আইএফআইসি ব্যাংক থেকে বিগত কয়েক বছরে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনসুর মোস্তফা। রোববার (১১ আগস্ট) চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি এ আশ্বাস দেন।
সৈয়দ মনসুর মোস্তফা বলেন, পরবর্তী পর্ষদসভায় চাকরি পুনর্বহালের বিষয়টি উপস্থাপন করে সুরাহা করা হবে।
এর আগে, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহ এ সরোয়ারের আমলে চাকরিচ্যুত দুই শতাধিক লোক রোববার সকালে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, বর্তমান চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। এর সহযোগী ছিলেন সাবেক এমডি শাহ এ সরোয়ার (বর্তমান উপদেষ্টা)। তিনি মানসিক চাপ সৃষ্টি করে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন।
এ সময় তারা ব্যাংকের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান ও তার ছেলেসহ বেক্সিমকোর সব পরিচালকের পদত্যাগের পাশাপাশি শাহ এ সরোয়ারের আমলে চাকরিচ্যুত সব কর্মীকে পুনর্বহালের দাবি জানান।
পরে বিক্ষোভকারীদের ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ৯ দফা দাবি নিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মনসুর মোস্তফার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রতিক্রিয়ায় সৈয়দ মনসুর মোস্তফা বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন।
বিক্ষোভকারীদের দাবিগুলো হচ্ছে-
১. মানসিক চাপ সৃষ্টি করে যেসব কর্মকর্তা কর্মচারীদের চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। তাদের অনতিবিলম্বে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। যারা ইতোমধ্যে চাকরির বয়স অতিক্রম করেছেন প্রমোশন ও ইনক্রিমেন্টসহ তাদের পাওনা পরিশোধ করতে হবে।
২. দুর্নীতিবাজ সাবেক এমডি (বর্তমান অ্যাডভাইজার) শাহ আলম সরোয়ার ও তার দোসরদের চাকরিচ্যুত করে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে।
৩. যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে প্রমোশন পায়নি, তাদের উচ্চতর গ্রেডে প্রমোশন দিতে হবে।
৪. পারফরমেন্স বোনাস বাতিল করে প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তাদের বেসিক বেতনের অনুযায়ী বার্ষিক প্রফিট বোনাস দিতে হবে।
৫. বর্তমান আইন বাতিল করে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী বার্ষিক পারফরমেন্স নির্ধারণ করতে হবে।
৬. লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবীদের প্রমোশন দিতে হবে। প্রতি পাঁচ বছরে অন্তত একটি প্রমোশন দিতে হবে।
৭. দুর্নীতির সঙ্গে যেসব নির্বাহী/ অফিসার / জড়িত সেসব দুর্নীতিবাজদের চাকরিচ্যুত করতে হবে।
৮. ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের ঋণ পুনঃতপশিল করা যাবে না এবং ঋণের সুদ মওকুফ করা যাবে না। খেলাপি ঋণ দ্রুত আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
৯. ব্যাংকে কর্মচারী-কর্মকর্তাদের মাঝে যে ভয়ের সংস্কৃতি চালু রয়েছে তা দূর করে ব্যাংকে স্বাধীন সার্ভিস তথা কর্মচারীবান্ধব করে গড়ে তুলতে হবে।
মন্তব্য করুন