দেশের সব মানুষের কাছে জুলাইয়ের স্পিরিট ছড়িয়ে দিতে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক আন্দোলনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘গণঅভ্যুত্থানের কণ্ঠস্বর : ৩৬ জুলাইয়ের কবিতা পাঠ’।
শুক্রবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় রাজধানীর আঞ্চলিক লোক-প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। আবৃত্তি করেন ইকবাল আহমেদ।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সরব ছিলেন, কবিতা লিখে ছাত্র-জনতার পাশে দাঁড়িয়েছেন, কবিতা-গান দিয়ে আন্দোলনকে বেগবান করেছেন- সারা দেশের এমন কবি ও শিল্পীদের নিয়ে ছিল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের দ্বিতীয় অনুষ্ঠান ‘গণঅভ্যুত্থানের কণ্ঠস্বর’।
প্রথম পর্বে ৩৬ জুলাইয়ের কবিতা পাঠ করেন চঞ্চল বাশার, ইব্রাহীম নিরব ও শাদমান শাহিদ। এ পর্বে জুলাইয়ের স্মৃতি নিয়ে কথা বলেন কথাসাহিত্যিক ও দৈনিক সমকালের সহকারী সম্পাদক এহসান মাহমুদ।
দ্বিতীয় পর্বে কবিতা পাঠ করেন মামুন আজাদ, রুদ্রাক্ষ রায়হান ও রিদওয়ান নোমানী। এ ছাড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী ছড়া পাঠ করেন আহমেদ ইসহাক এবং দিপ্র হাসানের কবিতা আবৃত্তি করেন লুৎফর হাসান রুমি।
জুলাই বিপ্লবে কবিতার ভাষা ও গণমুখী কবিতা নিয়ে কথা বলেন কবি ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক শামস আরেফিন।
তৃতীয় পর্বে কবিতা পাঠ করেন সীমান্ত হেলাল, বহ্নি কুসুম, রাজা আবুল কামাল আজাদ ও মনসুর আজিজ। এ পর্বে অভ্যুত্থানে গানের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন গীতিকার মহসিন আহমেদ এবং পলিয়ার ওয়াহিদের কবিতা আবৃত্তি করেন তরিকুল ফাহিম।
চতুর্থ পর্বে কবিতা পাঠ করেন এনামূল হক পলাশ, হাসান মাহাদি, আহমেদ স্বপন মাহমুদ ও ফারুক ওয়াসিফ। এ পর্বে খুনি শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে ছড়া পাঠ করেন জুলফিকার শাহদাৎ।
পঞ্চম পর্বে কবিতা পাঠ করেন সাজ্জাদ সাইফ, সুলতান স্যান্নাল, মুহিবুর রহমান, হাসান জামিল, তারিক ফিজার, সিফাত আল নূর ও জুয়েল কলিন্দ।
ষষ্ঠ পর্বে কবিতা পাঠ করেন সাঈদ ইসলাম, মহিউদ্দীন মোহাম্মদ, ফেরদৌস মাহমুদ, ঈফতেখার ঈশপ, মুনীরুল ইসলাম ও জুয়েল কলিন্দ। এ ছাড়া এ পর্বে কথা বলেন কবি সাখাওয়াত টিপু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, গণঅভ্যুত্থানে একক কারও অবদান নেই। যে কথা বলেছে এবং যে কথা বলেনি। এমনকি যে চুপ ছিল তারও অবদান আছে। কিন্তু এই জুলাইয়ের স্পিরিট ছড়িয়ে দিতে কবি, লেখক, শিল্পীদের ন্যারেটিভ বা বয়ান তৈরি করতে হবে। সব শ্রেণির মানুষের কাছে এর গল্প মুখে মুখে তুলে দিতে হবে। তখনই এটা সার্থক হবে। আমাদের সবার দায়িত্ব এখন এটা।
অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কবি ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার এবং সমাপনী বক্তব্য দেন- কলামিস্ট ইঞ্জিনিয়ার একেএম রেজাউল করিম। অনুষ্ঠান শেষে জুলাইবিষয়ক ৫টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
গণঅভ্যুত্থানের কবিতা নিয়ে পলিয়ার ওয়াহিদের ‘গুলি ও গাদ্দার’, জিএম রাজিব হোসেনের ‘দ্রোহের গ্রাফিতি’। ফেরদৌস মাহমুদ, নকিব মুকশি ও জুয়েল কলিন্দের কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ হয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পলিয়ার ওয়াহিদ ও রাজিয়া সুলতানা ঈশিতা। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ইয়ামিন আফ্রিদি, নাহিদ বাদশা, আরাফাত হোসেন, আহমেদ যোবায়েরসহ আরও অনেকে।
মন্তব্য করুন