রাজধানীসহ সারা দেশের ৫০টি জেলায় ডেঙ্গুর সংক্রমণ দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, ‘ডেঙ্গু এখন আশঙ্কাজনক হারে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে চিকিৎসাসেবারও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। হাসপাতালে সিটের অভাব হবে না।’
আজ বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ‘জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার স্ক্র্যানিং এবং প্রতিরোধ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত সিটের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রয়োজন হলে আরও বাড়ানো হবে। তবে শুধু চিকিৎসার মাধ্যমে ডেঙ্গু মোকাবিলা সম্ভব নয়। এজন্য সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে আরও জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে সাধারণ মানুষকেও আরও সচেতন হতে হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে মারা যান প্রায় সাত হাজার। এ ছাড়া জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত আট হাজার নারী ও এতে মারা যান পাঁচ হাজার। অনেক রোগী শনাক্তের বাইরে থাকেন। মানুষের অনিয়ন্ত্রিত জীবন ব্যবস্থার কারণে দুরারোগ্য ব্যাধিগুলো বাড়ছে। ক্যান্সারের বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।
মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ আমরা সবাই ক্যান্সারের স্ক্রিনিংয়ের বিষয়ে জোর দিয়েছি। স্ক্রিনিংয়ের জন্য ৫৭০টি সেন্টার করা হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রাথমিক স্ক্রিনিং করা হয়। স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে পজিটিভ রোগীদের জন্য ৪৩টি কল কলোসকপি সেন্টার করা হয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা এবং নির্দেশনা রয়েছে ৫০০টি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ডাটা ট্র্যাকিং সেন্টার করার। কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রাথমিক স্ক্রিনিং করা যায় সে নির্দেশনা আমরা দিয়েছি।’
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, স্তন ও জরায়ু মুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে স্ক্রিনিং কার্যক্রম সফল করতে হবে। ক্যান্সারের আক্রান্ত অধিকাংশ রোগীরা তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে আসেন ফলে তাদের বেশির ভাগ রোগীকেই বাঁচানো সম্ভব হয় না। কিন্তু শুরুতে ক্যান্সার নির্ণয় করা গেলে তাদের বাঁচানো সম্ভব।
প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. আশরাফুন্নেসা জানান, এই কর্মসূচির অধীনে ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গত পাঁচ বছরে ২৪ লাখ নারীর স্ক্রিনিং করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ৫.৭১ শতাংশ (এক লাখ ৪১ হাজার ৮৫৪ জনের জরায়ু মুখ ক্যান্সার) পজিটিভ ছিল। এ ছাড়া একই সময়ে ১.৩৪ শতাংশের (৩২ হাজার ২৩৪ জন) স্তন ক্যান্সার পজিটিভ ছিল।
অধ্যাপক ডা. আশরাফুন্নেসা জানান, জাতীয় জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার নির্ণয় ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এর কার্যক্রমের ফলে ২০১২ সালে স্তন ক্যান্সারের হার ২৩.৯ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে। একই সময়ে জরায়ু মুখ স্তন ক্যান্সারের হার ১৯.৩ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশে নেমে এসেছে।
অনুষ্ঠানে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব রাশেদা আকতার, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ কে এম আমিরুল মোরশেদসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।