আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতৃত্ব স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে ব্যর্থ হয়েছিল বলেই ২৫ মার্চের গণহত্যা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল জিয়াউর রহমানের ভাষণের মধ্য দিয়ে। সেদিন যারা রাজনৈতিক নেতা ছিলেন, তাদের দায়িত্ব ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জনগণকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানানো। কিন্তু সেদিন সেটা তারা দেননি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ করেনি। অন্যের কাঁধে বন্দুক রেখে মুক্তিযোদ্ধা সাজার নাটক করেছে। সমগ্র জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে। কিন্তু নতুন প্রজন্মের কাছে মিথ্যা ইতিহাস প্রচার করছে ক্ষমতাসীনরা।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে পরিকল্পিতভাবে নতুন খেলায় মেতেছে আওয়ামী লীগ। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই নিরপেক্ষ সরকারসহ ১০ দফা বাস্তবায়নে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, সংকট একটাই, নির্বাচনের সময় যদি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকে, তাহলে দেশে আর সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না, এটা প্রমাণিত। শুধু জাতীয় নির্বাচন হয় স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও একই সমস্যা। এ সমস্ত বাদ দিয়ে আসল জায়গায় আসুন, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে হবে। সেটা নিয়ে কাজ করুন, সেটা নিয়ে কথা বলুন, সেটা নিয়ে ঘোষণা দিন। তা না হলে অন্য কোনো কিছুই দেশের মানুষ মেনে নেবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই যে আওয়ামী লীগ, যাদের জোর করে ক্ষমতা থাকার অভ্যাস। আমার মনে হয়, আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দল। এই রাজনৈতিক দল যদি একটি দেশে থাকে, তাহলে তার সর্বনাশের জন্য আর কোনো কিছুর দরকার নেই; আওয়ামী লীগ যথেষ্ট। স্বাধীনতার পরে যে স্বপ্ন ছিল, যে চেতনা ছিল, যে কমিটমেন্ট ছিল সমস্ত কিছু ভেঙে দিয়ে তারা একদলীয় শাসন বাকশাল কায়েম করেছে।
আওয়ামী লীগ একটি পরিকল্পিত নতুন খেলায় নেমেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেই খেলাটা কী, মুখে গণতন্ত্রের কথা বলব, ভোটের কথা বলব, ভোটও করব কিন্তু আমার কাজটা আমি করে নেব। আমার মতো করে নির্বাচন কমিশন গঠন করব, আমার মতো করে প্রশাসন চলবে। আমি যা চাইব, সেভাবেই করব।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন প্রমুখ।