কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২২, ০৫:৪৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে : মির্জা ফখরুল

সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে : মির্জা ফখরুল

সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে, ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। জনগণ আমাদের থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। যে কয়টা সমাবেশ (বিভাগীয় সমাবেশ) হলো- এই সমাবেশে একটা অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছে। বরিশালের সমাবেশ, খুলনার সমাবেশ, ময়মনসিংহের সমাবেশগুলোতে মানুষ সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে চলে এসেছে।

বরিশালের সমাবেশের আগে যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষ নদী সাঁতরে পার হয়েছে। পরপর দুই রাত খোলা আকাশের নিচে তারা শুয়ে থেকেছে। এটা দেখে আমরা বেশি অনুপ্রাণিত হয়েছি। আমাদের মধ্যে বিশ্বাস জন্মেছে- মানুষের আকাঙ্ক্ষা হচ্ছে পরিবর্তনের, তারা পরিবর্তন চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, এত মামলা-মোকাদ্দমা করে বিএনপিকে তো আপনারা একেবারে স্তিমিত করে দিতে পারেননি। কত কথা বলেছেন, হাঁটুভাঙা, মাঝা ভাঙা, অনেক কিছু বলেছেন। তাই যদি হয়, তাহলে কেন এত ঘাবড়ে গেছেন, এত আশঙ্কা কেন?

জাতীয় প্রেস ক্লাবের চৌধুরী হলে নাগরিক ঐক্যের ‘যুগপৎ আন্দোলন ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সকালে আমাদের মহিলা দলের নেত্রী সুলতানা আহমেদকে র‌্যাব তুলে নিয়ে গেছে। দক্ষিণ সিটির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনসহ ১১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ভোলার গোলাম নবী আলমগীরসহ নেতাকর্মীদের বহনকারী লঞ্চে হামলা করে মামলা দেওয়া হয়েছে। এখন গায়েবি মামলা শুরু হয়েছে। সাভারে মিছিল থেকে দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিনসহ দেড়শজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। অর্থাৎ আন্দোলনকে কীভাবে মামলা-মোকাদ্দমা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া যায় সেই প্রসেস তারা শুরু করেছে।

তিনি বলেন, তারা (সরকার) বুঝতে পারছে না যে, জনগণের পিঠ কিন্তু দেয়ালে ঠেকে গেছে। জনগণ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এই হামলা-মামলা-মোকাদ্দমা দিয়ে তো অতীতে লাভ হয়নি। এখনো হবে না। আজকে ১৫ বছর ধরে এগুলো করেছে।

যুগপৎ আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একসাথে আন্দোলনটা করতে চাই। যুগপৎভাবে করতে চাই। এটা আমাদের স্থির সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি। আমরা বিশ্বাস করি, আজকে আমরা সবাই একসাথে, একজোটে এই ভয়াবহ দানবকে সরিয়ে জনগণের একটা সরকার আনতে চাই। তাহলে বোধহয় সেটা অনেক বেশি শক্তিশালী হবে, অনেক বেশি জোরদার হবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নির্বাচনকালীন সরকার কি হবে না হবে সেটা আমরা আলোচনার মধ্য দিয়ে ঠিক করে ফেলব। এটা বেশি সমস্যা হবে বলে আমরা মনে করি না। আর জাতীয় সরকার প্রসঙ্গে বলব, আমরা সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে একটা জাতীয় সরকার গঠন করতে চাই। এটা আমাদের প্রস্তাব।

তিনি বলেন, সেজন্য আমরা চাই, এই বিষয়গুলো নিয়ে দ্রুতই আমাদের বসা উচিত এবং সমাধান করা উচিত। কারণ আমরা একটা বিষয় একমত হয়েছি যে, গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা একযোগে যুগপৎ আন্দোলন করব। বাকি ইস্যুগুলো আলোচনা করে সমাধান করতে বেশি সময় লাগবে বলে আমরা মনে করি না।

পরিবর্তনের জন্য এক হওয়া প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এ দেশের মানুষকে বাঁচতে দিন। এ দেশের মানুষকে একটা উচ্চ সমাজে বাঁচতে দিন। এ দেশের মানুষকে তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো পূরণ করার একটা ক্ষেত্র তৈরি করে দিন। আসুন আমরা সবাই একসাথে হই। এটাই হচ্ছে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।

আমি অত্যন্ত আশাবাদী। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা পেরেছি তো অতীতে বহুবার। আমরা ১৯৪৬ সালে পেরেছি, ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন করে ভাষা নিয়ে এসেছি, ’৯০-এ গণঅভ্যুত্থান করেছি, ’৬৯-এ গণঅভ্যুত্থান করেছি, ছাত্র গণঅভ্যুত্থান করেছি। একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি। এক সাথে করেছি বলে সফল হয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, একসাথে যদি আমরা যাই সামনের দিকে, এক সাথে লড়াই করি তাহলে আমরা জয়ী হবো।

সভাপতির বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিভিন্ন সমাবেশ থেকে বোঝা যায়, দেশে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়েছে। গোটা পরিস্থিতি এখন বদলে গেছে। এখন আর কোনো ভয়ের চাদর নেই। এই যে সংকট চলছে, এ সংকটে বিএনপি একা নয়, আমরাও পাশে আছি।

জনগণের কল্যাণে একটা সত্যিকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চাই। ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ আগামী ১২-১৯ নভেম্বরের মধ্যে বিএনপির সাথে ‘যুগপৎ আন্দোলনের’ বিষয়ে সংলাপ করবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বিএনপির সমাবেশগুলোকে বাজারের আগুন ও মানুষের মনের আগুন এক হয়ে গেছে। এটাই বাস্তবতা। এই পরিস্থিতি এখন গণঅভ্যুত্থানের কাছাকাছি।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো একটি নতুন রাজনৈতিক চুক্তির ভিত্তিতে দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমাদের সরকার পতনের আন্দোলনকে সেই লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ বক্তব্য দেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সকাল ৯টার মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস

২৭ এপ্রিল : আজকের নামাজের সময়সূচি

গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ

নাটোরে অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৭

ছাত্র ইউনিয়নের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত 

ভোট দেওয়ার শর্তে কোরআন ছুয়ে নিতে হবে টাকা, কল রেকর্ড ভাইরাল

‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম ভয়াবহ সঙ্কটকাল পার করছে’

 ছেলের কিল-ঘুষিতে শিক্ষক পিতার মৃত্যু

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুনের ১০ বছর আজ

‘ভয়াল ২৯ এপ্রিল, ১৯৯১ স্মরণ ও প্যারাবন নিধন প্রতিবাদ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত

১০

শাহ আমানতে ৯০ হাজার দিরহামসহ যাত্রী আটক

১১

আবুধাবিতে চালু হচ্ছে উড়ন্ত ট্যাক্সি, ৩০ মিনিটেই দুবাই

১২

গরু চোরাচালানে জড়িত ছাত্রলীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধি

১৩

ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ চায় খেলাফত মজলিস

১৪

বাংলাদেশ এসএসসি ৯৮ ফ্রেন্ডস ফাউন্ডেশন যাত্রা শুরু

১৫

চিকিৎসার জন্য আমেরিকায় গেলেন আমির খসরু 

১৬

উত্তর কোরিয়া থেকে অস্ত্র নিয়ে চীনা বন্দরে রুশ জাহাজ

১৭

বর্জ্যবাহী গাড়ির ধাক্কায় নিহতের ঘটনায় ব্যবস্থা : তাপস

১৮

বর্ণিল আয়োজনে রূপায়ণ সিটি উত্তরায় সামার ফেস্ট-২০২৪ অনুষ্ঠিত

১৯

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা 

২০
*/ ?>
X