প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশকে সমৃদ্ধ করছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. ইয়াকুব সৈনিক বলেছেন, আল আবির ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল মার্কেটের প্রায় পুরো ব্যবসায়িক কাঠামো বাংলাদেশিদের নিয়ন্ত্রণে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) নবনিযুক্ত কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামানের সঙ্গে আল-আবির বাংলাদেশ বিজনেস এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া এদেশের অটো, ইলেকট্রিক গ্যারেজ এবং টেক্সটাইল শিল্পেও বাংলাদেশিদের প্রশংসনীয় অবদান আছে। এগুলো প্রচার করতে হবে তবে গণমাধ্যমে এই সাফল্য যথাযথভাবে প্রচার না হওয়ায় বাংলাদেশের নাম ছড়াচ্ছে না।
মো. ইয়াকুব সৈনিকের নেতৃত্বে সংগঠনের অন্যান্য নেতারা এতে অংশ নেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের অর্থনৈতিক অবদান এবং রপ্তানি প্রসারের সম্ভাবনা নিয়ে এই বৈঠকে বিশদ আলোচনা হয়।
তারা কনসাল জেনারেলের সঙ্গে দুবাইয়ের বর্তমান পরিস্থিতি, ব্যবসায়িক চ্যালেঞ্জ এবং প্রবাসীদের সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপের বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। এসময় দেশের সঙ্গে আমিরাতের বাণিজ্য সম্প্রসারণে সমুদ্র পথে দুবাইয়ে পণ্য রপ্তানির আহ্বান জানানো হয়।
সভায় ইয়াকুব সৈনিক বলেন, আল-আবির ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল মার্কেটে বাংলাদেশ থেকে সরবরাহ করা শাকসবজি ও ফলমূল বিক্রি করা হয়। বর্তমানে অধিকাংশ পণ্য বিমানের কার্গোতে দ্রুত সময়ে আনা সম্ভব হলেও পরিবহন খরচ বেশি পড়ে। যার ফলে এসব পণ্য প্রসার এবং লাভ কম। তবে সম্প্রতি ‘দুবাই টু চট্টগ্রাম’ রুট ব্যবহার করে পাকিস্তান ও চীন থেকে বাংলাদেশে যাওয়া জাহাজগুলো নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, এসব জাহাজে করে যদি বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ে শাকসবজি ফলমূলসহ পণ্যদ্রব্য পৌঁছানো যায় তাহলে পরিবহন ব্যয় অনেক কম পড়বে। যা ব্যবসায়ীদের এসব পণ্য বিক্রি ও প্রসারে আরও উদ্বুদ্ধ করবে। তা ছাড়া এ ব্যবস্থা চালু হলে পরিবহন ব্যয় কমে আসবে এবং পণ্যের বাজার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সম্ভাবনা বাড়বে।
এই উদ্যোগ বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং রেমিট্যান্স প্রবাহও বৃদ্ধি করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় প্রবাসীদের ভিসা জটিলতার বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, ভিসা বন্ধের পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে। এখানে অধিকাংশ ব্যবসায়ী বাংলাদেশি। কিন্তু এসব সাফল্য প্রচার হচ্ছে না। বরং আমরা কোথায় মিটিং-মিছিল করছি শুধু এগুলোই প্রচার হয়। যার জন্য প্রবাসীদের ওপর একটা খারাপ প্রভাব পড়ছে।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদান দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে একজন প্রতিনিধি নিয়োগ করা জরুরি। এ প্রতিনিধি প্রবাসীদের সাফল্য এবং অর্থনৈতিক অবদান তুলে ধরতে কাজ করবেন, যা প্রবাসী সমাজের প্রতি আমিরাতের সরকারের মনোযোগ বাড়াবে।
তিনি আরও বলেন, প্রবাসী কমিউনিটিতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ এবং সংগঠনগুলোকে এ বিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। এমনটা হলে প্রবাসের বুকে বাংলাদেশিদের সুনাম বাড়বে যা ভবিষ্যতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে এবং দেশকে সমৃদ্ধ করবে।
মন্তব্য করুন