালুর অপেক্ষায় আছে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে আরও ১৩৩টি বিনিয়োগকারীর মাধ্যমে সাড়ে ৫শ’ কোটি ডলার বিনিয়োগ আনার পরিকল্পনা রয়েছে। একশটি ইজেড বন্ধ বা বাতিল করার কোনো পরিকল্পনা নেই। আমরা অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে কাজ করছি। এ পর্যন্ত সাত হাজার ২শ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ৪৫ হাজার কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ৮৩টি বিনিয়োগকারী ছাড়া বাইরের সবচেয়ে বেশি চীনের ১১টি। এরপর জাপান ৬টি ও যুক্তরাজ্যের ৪টি রয়েছে। এ ছাড়াও ৯টি দেশের বিনিয়োগকারী রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের সমস্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, নীতিমালার দফায় দফায় পরিবর্তন, সরকারি সেবার মান কম, মিরসরাই জোনে পানির সমস্যা, বিভিন্ন সেবা সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীন রয়েছে। মিরসরাইতে শ্রমিক সংকট রয়েছে। কারণ সেখানে আবাসনের সমস্যা।
মন্তব্য করুন