বাংলাদেশের কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ক্যানসারে ভুগছিলেন এই লেখক।
হুমায়ূন আহমেদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ হলো অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করা। এ বিয়ের কারণে আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছেন দুজনেই। হুমায়ূন-শাওনের বিয়ের দিনের প্রস্তুতি সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। তবে লেখকপত্নী শাওনের ফেসবুক পোস্ট এবং বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত সংবাদমাধ্যমের খবরে অনেক তথ্যই উঠে আসে।
লেখকের সঙ্গে শাওনের বিয়ে হয় ২০০৪ সালের ১২ ডিসেম্বর। ইতোপূর্বে তাদের বিয়ের বিষয়ে শাওন জানিয়েছিলেন, খুব সাদামাটাভাবেই তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। শাওন ভেবেছিলেন—কোনোরকম একটা শাড়ি পরে তিনবার কবুল বলার পর একটা নীল রঙের কাগজে সাইন করে বিয়েটা হয়ে যাবে। কিন্তু বিয়ের আগের দিন তাকে জোর করে নিউমার্কেট পাঠান হুমায়ূন আহমেদ। একটি হলুদ শাড়ি কিনে এনে গায়ে কিছুটা হলুদ মাখতে বলেছিলেন লেখক।
শাওনকে হুমায়ূন বলেছিলেন, ‘তোমার নিশ্চয়ই বিয়ে ও গায়েহলুদ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। আমাকে বিয়ে করার কারণে কোনোটাই পূরণ হচ্ছে না। আমি খুবই লজ্জিত। তারপরও আমি চাই, আজ সন্ধ্যায় তুমি হলুদ শাড়ি পরে ফুল দিয়ে সাজবে, নিজের জন্য, তোমার ভবিষ্যৎ সন্তানের জন্য, আমার জন্য। আমরা দুজন মিলে আজ গায়েহলুদ করব।’
সন্ধ্যায় বেশ সেজেছিলেন শাওন। হঠাৎ দরজায় ধুমধাম শব্দ শুনতে পান তিনি। দরজা খুলে দেখেন ডালা-কুলা হাতে লোকজন দাঁড়িয়ে আছেন। খানিক দূরে লাল পাঞ্জাবি পরে ঠোঁট টিপে হাসছেন হুমায়ূন আহমেদ। এরপর হইহই করে লেখক তার বন্ধুদের নিয়ে ঘরে ঢোকেন। তারা শাওনের হাত ধরে টেনে নিয়ে যান পাশের রুমে।
বিয়ের দিন চার-পাঁচটি প্রদীপ দিয়ে সাজানো হয়েছিল ছোট একটি কক্ষ। অতিথিরা হুমায়ূন আহমেদের হাতে রাখি পরিয়েছিলেন। শাওনের ভাষায়—সে এক অন্যরকম গায়েহলুদ। সেদিন শাওন ও হুমায়ূন আহমেদ, উভয়ের গাল ছিল কাঁচা হলুদে রাঙা।
মন্তব্য করুন