রাজশাহীতে তীব্র রোদ আর গরম ভাটা ফেলতে পারেনি ঈদ আনন্দে। রোদ-গরম উপেক্ষা করেই নগরীর বিনোদনকেন্দ্রগুলো হয়ে উঠেছিল জনসমাগমে মুখর। শহীদ জিয়া শিশুপার্ক, বড়কুঠি পদ্মার পাড়, সীমান্ত নোঙর, ভদ্রা শিশুপার্কসহ অন্য বিনোদনকেন্দ্রগুলো ছিল জমজমাট। সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে জিয়া শিশুপার্ক ও পদ্মা গার্ডেনে।
বৃষ্টিার দেখা নেই। চৈত্রের প্রখর খরতাপে নগরবাসীর জীবনে নাভিশ্বাস উঠলেও ঈদের দিন বিকেলের পর থেকে রাজশাহীর বিনোদনকেন্দ্রগুলো জমে উঠতে শুরু করে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের নতুন পোশাকে ভিড় জমায় বিনোদনকেন্দ্রগুলোয়।
মঙ্গল ও গতকাল বুধবার বিকেলে রাজশাহীর শহীদ জিয়া শিশুপার্ক, বড়কুঠি পদ্মার পাড়, তার অদূরের সীমান্ত অবকাশ, সীমান্তে নোঙর এবং ভদ্রা শিশুপার্কসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। নগরের প্রধানতম বিনোদনকেন্দ্র রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যানে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদের খুশিতে সবাই মাতোয়ারা। শিশুপার্কে গিয়ে যেন শিশু হয়ে গেছেন বড়রাও। ঘুরে বেড়াচ্ছেন এ-প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত।
এদিকে ঈদের ছুটিতে পাল্টে গেছে ছোট ছোট যানবাহনে ঠাসা এই নগরীর চিত্র। প্রধান প্রধান সড়ক ফাঁকা থাকলেও বিনোদন কেন্দ্রগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে আছে ছোট ছোট যানবাহন।
এমন রুক্ষ আবহাওয়াও বিনোদন পিপাসুদের ঘরের চার দেয়ালে আটকাতে পারেনি। ঈদের আনন্দ উপভোগে একযোগে বেরিয়ে পড়েছে সবাই। আর রিকশা ও অটোরিকশার কদর বেড়েছে দ্বিগুণ। সুযোগ বুঝে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন কেউ কেউ।
শিশুপার্কের সামনে কথা হয় নিউমার্কেট সুলতাবাদ এলাকার বাসিন্দা নূর আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, তার এলাকা থেকে অন্য সময় এই শিশুপার্ক পর্যন্ত রিকশায় আসতে লাগে ভাড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কিন্তু ঈদ কেন্দ্র করে ৭০ থেকে ১০০ টাকা ভাড়া হাঁকছেন রিকশাচালকরা। শুধু আজই নয়, রমজান মাসের শুরু থেকেই ঈদের কথা বলে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে তারা। বিশেষ করে ঈদের বাজার ধরতে বাইরের উপজেলা থেকেও মৌসুমী রিকশাচালকরা শহর এলাকায় এসে পড়েছেন। তারাই মূলত ভাড়া নিয়ে বেশি ঝামেলা করছেন বলেও অভিযোগ নূর আলমের।
রিকশাচালক সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের দিন একটু বেশি ভাড়া চাইছি, তাই যাত্রীরা রেগে যাচ্ছেন। বছরে তো একদিনই এমন সুযোগ পাই, একটু সেলামি চাইলে দোষ কী!’
ব্যাংক কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, ‘এবার ঈদে গ্রামের বাড়ি যাওয়া হয়নি। রাজশাহীতেই আছি, ঈদের দিন বিনোদনকেন্দ্রে সময় কাটাচ্ছি। তবে রিকশা ও অটোরিকশা চালকরা বেশি ভাড়া চাচ্ছেন, যা ভোগান্তির কারণ হচ্ছে।’
সীমান্ত নোঙর পেরিয়ে সামান্য পথ পেরুলেই চোখে পড়ে সুদৃশ্য গ্যালারি সমৃদ্ধ মুক্তমঞ্চ। এটি লালন শাহ পার্ক। আঁকাবাঁকা সিঁড়ির মতো সাজানো-গোছানো গ্যালারিতে বসে অনায়াসে দেখা যায় পদ্মার অপরূপ দৃশ্য। নগরী টিকাপাড়া থেকে পরিবার নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছেন ইসমত আরা পপি। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এবারের ঈদটা একটু অন্যরকম। পরিবার নিয়ে বের হয়েছি। বাচ্চারা অনেক মজা করছে। ঈদের আনন্দটা উপভোগ করছি।’ পদ্মা পাড়ে বেড়াতে আসা রায়হানুল ইসলাম বলেন, পদ্মার বিশালতার পাশে দাঁড়ালে মনে প্রশান্তি আসে। তাই পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। সবাই অনেক মজা করছে।
মন্তব্য করুন