সাতক্ষীরায় কর্মরত দীপ্ত টিভির জেলা প্রতিনিধি রঘুনাথ খাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এ অভিযোগের সাত ঘণ্টা পরই তাকে থানায় পাঠানো হয়। এরপর নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ সময় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
দেবহাটা থানার ওসি শেখ ওবায়দুল্লাহ গতকাল সোমবার রাতে গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার রঘুনাথ খাঁ দীপ্ত টিভি ও বাংলা ৭১ নামে একটি পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি। তিনি সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দা। তবে শহরের লস্কারপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন তিনি। গ্রেপ্তার অন্য দুজন হলেন উপজেলার ঢেবুখালী গ্রামের রেজাউল করিম ও চালতেতলা এলাকার লুৎফর রহমান।
এর আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে রঘুনাথ খাঁকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ করেন তার স্ত্রী সুপ্রিয়া রানী খাঁ। গতকাল বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারের তিন রাস্তার মোড় থেকে তাকে তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁকে বহনকারী মোটরসাইকেলের চালক আবদুল কুদ্দুস গণমাধ্যমকে বলেন, ‘রঘুনাথ খাঁ খবর সংগ্রহের জন্য দেবহাটার খলিশাখালী এলাকায় যান। সেখানে গিয়ে মোবাইলে কিছু ছবি তোলেন তিনি। ফেরার পথে তিনি বড়বাজার থেকে বাজার করেন। বাড়ি ফেরার পথে শহরের পিএন স্কুলের সামনে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক তারেক। পরে ওই পুলিশ কর্মকর্তা রঘুনাথকে নামিয়ে অপর একটি মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যান।’
রঘুনাথ খাঁর স্ত্রী সুপ্রিয়া রানী খাঁ বলছেন, খবর পেয়ে তিনি থানাসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়েছেন। তবে কোথাও রঘুনাথ খাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সুপ্রিয়া রানী আরও বলেন, ‘গত শনিবার দিবাগত রাতে একদল লোক বাসায় এসে প্রথমে ডাকাডাকি করে। আমরা ভয়ে কোনো সাড়া না দিলে পরে তারা ভাঙা ইট মেরে চলে যায়। পরে সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।’
দেবহাটা থানার ওসি শেখ ওবায়দুল্লাহ জানান, সাংবাদিকসহ গ্রেপ্তার তিনজনের বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগে মামলা করেছেন উপপরিদর্শক (এসআই) লাল চাঁদ। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় উপজেলার খলিশাখালী সাতমরা এলাকা থেকে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। সন্ধ্যায় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তীব্র ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ জানানো হয়।