অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদকে ‘পুঁথি-সংগ্রাহক’ পরিচয়ের ক্ষুদ্র গণ্ডিতে আবদ্ধ করে রাখাটা ঠিক নয়। আবদুল করিম একাধারে ছিলেন সাহিত্যের ইতিহাসকার, ইতিহাস তত্ত্ববিদ এবং নিষ্ঠাবান গবেষক। হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে থেকে জাতীয় মঙ্গলের আকাঙ্ক্ষায় তিনি আমৃত্যু কাজ করে গেছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান গবেষক আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের ১৫৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপনে লেখক ও চিন্তাবিদ অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আবদুল করিম নিছক সাহিত্যবিশারদ ছিলেন না। তার স্থান এই দেশের কেন, দুনিয়ার যে কোনো দেশের ইতিহাস-বিশারদদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। কাজী নজরুল ইসলামের আবির্ভাবের আগে যে কয়জন অগ্রণী চিন্তাবিদ বাঙালি মুসলমান সমাজে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ ও রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন তাদের মধ্যমণি।
স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির সচিব মোহা. নায়েব আলী। আলোচনায় অংশ নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সুমন সাজ্জাদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। মোহা. নায়েব আলী বলেন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তিনি জীবনের নানা ঘাত- প্রতিঘাত অতিক্রম করে সাফল্যের চূড়া স্পর্শ করেছেন এবং আমাদের আলোকিত করেছেন। অধ্যাপক সুমন সাজ্জাদ বলেন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের বিশেষত্বময় গদ্যশৈলী, প্রখর ইতিহাসবোধ এবং আত্মপরিচয়ের উৎসমূল অনুসন্ধান তাকে আজও আমাদের আগ্রহ ও আবিষ্কারের কেন্দ্রে রেখেছে। অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের কাজ আসলে ইতিহাসেরই কাজ। তাকে অনবরত পাঠ করলে আমরা তার জেদ ও লড়াইয়ের মাত্রা অনুভব করব। তার জন্ম ও সাধনভূমি চট্টগ্রাম অঞ্চল ঘিরে বিশেষ অনুরাগের কথা মাথায় রেখেও বলা যায়। তিনি সামগ্রিকভাবে জাতীয় সাহিত্যের মধ্য দিয়ে জাতীয় চেতনা বিকাশের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির সহপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মাহবুবা রহমান।
মন্তব্য করুন