ভারতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পাওলি দাম। টলিউডের পাশাপাশি বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতেও অভিনয় করেছেন তিনি, দেখা গেছে ঢালিউড সিনেমায়ও। পেয়েছেন জনপ্রিয়তাও। কাজ করেছেন ইন্ডাস্ট্রির বাঘা বাঘা সব নির্মাতার সঙ্গে। এবার আরও একবার তিনি নাম লেখালেন ঢাকাই সিনেমায়। নির্মাতা ফাখরুল আরেফীন খানের নীল জ্যোৎস্না সিনেমার প্রধান নারী চরিত্র লায়লার ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে। সিনেমার শুটিং শুরু হবে জুন মাস থেকে। সিনেমাটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধের গল্প এবং বাংলাদেশের সিনেমার প্রতি তার ভালোবাসা নিয়ে পাওলি কথা বলেন কালবেলার সঙ্গে। লিখেছেন মহিউদ্দীন মাহি—
কেমন আছেন, কী নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
ভালো আছি। তবে প্রচণ্ড গরম। কলকাতায় এমন গরম আগে অনুভব করিনি। শুনেছি ঢাকাতেও অনেক গরম। অতিরিক্ত গরম ছাড়া সবকিছুই ভালো যাচ্ছে। একটা কাজ করছি। সেটার শুটিং সেটে বসেই কথা বলছি।
আবারও বাংলা সিনেমায় অভিনয় করছেন। এ কাজের সঙ্গে আপনি কবে থেকে সম্পৃক্ত?
এ কাজ নিয়ে আমার নির্মাতা ফাখরুল আরেফীন খানের সঙ্গে গত বছর থেকেই কথা হচ্ছিল। তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে গল্প পাঠান এবং বইটির নাম বলেন। এরপর আমি মোশতাক আহমেদের প্যারাসাইকোলজিবিষয়ক উপন্যাস ‘নীল জোছনার জীবন’ পড়তে শুরু করি। গল্প পরেই আমি মুগ্ধ হয়ে কাজটি করার জন্য সম্মতি দিই। কারণ এ ধরনের গল্পে বাংলা ভাষায় খুব একটি সিনেমা হয় না। এমন একটি গল্পে কাজের ক্ষেত্রে সুযোগ এলে তখন আর ভাবার সময় থাকে না। সেদিক থেকেই কাজটির প্রতি আমার আগ্রহ অনেকটাই বেড়ে গেছে। অবশেষে কাজটির সঙ্গে আমার চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। জুন থেকে শুটিং শুরু হবে। এ সময় আমি বাংলাদেশে আসব। কারণ আমাদের একটি ওয়ার্কশপও হবে।
প্যারাসাইকোলজি নিয়ে এটাই মনে হয় আপনার প্রথম সিনেমা, কাজটিতে কেমন চ্যালেঞ্জ হবে বলে আপনি মনে করেন?
আমি ব্যক্তিগতভাবে প্যারাসাইকোলজি পছন্দ করি। প্যারালাল ইউনিভার্স বা মাল্টি ইউনিভার্স নিয়ে আমারও আগ্রহ আছে। এ ছাড়া এই সাবজেক্ট নিয়ে বাংলায় খুব একটা সিনেমা হয় না। এগুলো হলিউডে হয়। বিষয়টি আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি না। কারণ থিমটি খুবই ইউনিক। এমন গল্প নিয়ে দুই বাংলাতেই খুব একটা কাজ হয় না। সেই কারণে কাজটি নিয়ে আমি খুবই উৎসাহী। চ্যালেঞ্জের বিষয়টি মাথায় নেই আমার। শুধু মন দিয়ে কাজটি করতে চাই। আশা করছি কাজটি খুব ভালো হবে।
চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন?
আমি বর্তমান যে কাজটি করছি এটি শেষ করেই চরিত্র নিয়ে কাজ শুরু করব। এ ছাড়া মানসিকভাবে প্রস্তুতি তো অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছে। তারপর নির্মাতা আমার সহযোগিতার জন্য সিনেমা রিলেটেড অনেক ম্যাটেরিয়াল শেয়ার করেছেন। কাজটি নিয়ে আমরা দীর্ঘ সময় ধরেই কথা বলছি, পরামর্শ করছি। মানসিক প্রস্তুতি অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছে আমার। এরপর আমি এ ধরনের গল্পে নির্মিত বেশ কিছু সিনেমা দেখেছি। তাই আমার প্যারাসাইকোলজি নিয়ে বেশ ভালো একটি ধারণাও রয়েছে।
দুই ইন্ডাস্ট্রির অভিনেতা-অভিনেত্রীর কাজের পরিধি অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশে শিল্পীরা কলকাতায় কাজ করছেন, টালিগঞ্জের শিল্পীরা এখানে। এ বিষয়টি নিয়ে আপনার মতামত জানতে চাই...
এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো দিক। কাজের ক্ষেত্রে দুই ইন্ডাস্ট্রির সম্পর্কই দীর্ঘদিনের। নতুন করে এ গতি আরও বেড়েছে, যা আমাদের সবার জন্যই আনন্দের এবং ভালো খবর। এটি আরও বাড়া উচিত। কারণ আমাদের ভাষা এক, দর্শকও এক। এখন সিনেমার পাশাপাশি ওটিটিতে সবাই এক হয়ে কাজ করছে। এ সংখ্যা আরও বাড়ুক আমার সেই প্রত্যাশা থাকবে।
দুই বাংলার কাজের বাজেট নিয়ে জানতে চাই। পার্থক্য কেমন?
আমার মনে হয় খুব একটা পার্থক্য নেই। কারণ যদি ব্যাখ্যা করি তাহলে এভাবে বলব—ভালো গল্প অনুযায়ী দুই বাংলাতেই বিগ বাজেটের কাজ হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে খুব একটি পার্থক্য নেই। তবে অন্যান্য ভাষায় যেভাবে বাজেট দিয়ে সিনেমা নির্মাণ করা হয়, সে ক্ষেত্রে আমাদের একটু কম হচ্ছে। এদিক থেকে একটু বাজেট বাড়লে ভালো হয় বলে আমি মনে করি।
বাংলাদেশের কাজ কি নিয়মিত দেখা হয়, চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে আপনি কাজ করেছেন মনের মানুষ সিনেমায়... এ ছাড়া কাদের কাজ আপনার ভালো লাগে?
বাংলাদেশের কনটেন্ট আমি সময় পেলেই দেখি। চঞ্চলের সঙ্গে আমি একটি সিনেমাতেই কাজ করেছিলাম, সেটি হচ্ছে মনের মানুষ। এরপর আর করা হয়নি। তবে দেখা হলে কাজ নিয়ে কথা হয়। অনেক গল্প হয়। তার সাম্প্রতিক কাজ নিয়ে আলাপ হয়। এ ছাড়া মোশাররফ করিম একজন বিখ্যাত অভিনেতা। তিনি দুর্দান্ত। তার সঙ্গে আমার কাজ করার সুযোগ হয়নি। সুযোগ হলে অবশ্যই করব।
ঢাকায় সবশেষ এসেছিলেন কবে, এখনকার কোন বিষয়টি সবচেয়ে বেশি মিস করেন?
কভিডের আগে সবশেষ এসেছিলাম। এখানকার সবকিছুই আমি মিস করি। ঢাকার খাবার, মাটি বাতাস সবকিছুই আমার পছন্দ। এ ছাড়া ইলিশের কথা না বললেই নয়। সিনেমাটির সঙ্গে যখন চুক্তিবদ্ধ হলাম, তখন থেকেই ভালো লাগছিল যে, আবার ঢাকায় যাওয়ার সুযোগ হলো। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে।
কালবেলাকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ...
কালবেলার নাম আমি জীবনেও ভুলব না। কারণ আমার কালবেলা শিরোনামে গৌতম ঘোষের একটি সিনেমা রয়েছে। যেখানে মাধবীলতা চরিত্রে অভিনয় করে সবার ভালোবাসা পেয়েছিলাম। তাই এ নামটি আমার জীবনের সঙ্গেই জুড়ে আছে।