ঈদের টানা ছুটিতে চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সব বয়সী মানুষ ছুটে গেছেন বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। শিশু-কিশোর, যুবক থেকে শুরু করে বাদ যাননি বৃদ্ধ-বৃদ্ধাও। এবার চট্টগ্রামে দর্শনার্থীদের আগ্রহের শীর্ষে রয়েছে চিড়িয়াখানা, ফয়’স লেক ও পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত।
এবারের ঈদের ঘোরাঘুরিতে নগরবাসীর আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। ঈদের তিন দিনে চিড়িয়াখানায় ঘুরতে আসেন ৫৫ হাজার মানুষ। এর মধ্যে ঈদের দিন দর্শনার্থী আসেন ১৫ হাজার, ঈদের দ্বিতীয় দিন ২০ হাজার ও তৃতীয় দিনও ২০ হাজার মানুষ ঘুরতে আসেন।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, দর্শনার্থীদের বেশি আগ্রহ ছিল বাঘ দেখায়। চিড়িয়াখানায় বর্তমানে বাঘ আছে ১৮টি। যার মধ্যে ৫টি সাদা রঙের। এ ছাড়া সিংহ, ক্যাঙারু, হরিণ, বানর নিয়েও মেতে ওঠেন দর্শনার্থীরা। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর শাহাদাত হোসেন কালবেলাকে বলেন, ঈদের তিন দিনে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে এসেছেন ৫৫ হাজার দর্শনার্থী। বাঘ, ক্যাঙারু, হরিণ, পাখির প্রতি দর্শনার্থীদের আগ্রহ দেখা গেছে।
৫ ও ১০ বছর বয়সী ছেলেমেয়েকে নিয়ে হালিশহর থেকে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে এসেছেন মো. আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, বন্ধের অভাবে ছেলেমেয়েদের বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হয় না। তারা অতিমাত্রায় মোবাইলে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। বাঘ, সিংহ, অজগর সরাসরি দেখাতে চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসলাম।
পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই
ঈদের ছুটিতে নারী, শিশু, যুবক, বৃদ্ধ—সব বয়সী বিনোদনপ্রেমীরা ভিড় করেছেন চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে। কেউ সমুদ্রের নোনা পানিতে পা ভেজাচ্ছেন, কেউ স্পিডবোটে ছুটে বেড়াচ্ছেন ঢেউয়ের তালে। কেউ আবার সূর্যাস্ত দেখার অপেক্ষায় সমুদ্রপাড় ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছেন। সমুদ্রসৈকতে যেন তিল ধারণেরও ঠাঁই নেই।
নগরীর বহদ্দারহাট থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে এসেছেন নবদম্পতি তোফাজ্জল ও রহিমা বেগম। তারা জানান, বিয়ের পর কক্সবাজার যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। তবে সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় যাওয়া হয়নি। তাই ঈদের ছুটিতে পতেঙ্গায় ঘুরতে এসেছেন।
ফয়’স লেকে সরব উপস্থিতি: চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা-লাগোয়া ফয়’স লেকেও দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। তুলনামূলক ব্যয়বহুল হলেও দর্শনার্থীদের আগ্রহের কোনো কমতি ছিল না। তিন দিনে ফয়’স লেকে বেড়াতে এসেছেন প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার দর্শনার্থী। ফয়’স লেক কনকর্ড অ্যামিউজমেন্ট, সি ওয়ার্ল্ড ও বেস ক্যাম্প—তিনটি অংশেই ছিল মানুষের সরব উপস্থিতি। বুধবার ফয়’স লেকে দেখা যায়, পার্কের রাইডগুলোতেও চড়ে বসেছে শিশু-কিশোররা, জলকেলিতে মেতে আছেন সব বয়সী মানুষ। ফয়’স লেক কমপ্লেক্সের পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কনকর্ডের ব্যবস্থাপক (বিপণন) বিশ্বজিৎ ঘোষ কালবেলাকে বলেন, ঈদের দিন আধা বেলা খোলা ছিল। সেদিন দর্শনার্থী এসেছে ১ হাজার ৯০০। দ্বিতীয় দিন ৫ হাজার ৯০০ ও তৃতীয় দিন প্রায় ৬ হাজার। তিনি বলেন, এবার নতুন করে ছয়টি রাইড যুক্ত করা হয়েছে। মানুষের উপস্থিত বেশ ভালো।
বাদ যায়নি নতুন বিনোদনকেন্দ্রেও: নগরীতে পরিচিত বিনোদনকেন্দ্রের বাইরেও বেশ কিছু জায়গা ভ্রমণপিপাসুদের কাছে বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে রয়েছে বায়েজিদ সংযোগ সড়ক, বাকলিয়ায় কর্ণফুলী নদীর তীর, ফৌজদারহাটে ডিসি পার্ক। এসব জায়গায় শত শত মানুষ ঈদের ছুটিতে পরিবারসহ ঘুরতে এসেছেন।
মন্তব্য করুন