এবার পদত্যাগ করেছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম।
শনিবার (১০ আগস্ট) রাত ১১টার পর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খানের কাছে অনলাইনে তিনি তার পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন বলে প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে।
যদিও শনিবার রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত পদত্যাগের বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেননি শিবলী রুবাইয়াত। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিগগিরই পদত্যাগ করব।
এর আগে শুক্রবার (৯ আগস্ট) একইভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তার এক দিন পরেই বিএসইসির চেয়ারম্যানও একই পথ অনুসরণ করলেন।
উল্লেখ, ২০২০ সালের ১৭ মে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামকে চার বছরের জন্য বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। সে হিসেবে চলতি বছরের ১৬ মে তার মেয়াদ শেষ হয়। তবে গত ২৮ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. জাহিদ হোসেনের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে অধ্যাপক শিবলীকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
কিন্তু গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে তিনি কর্মস্থলে যোগ দেননি। জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকার পতনের এক দফায় রূপ নেওয়ার দিনই অর্থাৎ ৩ আগস্ট তিনি সরকারি সফর শেষে দেশে ফেরেন।
জানা গেছে, বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন দেশের পুঁজিবাজারকে বিশ্বমানের পুঁজিবাজারে পরিণত করার কথা বললেও বাস্তবে হয়েছে তার উল্টো।
সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পুঁজি হারিয়েছেন। অধিকাংশ সময়ে দুর্বল কোম্পানির দাপট দেখা যায় এবং ভাল কোম্পানির শেয়ার লেনদেন ছিল তলানিতে। এ ছাড়া পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ টানতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রোড শো ও সভা-সেমিনার করলেও আসে নি। তার বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে নানা অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। শেয়ারবাজারে কারসাজিকারকদের নানাভাবে সহায়তা করতেন শেয়ারের দাম বাড়াতে।
এ ছাড়া তার প্রশ্রয়ে শেয়ারবাজারে একটি চক্র গড়ে ওঠে। যারা নানাভাবে সুযোগ–সুবিধা পেতেন শেয়ারবাজার থেকে অর্থ লোপাটে।
পদত্যাগের আগে শেষ দিন পর্যন্ত গত বৃহস্পতিবার তিনি সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন বেক্সিমকো লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের আদেশ জারি করেন।
বাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সালমান এফ রহমানকে শেয়ার বিক্রি করে টাকা তুলে নেওয়ার সুবিধা করে দিতেই কার্যালয়ে না এসেও বাসায় বসে তিনি এ আদেশ জারি করেছেন।
মন্তব্য করুন