২০২১ সালের শেষদিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চ অভিযান-১০ এ অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনা ছিল একেবারেই নজিরবিহীন। ২৪ ডিসেম্বরের মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় ৪৯ জনের মৃত্যুর ক্ষত আজও শুকায়নি। অরক্ষিত নৌপথ এমন অভিযোগের মধ্যেই বিদায়ী বছরেও বড় বড় বেশ কয়েকটি নৌ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীতে। সবার অবহেলায় এ দুর্ঘটনায় মারা যান দুর্গোৎসবে অংশ নিতে যাওয়া পুন্যার্থীরা। সব মিলিয়ে দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা বিদায়ী বছরেও হৃদয়ে ক্ষত তৈরি করেছে।
২০২১ সালের সর্বশেষ ওই ঘটনার ১২ দিনের মাথায় ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি সকালে নারায়ণগঞ্জের ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গার মোহনায় বরিশাল থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি ফারহান-৬-এর ধাক্কায় একটি যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে ১০ যাত্রী নিখোঁজ হন। দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশে কয়েক দিন অভিযান চালিয়ে নয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
৮ জানুয়ারি ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে যাত্রীবাহী এমভি সুরভী-৯ লঞ্চের ইঞ্জিন কক্ষে আগুন লাগে। এতে কেউ হতাহত হননি। তবে এ ঘটনার তথ্যচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করায় লঞ্চের কর্মীরা বরিশাল নদীবন্দরে কয়েকজন যাত্রী ও গণমাধ্যমকর্মীকে মারধর করেন।
২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বাজারের পাশে করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাট থেকে শতাধিক মানুষ নিয়ে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দিরের দিকে যাচ্ছিল। ঘাট থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর নৌকাটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় ৬৯টি লাশ উদ্ধার করা হয়। এখনো কয়েকজন নিখোঁজ থাকার দাবি স্বজনদের।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলছে, সবশেষ গত বছরের নভেম্বর মাসে নৌপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ও ১০ জন আহত এবং ০৭ জন নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে সারা দেশে বছরজুড়ে ছোট বড়সহ অন্তত দেড় শতাধিক নৌ দুর্ঘটনা ঘটেছে।