আর কিছুদিন পরেই ঈদ। এবারের ঈদের অন্যতম আলোচিত সিনেমা ‘তুফান’। শাকিব খান অভিনীত সিনেমাটি নিয়ে শুরু থেকেই হল মালিকদের আগ্রহ ছিল।
কিন্তু সেন্সর ছাড়পত্র পাওয়ার পরও বিপাকে সিনেমাটি। কারণ অতিরিক্ত রেন্টাল দাবি করায় সিনেমা হল মালিক ও বুকিং এজেন্টরা বেঁকে বসেছেন।
এবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভায় বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। গতকাল শনিবার সারা দেশের ৬০টির বেশি হল মালিকদের নিয়ে ঢাকায় একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উঠে আসে সিনেমা হলের সংস্কার, নতুন হল নির্মাণে বাংলাদেশ ব্যাংকের যে ১ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল ঋণ দেওয়ার অগ্রগতি না থাকার অভিযোগ ও হিন্দি সিনেমা চালাতে দেওয়া, সিনেমা মুক্তি দিতে যে অগ্রিম রেন্টাল দিতে হয়, সেসব নিয়ে অভিযোগ তোলেন হল মালিকরা।
এ সময় গাজীপুরের ঝংকার সিনেমা হলের মালিক শরফুদ্দিন এলাহি সম্রাট বলেন, ‘তুফান’ নিয়ে আতঙ্কে আছি, রেন্টাল নিয়ে সিনেমা চালানো সম্ভব নয়।
জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ‘তুফান’ সিনেমার একটি স্লিপও কাটা হয়নি। যার কারণ তুফানের অতিরিক্ত রেন্টাল দাবি।
এদিকে এক বুকিং এজেন্ট কালবেলাকে বলেন, আমার কাছে ঈদে তুফান ১৩টি হলে চালানোর জন্য আড়াই কোটি টাকা চাওয়া হয়। সিনেমার বাজার তো এত বড় নয়। তারা কি গ্যারান্টি দিতে পারবে এই সিনেমা ব্যবসা করবে? আমরা লস দিয়ে অতিরিক্ত রেন্টাল দিয়ে সিনেমা চালাব না। লাগলে ঈদে পুরোনো সিনেমা চালাব।
তুফানের ম্যানেজার শহিদুল্লাহও (মাস্টার) স্বীকার করেছেন রেন্টালের কারণে এখন পর্যন্ত সিনেমাটির কোনো স্লিপ কাটা হয়নি।
এদিকে দেশীয় প্রযোজকদের অভিযোগ, সিনেমা নির্মাণের নামে অর্থ পাচার করেছে ‘তুফান’র সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে এফডিসির ১৯ সংগঠনের নেতারা প্রকাশ্যে সিনেমাটির বিপক্ষে বক্তব্য দেন। চলচ্চিত্রপাড়ায় এ নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে প্রযোজকদের পক্ষ থেকে টাকা পাচারের অভিযোগসহ ‘তুফান’ কেন্দ্রিক আরও অনিয়ম নিয়ে সিনেমার প্রযোজক আলফা আইয়ের কর্ণধার শাহরিয়ার শাকিলও কথা বলেছেন। যদিও সেন্সর ছাড়পত্র পাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এবং সিনেমাটির সংশ্লিষ্টদের বয়ানে সব জায়গাতে বলা হয়েছিল, আলফা আই স্টুডিওস লিমিটেড, চরকি এবং ভারতের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসভিএফ এক হয়ে বড় বাজেটের সিনেমাটি নির্মাণে নেমেছে।
কিন্তু এখন শাকিল বলছেন, তুফান যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নয়, এটি বাংলাদেশের সিনেমা। প্রযোজক আলফা আই স্টুডিওস লিমিটেড এবং ডিজিটাল পার্টনার চরকি, ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিবিউশন পার্টনার এসভিএফ।
শাকিলের দাবি, বাংলাদেশের নিয়মকানুন মেনেই তুফান নির্মিত হয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর ও সেন্সর বোর্ডের সব নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে মানা হয়েছে বলে জানান তিনি। শাকিল মনে করেন, প্রযোজকদের আনা অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারও মনে প্রশ্ন থাকলে তথ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআর থেকে খোঁজ নিতে বলেছেন তিনি।