ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি ও হামলার ঘটনায় করা মামলায় সাত দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি কোনো আসামি। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগীরা।
আজ রোববার দুপুরে সাভারের গেন্ডা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে তারা।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা বলেন, সাভার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম দেওয়ান ওরফে মুরগি মাসুম ও তার সহযোগীরা গত ৬ মে রাতে সাভার পৌরসভার এলাকায় বিসমিল্লা ওয়াস কারখানায় গিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক ইউসুফ আলী চুন্নুসহ পাঁচজনকে পিটিয়ে জখম করে এবং প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ থেকে ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
এ সময় আহত হন আনন্দপুর এলাকার বিসমিল্লাহ ওয়াস কারখানার স্বত্বাধিকারী ইউছুফ আলী চুন্নু (৪৫), তার ছেলে আবির হোসেন (২১), ছোট ভাই নান্নু ও স্ত্রী রত্নার ভাতিজা বাহাদুর (২৭)। ঘটনার পরদিন ৭ মে ভুক্তভোগী ইউছুফ আলী চুন্নু বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয়, সাভার পৌরসভার নামাগেন্ডা এলাকার ও সাভার পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুম দেওয়ান ওরফে মুরগি মাসুম (২৫), একই এলাকার আলমগীর ওরফে টেন্ডার আলমগীর (৩০), সাভার সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল রানা ওরফে ধর্ষণ সোহেল (৩৩), নামাগেন্ডা এলাকার নাদিম দেওয়ান ওরফে গুন্ডা নাদিম (২৪), উলাইল এলাকার টিপু ওরফে বালু টিপু (২৮), কাতলাপুর এলাকার বাবু ওরফে রড বাবু (২৮), একই এলাকার পলাশ ওরফে খাটা পলাশ (৩০), মজিদপুর এলাকার পাভেল ওরফে চাঁদা পাভেল (৩৫), নামাগেন্ডা এলাকার সজীবসহ (২৪) এবং অজ্ঞাত আরও ১২ জন। কিন্তু মামলার ৭ দিনেও পুলিশ কাউকে ধরতে না পারার প্রতিবাদে রোববার দুপুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ বিক্ষোভ মিছিল করেছে ভুক্তভোগীরা।
ইউছুফ আলী চুন্নু বলেন, ‘হামলা ও মামলার প্রায় সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে এসব সন্ত্রাসীরা মাঝে মাঝেই এলাকায় ঢুকে পরিবারের সদস্যদের হুমকি-ধুমকি দিচ্ছেন।’
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, কোনো এক অদৃশ্য ভাইয়ের ইন্দনেই সাভার পৌর-ছাত্রলীগের এই বেপরোয়া আচরণ গোটা সাভার উপজেলা জুড়ে। যেকোনো সময় হামলা বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
এর আগেও মাসুম দেওয়ান মুরগি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেও থামেনি তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। একটি ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে থেকেও তার এমন বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে অসন্তুষ্টির কথা জানান খোদ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। এ ছাড়াও মাসুম দেওয়ানের কর্মকাণ্ডে বিব্রত ক্ষোধ উপজেলা ছাত্রলীগও।
সাভার উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরুজ কবির কালবেলাকে জানান, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় বিব্রত সাভার উপজেলা ছাত্রলীগ। আসামি ধরতে পুলিশের গাফলিতি রয়েছে ভুক্তভোগীর এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার এসআই সুদিপ কুমার গোপ কালবেলাকে বলেন, ‘আসামি ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। তারপরও এমন অনাকাঙ্ক্ষিত অভিযোগ দুঃখজনক। যত দ্রুত সম্ভব আসামিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি আনতে আমরা চেষ্টা করছি।’