দেশে গমের উৎপাদন বাড়াতে আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়নকেন্দ্র (সিমিট) এবং মেক্সিকোর বর্ধিত সহযোগিতা চেয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ।
বুধবার (১০ জুলাই) মেক্সিকোর টেক্সকোতে সিমিটের সদর দপ্তরে ‘পরবর্তীসংলাপ-শক্তির বীজ’ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশন এবং সিমিট যৌথভাবে দুদিনব্যাপী এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
তিনি বলেন, ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য হলেও বছরে গমের চাহিদা বাড়ছে শতকরা ৭-১১ ভাগ। বার্ষিক প্রায় ৭৫ লাখ টন চাহিদার এক পঞ্চমাংশ আমরা দেশে উৎপাদন করতে পারি। গম শীতকালীন ফসল হওয়ায় বোরো ধানসহ অন্যান্য শীতকালীন ফসলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় গমের উৎপাদন পিছিয়ে পড়ছে। এ অবস্থায়, গমের উৎপাদন বাড়িয়ে ব্যাপক ঘাটতি পূরণ করতে হলে স্বল্পজীবনকালীন-১০০ দিনের মধ্যে হয় এরকম অতি আগাম এবং তাপ ও লবণসহিষ্ণু গমের উন্নত জাত উদ্ভাবন করতে হবে। এক্ষেত্রে সিমিট এবং মেক্সিকোর বর্ধিত সহযোগিতা প্রয়োজন।
চাল ও ভুট্টা উৎপাদনে বাংলাদেশের বিশ্বস্বীকৃত সাফল্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, গত ৫০ বছরে দেশে চালের উৎপাদন বেড়েছে চার গুণের বেশি। এর ফলে এ সময়ের মধ্যে জনসংখ্যা ৭ কোটি থেকে বেড়ে বর্তমানে ১৭ কোটি হলেও দেশে চালের কোনো ঘাটতি নেই।
তিনি বলেন, ভুট্টা উৎপাদনেও আমরা ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছি। গত ১৫ বছরে ভুট্টার উৎপাদন ৯ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বছরে প্রায় ৬৮ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদিত হচ্ছে; আর এর বিপরীতে প্রতি বছর পোলট্রি, মাছ, প্রাণিখাদ্যসহ নানা কারণে দেশে ভুট্টার চাহিদাও বাড়ছে। সেজন্য, ভুট্টার উৎপাদনও আমাদের বাড়াতে হবে।
অনুষ্ঠানে সিমিটের মহাপরিচালক ব্রাম গোভায়ার্টস, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশনের চিফ অপারেটিং অফিসার মাশাল হোসেন, মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালিসিয়া বার্সেনা ইবারা, মেক্সিকোর কৃষি ও পল্লী উন্নয়নমন্ত্রী ভিক্টর ম্যানুয়েল ভিলালোবোস আরামবুলা, ইন্টার-আমেরিকান ইনস্টিটিউট ফর কো-অপারেশন অন এগ্রিকালচারের মহাপরিচালক ম্যানুয়েল ওটেরো, হন্ডুরাসের কৃষি ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী লরা এলেনা এস টরেস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব নাজিয়া শিরিন এসময় উপস্থিত ছিলেন
পরে সাইডলাইন ইভেন্টে কৃষিমন্ত্রী মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালিসিয়া বার্সেনা ইবারা এবং মেক্সিকোর কৃষি ও পল্লী উন্নয়নমন্ত্রী ভিক্টর ম্যানুয়েল ভিলালোবোস আরামবুলার সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। বৈঠকে দুদেশের কৃষিখাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ ছাড়া একইদিন মন্ত্রী সিমিটের গবেষণা ও মাঠ কার্যক্রম ঘুরে দেখেন।
মন্তব্য করুন