অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে প্রেম-দ্রোহ-সাম্য ও মানবতার কবি, ধ্রুপদী রিপনের শায়েরিগ্রন্থ ‘শেরগুচ্ছ’। বলাবাহুল্য ‘শেরগুচ্ছ’ বাংলা সাহিত্যের প্রথম এবং একমাত্র শায়েরিগ্রন্থ। বইটি প্রকাশ করেছে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ।
ইতোপূর্বে উর্দু, ফার্সি এবং হিন্দি ভাষায় শায়েরির চর্চা লক্ষ্য করা গেলেও বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে ‘শেরগুচ্ছ’ই প্রথম প্রচেষ্টা। বইটিতে ম্যাটাফিজিকাল বিষয়াদির পাশাপাশি ভালোবাসা এবং সামাজিক জীবনবোধের বিষয়গুলোও সমানভাবে গুরুত্ব পেয়েছে।
ভূমিকায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং কবি সুমন সাজ্জাদ বইটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে উল্লেখ করেছেন, ‘ধ্রুপদী রিপনের শেরগুচ্ছে প্রেমের অবিরল ক্রন্দন নেই; আছে সমর্পণ ও বিচ্ছেদের লীলাখেলা। আছে আমাদের বেঁচে থাকা, বাসনাবিদ্ধ মানুষের মন, তৃপ্তি আর অতৃপ্তির জোড়ায় জোড়ায় পথচলা।
বাংলা সাহিত্যের প্রথম শায়েরির বই প্রকাশের অনুভূতি জানতে চাওয়া হলে কবি ধ্রুপদী রিপন বলেন, ‘আসলে এটি বলা খুবই কঠিন, সন্তান জন্মানোর পর পিতার অনুভূতি কখনও ভাষায় প্রকাশযোগ্য হয় না। যাকে ভাষার সীমাবন্ধতা বলতে পারেন। শুধু এটুকু বলতে পারি, সৃষ্টির প্রকাশে স্রষ্টার অনুভূতি যেমন মধুর, তেমন মধুরতা কাজ করছে হৃদয়ে... । এতকিছু ছাপিয়ে মুখ্য বিষয় হলো পাঠক; পাঠক ঠিকভাবে বিষয়টি গ্রহণ করলেই হয়!’
তিনি বলেন, ‘এমনিতেই বাংলা সাহিত্যের পাঠক তুলনামূলক কম, তার উপরে বিষয়টি নতুন। এখানে এখনও অধিকাংশ মানুষ শায়েরি বিষয়টির সঙ্গে পুরোপুরি পরিচিত নয়, সে বিচারে একটু দুঃশ্চিন্তা কাজ করছে। তবে আমি আশাবাদী মানুষ, পরীক্ষায় উতড়ে যাব বলে আশা রাখি। পরিশেষে, পৃথিবীর সব প্রাণের কল্যাণ কামনা করছি।’
‘শেরগুচ্ছ’ বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন দেওয়ান আতিকুর রহমান। চৌষট্টি পৃষ্ঠার বইটির মূল্য ধরা হয়েছে দুইশ টাকা। আগ্রহী পাঠক মেলায় ২৫ শতাংশ ছাড়ে
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই নিয়মিত লেখালেখির সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন ধ্রুপদী রিপন। বাংলাদেশের স্বনামধন্য একাধিক প্রকাশনী থেকে তার লেখা বেশকিছু গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।
এগুলোর মধ্যে ‘গল্পমালা ও কবিতাগুলো (কাব্য ২০০৪)’, ‘বাতাসে মাদকতা (উপন্যাস ২০০৮)’, ‘ঝরাফুলের কাব্য (কাব্য ২০১৭)’, ‘তন্ত্রের দহন (উপন্যাস ২০১৮),’ ‘অভেদী অস্তিত্বের বয়ান (কাব্য ২০২১)’, ‘সম্পর্ক : আপন-পর (গল্প ২০২১) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
২০২০ সালে ‘সম্পর্ক : আপন-পর’ গল্পের পাণ্ডুলিপির জন্য ‘জেমকন তরুণ কথাসাহিত্য পুরুস্কার’ অর্জন করেন। এ ছাড়াও তিনি টেলিভিশনগুলোর জন্য নিয়মিত নাটক লিখছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে বর্তমানে একই বিভাগে এম ফিল গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন ধ্রুপদী রিপন।
মন্তব্য করুন