শফিকুল ইসলাম
প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২২, ০৩:২৯ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ফরিদপুরে বিএনপির বড় প্রস্তুতি

ফরিদপুরে বিএনপির বড় প্রস্তুতি

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঘাঁটি খ্যাত ফরিদপুরে সাংগঠনিক বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে বড় ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। ইতোমধ্যে শহরের বাইরে ৬ কিলোমিটার দূরে আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউটে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। বিগত সমাবেশগুলোর মতোই হুমকি আছে পরিবহন ধর্মঘটের। এ অবস্থায় বিএনপি নেতারা বলছেন, এবারও নতুন কৌশল নেওয়া হবে। যাতে করে কেটে যাবে সংকট। দেশের মধ্যবর্তী এই জেলায় ব্যাপক হারে যোগ দেবেন আশপাশের জেলার নেতাকর্মীরা। ফরিদপুরের ইতিহাসে এই গণসমাবেশ হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ।

বিএনপি নেতাদের দাবি, বৃহত্তর ফরিদপুরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এখন আর আগের মতো নেই। এই গণসমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি ফরিদপুরে তাদের রাজনৈতিক শক্তি ও সমর্থন প্রকাশের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে। গণসমাবেশ ঘিরে ফরিদপুর অঞ্চলে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে ফরিদপুরের সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘটের আলটিমেটাম দিয়েছে জেলা মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। ১০ নভেম্বরের মধ্যে মহাসড়কে তিন চাকার যান বন্ধ না হলে পরদিন সকাল ৬টা থেকে ১২ নভেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত ৩৮ ঘণ্টা সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হবে। ওই দাবিতে গত সোমবার বিকেলে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের মাধ্যমে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর আগে একই দাবিতে খুলনা, রংপুর ও বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে পরিবহন ধর্মঘট পালন করেন স্থানীয় পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতারা।

তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, কোনো ধর্মঘট বা অপকৌশল বিএনপির গণসমাবেশ ঠেকাতে পারবে না। রংপুর, বরিশাল ও খুলনার গণসমাবেশে লোকসমাগম সেটাই প্রমাণ করে। অন্য বিভাগে কর্মী যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করলেও এবার ভিন্ন কৌশল নেওয়ায় সেই সংকট কেটে যাবে।

চাল, ডাল, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্যবৃদ্ধি; ভোলায় নূরে আলম ও আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন, মুন্সীগঞ্জে শহিদুল ইসলাম শাওন, যশোরে আব্দুল আলিমসহ ৫ জনকে হত্যার প্রতিবাদ; খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে বিভাগীয় গণসমাবেশ করছে বিএনপি। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর ও বরিশালে গণসমাবেশ হয়েছে। আগামী শনিবার ফরিদপুর, ১৯ নভেম্বর সিলেট, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লা, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী ও আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় হবে মহাসমাবেশ।

জানা গেছে, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ নিয়ে ফরিদপুর সাংগঠনিক বিভাগ করেছে বিএনপি। এই বিভাগের গণসমাবেশ সফল করতে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছে দলটি। প্রতিদিনই জেলা-মহানগরে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে একাধিক প্রস্তুতি সভা হচ্ছে। পাড়া-মহল্লা ও হাটে-ঘাটে লিফলেট বিতরণ চলছে। গঠন করা হয়েছে অভ্যর্থনা, উপকমিটি, মঞ্চ, সাজসজ্জা, প্রচার, আপ্যায়ন, মিডিয়া, মেডিকেল ও শৃঙ্খলা উপকমিটি।

ফরিদপুরে গণসমাবেশ সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। তিনি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালবেলাকে বলেন, ১২ নভেম্বর বিএনপির গণসমাবেশকে ঘিরে সরকারি মহল ধর্মঘটসহ নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তবে পদ্মা, গড়াই, মধুমতী ও আড়িয়াল খাঁ বেষ্টিত ফরিদপুরে প্রবেশের অসংখ্য প্রবেশপথ। কোনো কৌশলই এখানে কাজে আসবে না। যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া এবং মানিকগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের বিপুলসংখ্যক মানুষ গণসমাবেশে যোগ দেবে।

কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, গত ১৪ বছর মামলা-হামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের একরকম পঙ্গু করে রাখা হয়েছে। তবে ফিনিক্স পাখির মতো প্রতিবারই আমরা তারেক রহমানের নেতৃত্বে জেগে উঠেছি। এবার তার প্রমাণ হবে এই গণসমাবেশে।

বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক বলেন, ফরিদপুরের সমাবেশে লোক ঠেকাতে বন্ধ করতে হবে তিন বিভাগের পরিবহন ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল। যদি তাই হয়, তাহলে নৌকা-ট্রলারে পদ্মা পার হবেন সবাই। প্রয়োজনে নদী সাঁতরে, হেঁটে নেতাকর্মীরা আসবেন এই গণসমাবেশে।

ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা দলের আহ্বায়ক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, তিন থেকে চার লাখ লোকসমাগম হবে ফরিদপুরের গণসমাবেশে। নেতাকর্মী শুধু নয়, সাধারণ মানুষও আওয়ামী লীগের অন্যায়-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার।

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইয়াজ্জেম হোসেন রোমান বলেন, দিন বদলে গেছে। কোনো হুমকি ও বাধা দিয়ে সমাবেশ ঠেকানো যাবে না। দেখবেন সেদিন আওয়ামী লীগের অনেকেই গা-ঢাকা দেবেন। এদিকে কালবেলার ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, আগামী শনিবার পূর্বনির্ধারিত বিভাগীয় গণসমাবেশে লোকসমাগম ঠেকাতে পরিবহন ধর্মঘটের আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে বলে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন। তবে পরিবহন নেতাদের দাবি, ধর্মঘটের সঙ্গে বিএনপির গণসমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই। ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ঈসা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। আমরা বাস-ট্রাক মালিকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, ওপরের নির্দেশে আমরা বাস-ট্রাক বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছি।

ফরিদপুর মাহিন্দ্রা শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাকিম বলেন, তারা মহাসড়কের সব অংশে মাহিন্দ্রা চালান না। বাসওয়ালারা কেন এসব দাবি করেন, তার মানে বোঝেন না। আমরা গরিব মানুষ। আমরা রাজনীতি বুঝি না, আমরা বাঁইচা থাকার রাজনীতি করি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আবুধাবিতে চালু হচ্ছে উড়ন্ত ট্যাক্সি, ৩০ মিনিটেই দুবাই

গরু চোরাচালানে জড়িত ছাত্রলীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধি

ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ চায় খেলাফত মজলিস

বাংলাদেশ এসএসসি ৯৮ ফ্রেন্ডস ফাউন্ডেশন যাত্রা শুরু

চিকিৎসার জন্য আমেরিকায় গেলেন আমির খসরু 

উত্তর কোরিয়া থেকে অস্ত্র নিয়ে চীনা বন্দরে রুশ জাহাজ

বর্জ্যবাহী গাড়ির ধাক্কায় নিহতের ঘটনায় ব্যবস্থা : তাপস

বর্ণিল আয়োজনে রূপায়ণ সিটি উত্তরায় সামার ফেস্ট-২০২৪ অনুষ্ঠিত

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা 

বিসিএস পরীক্ষার্থীর আঁকুতি / ‘পরীক্ষা দিতে না পারলে আমি মরে যাব স্যার’

১০

শনিবার গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

১১

ইউরোপজুড়ে চীন-রাশিয়া ও আরব রাষ্ট্রের ফাঁদ

১২

বাংলাদেশের ধুলায় মাইক্রোপ্লাস্টিক, বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে শিশুরা

১৩

এবার মিল্টন সমাদ্দারের আরেক প্রতারণা ফাঁস!

১৪

বগুড়া জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি তুহিন, সাধারণ সম্পাদক হাবিব

১৫

গাজার ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারে ১৪ বছর লাগতে পারে : জাতিসংঘ

১৬

নিয়োগ পরীক্ষার আগেই প্রার্থী চূড়ান্তের অভিযোগ

১৭

প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে হবে : সংসদ সদস্য কল্পনা

১৮

৪৬তম বিসিএসে ‘ভয়াবহ’ প্রশ্ন আসছে

১৯

রাজশাহীগামী ট্রেনে আগুন,  আহত ১০

২০
*/ ?>
X