মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ রংপুরবাসী। দিনে-রাতে সমানভাবে কামড়াচ্ছে মশা। নগরবাসী বলছে, প্রজননস্থলগুলো পরিষ্কার না করাসহ নিয়মিত মশানিধন কার্যক্রম পরিচালনা না করায় বেড়েছে উৎপাত। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, শ্যামা সুন্দরী খাল সংস্কার না করায় এখন এটি ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এতে বেড়েছে মশার প্রজনন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় দুই দফা খাল সংস্কারের নামে প্রায় ৯২ কোটি টাকা ব্যয় দেখালেও বাস্তবে এর কোনো সুফলই মেলেনি।
দেশের প্রাচীনতম রংপুর পৌরসভাকে ২০১২ সালে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করা হয়। আগের ১৫টি ওয়ার্ডের সঙ্গে নতুন করে ১৮টি ওয়ার্ড সংযুক্ত করা হয়। যার লোকসংখ্যা ১০ লাখ। নজরদারির অভাবে রংপুর নগরীর ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ শ্যামা সুন্দরী খাল এখন ময়লা-আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে। অথচ খাল সংস্কারে ২০১২ সালে ২৪ কোটি ৮০ লাখ টাক বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর আগে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে আরও ১২ কোটি টাকা ব্যয় করা হয় খাল সংস্কারে। কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের পুরোনো ১৫টি ওয়ার্ড ঘনবসতি হওয়ায় ড্রেন, খাল এবং বসতবাড়ির আশপাশেই মশা বেশি জন্ম নিচ্ছে। তা ছাড়া মহানগরীর অনেক ড্রেনে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে মশার প্রজনন বেড়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকার বসতবাড়ির আশপাশে ঝোপঝাড়ও পরিষ্কারও করা হচ্ছে না। যার কারণে দিনের পর দিন মশার উপদ্রব বেড়ে চলছে।
নগীর গুপ্তপাড়ার ভুক্তভোগী জোহরা বেগম বলেন, শীতের পর গরমের মৌসুমেও মশার উৎপাত বেড়েছে। দিনে-রাতে সব সময়ই মশা কামড়ায়। কয়েল জ্বালিয়েও মশা থেকে নিস্তার মিলছে না।
কামাল কাচনা এলাকার রত্মা বেগম বলেন, রান্না করব, ঘুমাব বা বসে গল্প করব কোথাও শান্তি নেই। মশার অত্যাচারের সঙ্গে যোগ হয়েছে লোডশেডিং। এতে অনেকেই অতিষ্ঠ। আমরা দ্রুত এর সমাধান চাই।
শালবন এলাকার রুহিত জামান বলেন, রংপুর নগরীতে মশার যে উৎপাত বেড়েছে, তাতে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মাঝেমধ্যে ফগার মেশিন দিয়ে মশা তাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তাতেও কাজ হচ্ছে না। রংপুর সিটি কপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, শ্যামা সুন্দরীর ধ্বংসের দায় নগরবাসীর। কয়েকবার খালটি সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু নগরবাসীর অবৈধ দখল ও যত্রতত্র ময়লা ফেলে ভরাট করায় খালটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মশকনিধন কার্যক্রমও কাজে আসছে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে মশকনিধনের কিছু ওষুধ আসছে। আগামী সপ্তাহ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডভিত্তিক স্প্রে এবং ফ্লাইং মশা মারার জন্য কার্যক্রম শুরু করব।