বগুড়ার ধুনট উপজেলায় একটি বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে ছয় লাখ টাকা ঘুষ নিয়েও সভাপতি প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ায় এক শিক্ষক প্রতিনিধির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এমএ তারেক হেলাল গত রোববার রাতে ধুনট থানায় এ লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ মার্চ উপজেলার এলাঙ্গী উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করতে অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধি পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে অভিভাবক সদস্য পদে আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের প্রত্যক্ষ ভোটে সদস্য পদে আবদুল হান্নান, আরিফুল ইসলাম, আবদুল হান্নান আকন্দ ও ফরহাদ হোসেন নির্বাচিত হন। জেসমিন আক্তার নামের এক নারী অভিভাবক সদস্য পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
অন্যদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গোপন ভোটে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে সহকারী শিক্ষক কামাল পাশা, আবদুল হান্নান ও রুনা লায়লা নির্বাচিত হন। এ ছাড়া এলাঙ্গী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান এম এ তারেক হেলালকে বিদ্যালয়ে দাতা সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়।
এ নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন হেলাল ও এলাঙ্গী ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক। ২৫ মার্চ ৯ সদস্যের ভোটের মধ্যে তোজাম্মেল হক ৫ ভোট পেয়ে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন এবং হেলাল চার ভোট পেয়ে পরাজিত হন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, এ নির্বাচনে সভাপতি পদে তিনটি ভোট দেওয়ার কথা বলে ২৪ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হেলালের কাছ থেকে শিক্ষক প্রতিনিধি আবদুল হান্নান ছয় লাখ টাকা ঘুষ নেন। কিন্তু টাকা নিয়ে ভোট না দেওয়ায় নির্বাচনে হেলাল পরাজিত হয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ঘুষের টাকা ফেরতের দাবিতে তিনি থানায় অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে এম এ তারেক হেলাল বলেন, ‘শিক্ষক প্রতিনিধি আবদুল হান্নান তিনটি ভোট দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তারা আমাকে ভোট দেননি। এ কারণে আমি পরাজিত হয়েছি।’
অভিযোগের বিষয়ে আবদুল হান্নান বলেন, ‘নির্বাচনে পরাজিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। তাকে ভোট দেওয়ার বিষয়ে আমার সঙ্গে কোনো ধরনের কথা হয়নি। হেরে গেলে মানুষ অনেক কিছুই দাবি করে।’
এ বিষয়ে ধুনট থানার ওসি রবিউল ইসলাম বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা পেলে তারা আইনি ব্যবস্থা নেবেন।