রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের আপত্তিকর ভিডিও ফাঁস ইস্যুতে এবার অব্যাহতি চেয়ে দলীয় প্রধান বরাবর ৪৮ নেতা আবেদন করেছেন। আবেদনে স্বাক্ষরকারীরা রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির বিভিন্ন পদে এবং অনেকেই দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। আজ বুধবার সকালে দলীয় প্রধান বরাবর এই আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, আবেদনের অনুলিপি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) এস এম কামাল হোসেন এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার কাছেও পাঠানো হয়।
আবেদনে বলা হয়, ডাবলু সরকারের নগ্ন ভিডিও গত মাসের ১৯ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তার এমন নৈতিক স্খলনজনিত কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন তাকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ সব কর্মকাণ্ড থেকে বহিষ্কারের দাবি জানায়। ডাবলু সরকারের এমন কর্মকাণ্ড দলের ভাবমূর্তি ধ্বংস করছে। যা আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। এরই মধ্যে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ডাবলু সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাজাকার আব্দুস সাত্তার টিপুর প্রধান সহযোগী আরেক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাজাকার আব্দুর রশিদ সরকারের ছেলে। এমতাবস্থায় আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে ডাবলু সরকারকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ সাধারণ সদস্য পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়।
Link a Story
ডাবলুর বহিষ্কার দাবিতে রাস্তায় রাজশাহী নগর আ.লীগের নেতারা
জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ‘কতজন নেতা আবেদন করেছে সেটি আমার জানা নেই। তবে আমি স্বাক্ষর করেছি। তাকে অব্যাহতি চেয়ে দলীয় প্রধান বরাবর আবেদনও করেছি।’ তিনি বলেন, ‘ডাবলু সরকারের নগ্ন ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন, বিক্ষোভ হতে থাকে। এই সবকিছুতে একটি প্রভাব পড়ছে। তাই আমরা তাকে অব্যাহতির জন্য দলীয় প্রধান বরাবর অবেদন করেছি।’
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ‘আমার কাছে কোনো আবেদন আসেনি। দলের প্রধানের কাছে আবেদনটি এসেছে। এটি নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।’
অভিযোগের বিষয়ে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, ‘আমি এটি শুনিনি। আমাকে কেউ জানায়নি।’
উল্লেখ্য, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডাবলু সরকারের ৩ মিনিট ২৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। তবে ভিডিও সম্পর্কে ডাবলু সরকার বলেন, ‘ভিডিওটি এডিট করা। সম্পূর্ণ ফেক। আমরা মামলা করেছি। তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে।’
এ ঘটনার পর থেকেই ডাবলু সরকারকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। সর্বশেষ গত সোমবার রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানারে তার বহিষ্কারের দাবিতে রাজশাহীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়।