ভারতের সঙ্গে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা রাখবে না বলে মনে করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ইস্যুতে তেমন কোনো সমস্যা নেই। বাণিজ্যিক ব্যাপারে রাজনীতি আসছে না। ভারত থেকে চাল আমদানি করব কি করব না, এগুলো মেটার না। যারা প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে দেবে, দ্রুত দেবে এবং কোয়ালিটি থাকবে, সেখান থেকে নেব; সেটা ভারত বা অন্য কোনো দেশ হতে পারে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এসব কথা বলেন তিনি।
ভারত ও মিয়ানমারের পাশাপাশি ভিয়েতনামের সঙ্গে কথা বলছেন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এগুলোর ব্যাপারে রাজনীতি প্রবেশ করবে না।
পশ্চিমবঙ্গের একজন রাজনীতিবিদ বলেছেন, তারা বাংলাদেশে কিছু রপ্তানি করবে না। কূটনৈতিক দেনদরবার করছেন কি না, এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সেটা কূটনীতিকরা দেখবেন। ভারতে চাল, পেঁয়াজ উৎপাদন হয়, যখন অতিরিক্ত থাকে, তখন কোথায় বিক্রি করবে?
রাজনীতিবিদরা কী বলেন, সেটা ব্যবসায়ীরা দেখবেন না। তারা প্রয়োজনে রাজনীতিবিদদের কথার প্রতিবাদ করবে। প্রয়োজনের তুলনায় উৎপাদন বেশি হয়ে গেলে তারা তো বিক্রি করবেই।
বৈঠকে প্রতি টন ৫১৫ ডলার দরে মিয়ানমার থেকে এক লাখ টন আতপ চাল আর প্রতি টন ৪৬৭ দশমিক ৭০ ডলার মূল্যে ভারত থেকে ৫০ হাজার টন চাল কেনার প্রস্তাবও অনুমোদন হয়।
বৈঠকে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজের কাছ থেকে প্রতি কেজি ১১৮ টাকা ৪৩ পয়সা দরে ৫ হাজার টন চিনি কেনার অনুমোদনও দেওয়া হয়। ৯৬ টাকা ৬৯ পয়সা ধরে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে কেনা হবে ১০ হাজার টন মসুর ডাল।
নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকার নিত্যপণ্যের আমদানি শুল্ক কমিয়েছে। এর প্রভাব পড়তে কিছুটা সময় লাগবে। এ সময় একটু ধৈর্য ধরার পরামর্শ দেন উপদেষ্টা। সরবরাহ চেইন একটি ‘জটিল বিষয়’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নিত্যপণ্যের দাম কবে নিয়ন্ত্রণে আসবে, এ প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, একেবারে যে স্থিতিশীল না, সে বিষয়ে আমি এগ্রি করি না। জিনিসপত্রের দাম কমছে কিছুটা।
তিনি বলেন, আজ আমরা চাল, মসুর ডাল আমদানির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সয়াবিন তেলের দাম অনেক বেড়ে গেছে। সেটা কীভাবে কতটুকু কমিয়ে আনা যায়, সে বিষয়ে আমরা আলাপ করেছি। আমরা তো সবকিছুর ডিউটি (শুল্ক) কমিয়ে দিয়েছি। একটু ধৈর্য ধরুন, এর প্রভাব পড়বে।
আর কতদিন ধৈর্য ধরতে হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা একটা জটিল বিষয়। সাপ্লাই চেইনের ভেতরে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। পরিবহনের ব্যাপার আছে, বাজারের ব্যাপার, সেগুলো বিবেচনায় না আনলে তো হবে না।
বাজারে কথিত ‘সিন্ডিকেট’ নিয়ে করা এক প্রশ্নে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সিন্ডিকেট তো এক জায়গায় না। আপনি ‘সিন্ডিকেট’ ভাঙতে যাবেন, কোথাও বসে আছে সে নিয়ন্ত্রণ করে। চাঁদাবাজির ‘সিন্ডিকেট’ আছে, পরিবহনের ‘সিন্ডিকেট’ আছে, রাজনৈতিক আছে। আমি সব সময় বলি, রাজনৈতিক সমঝোতা খুব কঠিন, চাঁদাবাজির সমঝোতা খুব সহজ।
মন্তব্য করুন