লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে মোশাররফ হোসেন নামে এক তহসিলদারকে কুপিয়ে হত্যার ২৫ বছর পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রামগতি চর সেকান্দর গ্রামের আবদুল গোফরানের ছেলে মো. ইদ্রিস ওরফে কালা ও এবাদ উল্যার ছেলে মো. চৌধুরী বকত। রায়ে ওই মামলার সাত আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
রায়ের সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে দণ্ডপ্রাপ্তদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। রায়ের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত আসামিদের স্বজনেরা। এ সময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে রামগতির চর সেকান্দর গ্রামের বাসিন্দা মৃত দ্বারা বক্স মাঝির দুই ছেলে আবদুল গোফরান ও মোশাররফ হোসেন তহসিলদারের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়।
এর সূত্র ধরে ১৯৯৮ সালের ১৭ জুলাই সকালের দিকে আবদুল গোফরান ও তার ছেলে মো. ইদ্রিস ওরফে কালাসহ তার অন্য ছেলেরা মিলে মোশাররফ তহসিলদারকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তাকে উদ্ধার করে জেলা শহরের আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ওইদিন মোশাররফ তহসিলদারের ছেলে আবুল হাসান চৌধুরী ওরফে রাশেদুল আলম বাদী হয়ে ১২ জনের বিরুদ্ধে রামগতি থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- মোশাররফ তহসিলদারের ভাই আবদুল গোফরান ও তার পাঁচ ছেলে মো. ইদ্রিস ওরফে কালা, মো. ইউনুস মিয়া, মো. ইসমাইল, খুরশিদ আলম ও মো. রাশেদ এবং তাদের আত্মীয় মো. চৌধুরী বকত, নুরুল আমিন, মমিন উল্যা, মো. ইসরাফিল, আবদুল করিম ও জসিম উদ্দিন। তারা সবাই রামগতির চর সেকান্দর গ্রামের বাসিন্দা।
১৯৯৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালতে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন তৎকালীন রামগতি থানার এসআই সালাহ উদ্দিন আল মাহমুদ। এতে মামলার এক নম্বর আসামি মো. ইদ্রিস ওরফে কালাকে প্রধান ও অভিযুক্ত ৬ জনের নামে অভিযোগপত্র দেন তিনি।
জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ শুনানি শেষ সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত দুই আসামির সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় এবং প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন।