সময়ের অন্যতম ব্যস্ত অভিনেতা আরশ খান। টেলিভিশন থেকে ইউটিউবকেন্দ্রিক নাটকে সরব উপস্থিতি তার। কয়েক বছরের ক্যারিয়ারে একশর বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন। ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে আরশের নাটক মানেই ভিউ। প্রযোজক-পরিচালকরাও তার শিডিউল পেতে মরিয়া।
তবে মাঝে বিরতি নিয়েছিলেন আরশ। আবারও নতুন করে নতুন উদ্যমে ফিরছেন অভিনয়ে। দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করছেন ভালো কিছু নিয়ে উপস্থিত হতে। তবে বেশকিছু কারণে কোণঠাসা হয়ে ছিলেন তিনি। অভিনেতা জানান, একটি সিন্ডিকেটের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। তবে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করেছেন ছোট পর্দার আরেক অভিনেত্রী তাসনুভা তিশা। এতে বিপদে পড়তে হয় তাকেও।
এ নিয়ে এই অভিনেতা বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমার ক্যারিয়ার নামক তরী কেমন যেন ডুবেই যেতে শুরু করেছিল। একটি সিন্ডিকেটে পড়ে গিয়েছিলাম আমি। সেই সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন আমার আগের কো-আর্টিস্ট। পরপর আমার কাজ বাতিল হয়ে যাচ্ছিল। প্রচণ্ড টেনশন হচ্ছিল, কীভাবে চলব? একেবারেই নিরুপায় হয়ে গিয়েছিলাম। কী করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। ঠিক তখনই বটগাছ হয়ে আমার পাশে দাঁড়ান তাসনুভা তিশা।’
এই অভিনেত্রী আগলে রেখেছিলেন আরশকে। ছিলেন বিপদে-আপদে তার সঙ্গে। এতে করে কাজ হারিয়েছেন অভিনেত্রীও, এমনটাই দাবি করে আরশ আরও বলেন, ‘তিশা কাজ শুরু করতেই তাকে হুমকি-ধমকি দেওয়া শুরু করে ওই সিন্ডিকেট। কাজ বাতিল করে দেওয়াসহ তাকে নিয়ে কেউ কাজ করবে না, এমন অনেক কথাও আসে। তবে সেসবে তিশা পাত্তা দেয়নি। কাজ করেছে। তবে অনেক ঝড়ঝাপ্টা ঠেকিয়েও মুক্তি পাওয়া যাচ্ছে না। তিশার অনেক কাজ বন্ধ হয়েছে। এটা অনেক লজ্জার। যদি এই লজ্জাকে অ্যাসিডে রূপ দেওয়া যেত, তাহলে গোটা ইন্ডাস্ট্রি জ্বলে-পুড়ে গলে নষ্ট হয়ে যেত।
সিন্ডিকেট থেকে বের হতে না পেরে আরশ খান নাটক থেকে দূরে সরে যেতে চেয়েছিলেন। ভেবেছিলেন আর কখনো কাজ করবেন না। অভিনেতা বলেন, ‘আমি সাপোর্ট না পেলে আর হয়তো কাজ করতাম না। আমি ভালো কাজ না পেলেও করতাম না। এতে আমার পরিবার নিয়ে হয়তো বিপদে পড়তাম। আমি তো ডিসিশন নিয়েই নিয়েছিলাম, আর কাজ করব না।’
এ অবস্থা থেকেও অভিনেত্রী তিশা তাকে রক্ষা করেন। নতুন করে জুটি বেঁধে কাজ শুরু করেন। তবে তার সঙ্গেও সিন্ডিকেটের এহেন আচরণ নিয়ে ধিক্কার জানান আরশ। তিনি বলেন, ‘তিশা আমাকে নাটক থেকে সরে যেতে দেয়নি। আর এমন একটা সময় যে আমাকে সাহায্য করল আর তাকেই আপনারা সরিয়ে দিচ্ছেন, এটা খুবই লজ্জার বিষয়। আমি আপনাদের ধিক্কার জানাই।’
আরশ খান মনে করেন, দেশের এই সংস্কৃতির সময়ে ইন্ডাস্ট্রির ভেতরেও পরিবর্তন প্রয়োজন। অভিনেতা বলেন, ‘বোধের জায়গাটুকু কবে আসবে আমাদের মধ্যে? দিস ইজ হাই-টাইম, এখন আসা উচিত। বাংলাদেশের সবকিছু পাল্টে গেল, কিন্তু আমাদের মধ্যে থাকা হিংসা, ছোটলোকিটা গেল না। লজ্জার বিষয় এটা। এখানে পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন।’
ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান অবস্থার উন্নতি এবং সিন্ডিকেটের প্রতি অনুরোধ করে আরশ বলেন, ‘আমরা শিল্পী। এর মানে আমরা সবাই ভালো মানুষ। সে কারণেই নেশা করি না, চুরি-ডাকাতি খুন করি না। আমাদের এসব শোভা পায় না। আমার অনুরোধ থাকবে, আমরা যেন নতুনভাবে সব শুরু করি। ওপরে একজন আছেন। তিনি সবকিছুর হিসাব নেবেন। ইহকালের পরকালের সব হিসাব তিনি নেবেন। একটু ভয় করুন। সবকিছুর দরকার আছে।’
একটা সময় আরশ ও অভিনেত্রী তানিয়া বৃষ্টির মধ্যে প্রেমের গুঞ্জন চাউর ছিল। একের পর এক নাটকে জুটি বেঁধে কাজ করেছেন তারা। কিন্তু এখন আর একসঙ্গে দেখা যায় না তাদের। উল্টো পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করেন দুজনেই। আরশ দুই হাতে দুটি ঘড়ি পরে থাকেন। সেই ঘড়ি নাকি তার প্রতারক প্রেমিকার দেওয়া। এদিকে তানিয়ার দাবি, আরশকে অনেক ঘড়ি উপহার দিয়েছেন তিনি। তার মধ্যে দুটি ঘড়ি সবসময় পরে থাকেন আরশ।