ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ ২৫-৩০ শতাংশে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, এসব ঋণের বড় অংশ ২০১৭ সালের পর দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিবিষয়ক শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। রোববার (০১ ডিসেম্বর) দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এই শ্বেতপত্র হস্তান্তর করা হয়। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদনটি জমা দেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এই বক্তব্য দেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার এই বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করেছেন।
গভর্নর বলেন, আমরা দেশের আর্থিক খাতের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। সামনে খেলাপি ঋণ ২৫-৩০ শতাংশে পৌঁছে যাবে, এখন যা সাড়ে ১২ শতাংশ। আগামী মাসে তা ১৫ শতাংশ, এরপর ১৭ শতাংশ হয়ে ধীরে ধীরে ৩০ শতাংশে পৌঁছে যেতে পারে। এই খেলাপি আগেই হয়ে আছে। এখন হিসাবে তা আসবে। এটা কমিয়ে আনতে আমরা কাজ শুরু করেছি।
তিনি বলেন, সামনে খেলাপি ঋণ যেটা দাঁড়াবে তার অর্ধেক বা আড়াই লাখ কোটি টাকা হবে এস আলম, সাইফুজ্জামানসহ (সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী) বড় কয়েকটি গ্রুপ ও ব্যবসায়ীর। ২০১৭ সালের পরে এসব ঋণ নেওয়া হয়। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা পাচার করা হয়।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে তদারকি জোরদার করতে হবে, যা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ব্যাংকগুলোর সম্পদের মান পরীক্ষা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে করা হচ্ছে, যা ১১ ডিসেম্বর শুরু হবে। প্রথমে ১২টি ব্যাংক ও পরে ২০ ব্যাংকে নিরীক্ষা করা হবে। এতে প্রকৃত চিত্র বের হয়ে আসবে। এরপর এসব ব্যাংকের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রয়োজন হবে। আমরা অবশ্যই আমানতকারীদের রক্ষা করতে পদক্ষেপ নেব। আমানতের সুরক্ষা দেওয়া হবে। ব্যাংকগুলোকে টাকা দেওয়া হয়েছে, আশা করছি এর মাধ্যমে গ্রাহক আস্থা ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, ব্যাংকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আইন করা হচ্ছে। পাচারের টাকা ফেরত আনতে আন্তর্জাতিক সব সংস্থাকে কাজে লাগানো হচ্ছে। তবে এটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া।
মন্তব্য করুন