জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক মাইদুর রহমান রুবেলের লেখা ৩ বই প্রকাশ পেয়েছে এবারের একুশে বইমেলায়। রুবেল একাধারে কথাসাহিত্যিক, টিভি উপস্থাপক, গীতিকার, নাট্যকার, টিভি স্ক্রিপ্ট লেখক। লেখালেখির শুরু শতাব্দীর একদম গোড়ায় অর্থাৎ ২০০০ সাল থেকে। সেই হিসেবে এ বছর লেখালেখির ২৫ বছর তথা রজতজয়ন্তী মাইদুর রহমান রুবেলের। লেখালেখির এই ২৫ বছরে প্রকাশিত হয়েছে অন্তত ১৭টি বই। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছোট গল্প, শিশুসাহিত্য, সাংবাদিকতা, জুলাই বিপ্লব উল্লেখযোগ্য।
এ বছর লেখক রুবেলের ৩টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। ইতি প্রকাশ থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘৩৬ জুলাই স্বৈরাচার পতন বাঙালির মুক্তি’ এবং ‘৭ নভেম্বর ইতিহাসের নতুন মোড়’। মেলায় লেক পাড়ে ২২ নং প্যাভিলিয়নে ইতি প্রকাশের অবস্থান। মেলায় জিয়া বাড়ি নামেই পরিচিত ইতি প্রকাশের প্যাভিনিয়ন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বগুড়ার বাড়ির আদলে নির্মিত হয়েছে ইতি প্রকাশের প্যাভিলিয়ন।
আর শিশুতোষ বই ‘পরীস্থানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার’ প্রকাশ করেছে কানামাছি প্রকাশনী। কানামাছির স্টল নং ৩৯৭।
মাইদুর রহমান রুবেল বলেন, লেখালেখি করছি প্রায় ২৫ বছর। জীবনের প্রয়োজনে লেখালেখি থেকে সাংবাদিকতা আসা। লেখালেখি এখন অনেকটা অভ্যাসের মতো হয়ে গেছে। অভ্যাসটা ধরে রাখার চেষ্টা করি। তবে কাজের ব্যস্ততায় লেখালেখিকে খুব একটা সময় দেওয়া হয় না। আর সাংবাদিকতা যেহেতু লেখালেখির কাজই সেই সুবাদে বই লেখার মায়াটা ছাড়তে পারি না। অনেকটা নেশার মতো বলতে পারেন।
‘৩৬ জুলাই স্বৈরাচার পতন বাঙালির মুক্তি’ প্রসঙ্গে লেখক রুবেল বলেন জুলাই বিপ্লবে এত এত ঘটনা ঘটেছে তার কটিই বা প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে? প্রকাশিত অপ্রকাশিত অনেক ঘটনা উঠে এসেছে এই বইতে। যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি ছিল সারা দেশে সেসব উপাখ্যান উঠে এসেছে এই বইতে। বইটি জুলাই অভ্যুত্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হয়ে উঠবে বলে আশা করেন রুবেল। জুলাই বিপ্লবে গণমাধ্যমের ভূমিকা, ছাত্রজনতার অবস্থান, সাংবাদিকদের ভূমিকা প্রকাশ করার চেষ্টা করা হয়েছে। উত্তরপাড়ার গোয়েন্দা সংস্থার তথাকথিত অফিসারদের ভয় দেখানো কিংবা স্বৈরচার সরকারের চোখ রাঙ্গানি উপেক্ষা করে দাবি আদায় করার ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। সাধারণ মানুষের গলা চেপে ধরে কিংবা গুলি করে খুলি উড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা স্থান পেয়েছে বইটিতে। যেসব ঘটনা দেশের সীমা ছাড়িয়ে বিশ্ববিবেক নাড়িয়ে দিয়েছিল সেসব ঘটনার বিবরণ থাকছে ‘৩৬ জুলাই স্বৈরাচার পতন বাঙালির মুক্তি’ বইটিতে। ঘটনার বিবরণ এমন ভাবে তুলে ধরা হয়েছে যা পড়ছে মনের অজান্তেই ছল ছল করে উঠবে চোখের কোন।
অবসরপ্রাপ্ত কবি ও ভারপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক হিসেবে পরিচয় দিলেও পুরোদস্তুর গণমাধ্যমকর্মী মাইদুর রহমান রুবেল। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং এলএলবি পাস করে আদালত পাড়ায় ঘোরাঘুরির বদলে ঘুরপাক খাচ্ছেন গণমাধ্যমে। ২০১১ সালে প্রথম প্রকাশিত ছোট গল্পগ্রন্থ 'ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট'। গল্প, কবিতা, শিশুসাহিত্য, প্রবন্ধ, সাংবাদিকতা নিয়ে বই প্রকাশ প্রেয়েছে প্রায় দেড় ডজন। আলোচিত বই ‘টেলিভিশন সংবাদ ও সাংবাদিকতা’। এছাড়া নিয়মিত সম্পাদনা করছেন সৃজনশীল সাহিত্যের কাগজ 'কালস্রোত' এবং বাংলাদেশের একমাত্র ভূত বিষয়ক পত্রিকা ‘ভূত ডটকম’।
১৯৯৮ সালে নারায়ণগঞ্জের আইটি স্কুল এর ম্যাগাজিন এবং এলাকাভিত্তিক ছোট কাগজে শুরু হয় লেখালেখির হাতেখড়ি। নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় খবরের কাগজে লেখালেখির পর জেলার গণ্ডি পেরিয়ে দৈনিক যুগান্তরের মাধ্যমে অভিষেক ঘটে জাতীয় দৈনিকে লেখার। ২০০৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত যুগান্তরের স্বজন সমাবেশের সভাপতির দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। এর আগে প্রথম আলো বন্ধুসভাসহ প্রায় কুড়িখানিক সংগঠনের সাথে ছিলো সক্রিয় অংশগ্রহণ । এর বেশিরভাগ সংগঠনের সভাপতির দায়িত্বও পালন করতে হয়েছিল একই সঙ্গে। বর্তমানে বেঙ্গল মিডিয়া করপোরেশন লিমিটেড 'আরটিভি'র অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর হিসেবে কর্মরত। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য বেশকিছু পুরস্কার পেয়েছেন রুবেল। সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন তিনি।
মন্তব্য করুন