পুরো নাম নিদ্রা দে নেহা। মায়ের ইচ্ছাতে অভিনয়ে আসা। এখন নিজেই স্বপ্ন দেখছেন প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী হওয়ার। গতকাল শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে তার প্রথম সিনেমা ‘শরতের জবা’। এ সিনেমায় কাজের অভিজ্ঞতাসহ বেশ কিছু বিষয়ে তরুণ এ অভিনেত্রী কথা বলেছেন কালবেলার সঙ্গে। লিখেছেন— রাজু আহমেদ
বিয়ের পর প্রথম পূজা, কেমন প্ল্যান করছেন?
নিদ্রা দে নেহা: এবার আমাদের বিয়ের পর প্রথম পূজা, এ কারণেই এ পূজা আমাদের জন্য বেশি স্পেশাল। আমরা সবাইকে গিফট দিয়েছি, সবাই আমাদের দিয়েছে। এবার পূজা আরও একটি কারণে স্পেশাল। আমার প্রথম সিনেমাটা মুক্তি পাচ্ছে। সে কারণেই এবার ঢাকাতেই থাকা হবে। না হলে হয়তো বাবার বাড়ি অথবা শ্বশুরবাড়িতেই উদযাপন করতাম। আমার সিনেমার কারণে এবার আমার দুই পরিবারকেই ঢাকায় রেখেছি। বন্ধুদেরও বলে দিয়েছি, অষ্টমীর দিন ফার্স্ট ডে, ফার্স্ট শো দেখে, শাঁখারীবাজার গিয়ে সারা রাত ঘুরব, খাওয়া-দাওয়া করব—এককথায়, পূজাকে অনেক বেশি স্পেশাল করে তুলব।
আপনি এবং আপনার স্বামী বেশ কিছু বিজ্ঞাপন, নাটক ও ওটিটি কনটেন্টে কাজ করেছেন। সামনেও একসঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে কি না?
নিদ্রা দে নেহা: আমি এবং প্রান্তর বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করার পর আবারও আমাদের জুটি দেখা যাবে নাটক ‘শখের নারী’তে। এ ছাড়া চরকিতে ওয়েব ফিল্ম ‘আন্তঃনগর’-এ প্রথম একসঙ্গে কাজ করার পর, আমাদের অনস্ক্রিন কেমিস্ট্রি দর্শকদের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয়তা লাভ করে। তবে হ্যাঁ গল্পের প্রয়োজনে নির্মাতারা যদি আমাদের জুটি নিয়ে কাজ করতে চায়, তাতে আমাদের আপত্তি নেই।
বিয়ের পর দাম্পত্যের কেমিস্ট্রি কেমন?
নিদ্রা দে নেহা: আমাদের কেমিস্ট্রি ক্যামেরার পেছনে যেমন, সামনেও তেমন। কোনো পার্থক্য নেই। ওর সঙ্গে কাজ করতে আমার খুব বেশি ভালো লাগে। আমাদের জন্য ক্যামেরার সামনে কিংবা পেছনে বলে কোনো রসায়ন নেই। আমাদের কেমিস্ট্রিটা আসলে আমাদেরই। তবে বিয়ের পর এখন আমাদের কাজ শেখার সুযোগ বেড়েছে। সময় পেলেই সিনেমা দেখি, এরপর দুজনে মিলে পছন্দের চরিত্র রূপায়ণের চেষ্টা করি। বিজ্ঞাপনচিত্র থেকে অভিনেত্রী হয়ে গেছেন, অভিনয় নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
নিদ্রা দে নেহা: ২০২০ সালের ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’ দিয়ে আমার মডেলিংয়ের শুরু। কখনো অভিনয় শিখিনি। তবে ছোটবেলায় নাচ করতাম। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ভাইয়ের ওভিসি আমার বাংলাদেশে কাজ করেছি। নিজেকে সবসময় অভিনয়শিল্পী হিসেবেই দেখতে চাই। অভিনয়টা খুব ভালোবাসি। আমি যখন অভিনয় করি, তখন নিদ্রা থাকি না, একেকটা চরিত্র হয়ে উঠি। চরিত্রে থাকলে আমার জীবনের কোনো চিন্তা মাথায় থাকে না। একেক সময় একেক চরিত্র ধারণ, ওই চরিত্রের মধ্যে থাকা, এটা খুবই উপভোগ করি। আজীবন অভিনয়শিল্পী হিসেবে কাজ করতে চাই।
মুক্তি পেয়েছে আপনার প্রথম সিনেমা ‘শরতের জবা’। এতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
নিদ্রা দে নেহা: ‘শরতের জবা’ আমার প্রথম সিনেমা। এই সিনেমায় কুসুম শিকদার আপা, ইয়াশ রোহান ভাইয়ের মতো সহশিল্পী পেয়েছি। সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমার সঙ্গে জুটি ছিলেন জিতু আহসান ভাই। ছোটবেলায় তাকে টিভিতে দেখেছি। উনাদের কাছে আমি খুবই নগণ্য। দারুণভাবে সবাই সহায়তা করেছেন। তাদের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
থ্রিলার বা ফিকশনের ক্যারিয়ার কেমন উপভোগ করছেন?
নিদ্রা দে নেহা: আমার ফিকশনের ক্যারিয়ার চরকি দিয়েই শুরু। এদের সঙ্গে ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’ নামে আরেকটি ওয়েব সিরিজে কাজ করেছি। এতে মোশাররফ করিম ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করেছি। উনার কাছে অনেক কিছু শিখেছি। সিরিজটি নির্মাণ করেছেন কাজী আসাদ।
শোবিজে পথচলা কীভাবে?
নিদ্রা দে নেহা: ছোটবেলা থেকেই নাচ করতাম। ফ্যাশন করে ছবি তুলতাম। মা খুব চাইত, লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টারে যাই। ঢাকায় আসার পর মনে হলো, মায়ের স্বপ্নটা নিয়ে আবার ভাবা যায়। এর মধ্যে মিস ইউনিভার্সে অংশ নিই। টপ টেনে চলে আসি। এভাবেই শোবিজে আসা। স্বপ্ন এটাই যে, অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমাকে যেন সবাই মনে রাখতে পারেন; সে ধরনের কিছু কাজ করে যেতে চাই।
বেড়ে ওঠা ও পড়াশোনা কোথায়?
নিদ্রা দে নেহা: আমার জন্ম ভোলার চরফ্যাসন এলাকায়। মফস্বল জায়গা, সেখান থেকে আমি আমার স্বপ্নের জায়গায় আসতে পেরেছি, এর জন্য পরিবারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। মফস্বলে থাকলেও নাচ, গানের মধ্যে বেড়ে উঠেছি। এসএসসির পর ঢাকায় আইডিয়াল কলেজে পড়েছি। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা থেকে অনার্স করেছি। ছবি আঁকার অভিজ্ঞতাটা অভিনয়ে কাজে লাগছে।