দেশি পেঁয়াজের দাম বেশি, ক্রেতারা ঝুঁকছেন আমদানি করা পাকিস্তান ও মিশরীয় পেঁয়াজের দিকে। ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ থাকায় এবং তুলনামূলক দাম কম হওয়ায় ক্রেতারা ঝুঁকছেন এই পেঁয়াজের দিকে। খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়লেও কমেছে মিসর ও পাকিস্তানি পেঁয়াজের দাম।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শ্যামবাজার পেঁয়াজের পাইকারি আড়তগুলো ঘুরে দেখা মেলে আমদানি করা মিসরীয় ও পাকিস্তানি পেঁয়াজের। শ্যামবাজারে পাইকারি পেয়াজ ব্যবসায়ী জামাল বলেন, গত মাস থেকে বাজারে পাকিস্তানি ও মিসরীয় পেঁয়াজ আসতে শুরু করলে তার চাহিদা এখন বেড়েছে কয়েক গুণ। মিসরীয় পেঁয়াজ বাজারে এসেছে দেড় মাস আগে। প্রথম দিকে কেজি প্রতি ৯০-৯৫ টাকা বিক্রি হলেও এখন তা কমে পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৮৩-৮৬ টাকায়; আর খুচরা বাজারে মিলছে ৯০-৯২ টাকায়। একই সময়ে বাজারে আসা পাকিস্তানি পেঁয়াজ শুরুতে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন তা কমে ৯০ টাকায় নেমেছে। অবশ্য খুচরা বাজারে এখনো বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। আর ভারতীয় পেঁয়াজ পাইকারিতে ১০৫ টাকা, আর খুচরায় ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। রায়সাহেব বাজারের খুচরা পেয়াজ বিক্রেতা আলমগীর বলেন, দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়তি থাকায় বিদেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে। আগের তুলনায় বেড়েছে বিক্রিও। বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। তবে এদিন পেয়াজের পাইকারি বাজারে দেশি পেয়াজ ৬-৭ টাকা কমেছে। ফরিদপুরের দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ১০৩-১০৪ টাকা ও পাবনার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০৫-১০৬ টাকায়। দুদিন আগেও যা বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা কেজিতে।
ঊর্ধ্বমুখী পেয়াজের দামের নিয়ে রায়সাহেব বাজারে বাজার করতে এসে মো. কামাল হোসেন বলেন, দেশি পেয়াজের মুজুতদার ও মহাজনদের সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে পারলে দেশি পেয়াজের দাম কমানো সম্ভব। কারণ আমদানি করা পাকিস্তান ও মিশরীয় পেঁয়াজ দেশের বাজারে ঢুকার পর কিছুটা কমতে শুরু করেছে দেশি পেঁয়াজের দাম। শুধু পেঁয়াজ নয় প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম কমানোর জন্য বাজারে সকল রকম সিন্ডিকেট ভাঙতে পারলে বাজারে সব কিছুর দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে।
এদিন রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫০০ টাকা থেকে ৫২০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন ১৮০ টাকা, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, ছাগলের মাংস কেজিপ্রতি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা চাল ৫২ থেকে ৫৬ টাকা, মিনিকেট ৭২ টাকা, আটাশ চাল ৫৮ টাকা, লাল বোরো ধানের চাল ৯০ টাকা, সুগন্ধী চিনিগুড়া পোলাও চাল ১৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছের কেজি ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের মাছ এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চাষের শিংয়ের কেজি (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, রুই মাছের দাম কেজিতে বেড়ে (আকারভেদে) ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, দেশি মাগুর ৮০০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাঙাশ ২১০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়, বোয়াল ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মলা ৬০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৫০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার ২০০ টাকা, বাইম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, দেশি কই ১ হাজার ২০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা, আইড় ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বেলে ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। আলু মানভেদে কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল ৮১৮ টাকা, দেশি মসুর ডালের কেজি ১৪০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা এবং আদা ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মন্তব্য করুন