প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কবি কামাল চৌধুরী বলেছেন, অসীম সাহা ছিলেন খাপ না খাওয়া মানুষ। তিনি নিজ বিশ্বাস ও অনুভবের কথা কবিতায় তো বটেই, ব্যক্তিগত উচ্চারণ ও আচরণেও সরাসরি প্রকাশ করতেন। এ ছিল তার সারল্য ও দৃঢ়তারই লক্ষণ।
তিনি বলেন, অসীম সাহা বাংলা কবিতার ধ্রুপদী ঐতিহ্যকে আত্মস্থ করে কবিতায় নিজস্ব মুদ্রা তৈরি করেছেন। এ ছাড়া সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বিচরণ করেছেন।
সোমবার (১ জুলাই) বিকেল ৪টায় বরেণ্য কবি ও বাংলা একাডেমির ফেলো অসীম সাহার প্রয়াণে বাংলা একাডেমি কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এক স্মরণসভায় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কবি কামাল চৌধুরী এসব কথা বলেন।
শুরুতে প্রয়াত কবির স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। স্মরণসভায় স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। স্মৃতিচারণ ও মূল্যায়নমূলক আলোচনা আরও অংশ নেন কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, ড. দিলারা হাফিজ, কবি ফারুক মাহমুদ, কবি আসাদ মান্নান, কবি ইউসুফ রেজা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায়, প্রকাশক খান মাহবুব, বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. হাসান কবীর ও ড. তপন বাগচী, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রাজীব কুমার সরকার, কবি পিয়াস মজিদ প্রমুখ।
কবি অসীম সাহার কবিতা আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী রূপা চক্রবর্তী এবং মাসুম আজিজুল বাশার। স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির বরেণ্য চিত্রশিল্পী হাশেম খান। স্মরণসভা সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু।
সূচনা বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, অসীম সাহা ছিলেন সমকালীন বাংলা কবিতার তাৎপর্যপূর্ণ কারুকৃৎ। ব্যক্তিমানুষের আর্তি থেকে সমষ্টিমানুষের আর্তনাদ, মুক্তিকামী মেহনতি মানুষের লড়াকু অভিলাষ এবং শোষণমুক্ত জগত গড়ার অঙ্গীকার তার কবিতার ছত্রে ছত্রে স্বতন্ত্র আঙ্গিকশোভায় ভাস্বর হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে শিল্পী হাশেম খান বলেন, কবি অসীম সাহা ছিলেন বহুমাত্রিক জ্যোতির্ময় ব্যক্তিত্ব। তিনি কবিতায় যেমন আমাদের মুগ্ধ করেছেন তেমনি তার অনন্য জীবনসাধনায়ও সবাইকে আকৃষ্ট করেছেন। তার সৃষ্টিকে পাঠকের কাছে তুলে ধরতে স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। অন্যান্য বক্তারা বলেন, অসীম সাহা বাংলা কবিতার এক অনিবার্য নাম। কবিতার পাশাপাশি প্রবন্ধ-গবেষণা, অভিধানচর্চা এবং কাব্যানুবাদেও তিনি বিশিষ্টতার স্বাক্ষর রেখেছেন। আজীবন তিনি ছিলেন এক লড়াকু মানুষ। এই লড়াইয়ে সবসময় জয় আসেনি কিন্তু তাই বলে তিনি পরাস্ত হননি। এক পদাতিক-পথিকের মতো সাহিত্যপথে এবং বাংলার রাজপথে বিচরণ করেছেন।
তারা বলেন, অসীম সাহার স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য তার রচনা সংকলন প্রকাশ অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য করুন