
ডেনমার্ক ও সুইডেনে কোরআনে অগ্নিসংযোগ এবং পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িক উসকানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃতি, ধর্মবিরোধী মতবাদের অনুপ্রবেশ, বিজাতীয় সংস্কৃতির আধিপত্য ও ইসলামকে হেয় করার প্রতিবাদে এবং পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। আজ শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে মিছিল ও সমাবেশ হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংগঠনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘মহাগ্রন্থ আল কোরআনে অগ্নিসংযোগ করে তাবৎ আল্লাহদ্রোহী শক্তিগুলো বিশ্বব্যাপী অশান্তির দাবানল জ্বালিয়ে দিয়েছে। সুইডেনে এবং ডেনমার্কে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা সারা বিশ্বের মুসলমানদের মনে আঘাত দিয়েছে। কোরআন অবমাননাকারী গোষ্ঠী বিশ্বশান্তির জন্য মারাত্মক হুমকির। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারকে সংসদে নিন্দাপ্রস্তাব পাস করতে হবে এবং রাষ্ট্রদূতদের ডেকে প্রতিবাদ জানাতে হবে।’
বিক্ষোভ শেষে রাজধানীতে একটি বিশাল মিছিল বায়তুল মোকাররম থেকে পল্টন হয়ে বিজয়নগরে সমাপ্ত হয়। আরও বক্তব্য দেন—মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, মাওলানা মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলম, কে এম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, আরিফুল ইসলাম, ডা. শহিদুল ইসলাম, হাফেজ জয়নুল আবেদীন, কে এম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতি ফরিদুল ইসলাম।
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, ‘শিক্ষা সিলেবাসের অসঙ্গতি, ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। আমাদের এ ধারাবাহিক কার্যক্রমকে শিক্ষামন্ত্রী ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করে মিথ্যাশ্রয়ী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। এখন শিক্ষামন্ত্রীই মিথ্যুক প্রমাণিত হয়েছেন। এখন আবার পাঠ্যবই নিয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। আমরা বলে দিতে চাই, শিক্ষামন্ত্রী নিজেই প্রতিহত হয়ে যাবে। অতএব, শিক্ষামন্ত্রী এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন না।’
তিনি বলেন, ‘কারও ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করার অধিকার কারও নেই। শিক্ষা সিলেবাসে আমূল পরিবর্তন এনে ইসলামী শিক্ষাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ডারউইনের নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা শেখানো হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের। ছাত্রছাত্রীদের নাস্তিক বানানোর গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ইসলামবিরোধী যে কোনো ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত থেকে সরকারকে ফিরে আসার আহ্বান জানান।’ অন্যথায় সারা দেশে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি আরও বলেন, ২০২৩ এর মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে জনগণের বোধ-বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক উসকানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃতি, বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক মানব সৃষ্টিতত্ত্ব অনুপ্রবেশ, ট্রান্সজেন্ডার, পৌত্তলিক ও ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতির আধিপত্য, ইসলামকে ভিনদেশি সাব্যস্ত করা এবং প্লেজারিজমের মতো নিন্দনীয় কাজের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে; যা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য উদ্বেগ ও হতাশার।’
মুফতি ফয়জুল করিম বলেন, ‘যারা বিশ্বাস করবে মানুষ আদমের সন্তান নয় বরং কোনো জীব-জানোয়ার বা অন্যান্য কিছু থেকে সৃষ্টি তাহলে তারা কাফের। কাজেই এই নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা সিলেবাস এ দেশে চলতে পারে না, এর পরিবর্তন করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী যৌন শিক্ষাকে ছড়িয়ে দিয়ে তিনি যৌনশিক্ষামন্ত্রী খ্যাতি অর্জন করেছেন।
‘আওয়ামী লীগের ডিকশনারিতে মিথ্যা বলে কোনো শব্দ নেই, তারা যা বলে তাই সত্য। অন্য সব মিথ্যা। এ জন্য তারা মিথ্যায় পারদর্শী। অন্যদের সত্য তারা মিথ্যা বলে মনে করে।’