এম এম আকাশ
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৪৮ এএম
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৪১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

টালমাটাল অতীত নিয়ে ভবিষ্যতের আলো-অন্ধকার

টালমাটাল অতীত নিয়ে ভবিষ্যতের আলো-অন্ধকার

বাংলাদেশের মানুষ প্রতি বছর সাধারণত তিনবার বর্ষবরণ করে থাকে। এর মধ্যে ১ জানুয়ারি খ্রিষ্টীয় নববর্ষ, ১৪ এপ্রিল ১ বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ এবং ১ জুলাই নতুন অর্থবছরের সূচনা দিন হিসেবে উদযাপন করা হয়। নববর্ষ পালনকালে আমরা স্বাভাবিকভাবেই বিগত এক বছরের অর্জন এবং ব্যর্থতাকে স্মরণ করে ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন করার চেষ্টা করি। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই রীতি তিনবার অনুসৃত হয়।

আমরা এ মুহূর্তে খ্রিষ্টীয় ২০২৪ সাল অতিক্রম করে ২০২৫ সালে পদার্পণ করলাম। ২০২৪ সাল তিনভাবেই একটি বিশেষ কারণে জাতীয় জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর হিসেবে বিবেচিত হওয়ার দাবি রাখে। বিশেষ করে এই বছরটিতে শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আগস্ট ছাত্র-গণআন্দোলন এবং তার অনিবার্য পরিণতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ, প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ও দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার ঘটনাটি ইতিহাসের একটি বিস্ময়কর উল্লেখযোগ্য ঘটনা হয়ে থাকবে। যদিও এখনই এর পুনর্মূল্যায়নের সময় আসেনি। এ ঘটনার মূল গতিমুখ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় উত্তরণ ও বৈষম্য নিরসন এখনো অসমাপ্ত ও চলমান রয়েছে। গণতন্ত্র আর বৈষম্য নিরসন কতটুকু হবে, তা নির্ভর করবে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ভবিষ্যতে কী আকার ধারণ করে তার ওপর।

এই আন্দোলনের মাধ্যমে অতীত বিতর্কিত তিন তিনটি নির্বাচনের দ্বারা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছর ধরে যে ক্রোনি ক্যাপিটালিজম এবং কর্তৃত্বপরায়ণ শাসন তৈরি হয়েছিল তার এক ধরনের অবসান ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। এর ফলে ব্যবস্থার পরিবর্তন না হলেও অন্তত ক্ষমতার কেন্দ্রগুলোতে একটি তাৎক্ষণিক প্রবল শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছিল। সেই শূন্যতা আপাতত প্রাথমিকভাবে পূরণ করেছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অনির্বাচিত ও সংস্কারপন্থি স্বল্পমেয়াদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

অপেক্ষাকৃত উচ্ছ্বসিতদের ভাষায় আগস্ট অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একনায়কতন্ত্র বা স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। ইতিহাস রিসেট হয়েছে। অর্থাৎ মনে হচ্ছে এই দফা দেশে যে গণতন্ত্রহীনতার সমস্যা ছিল, তা আমরা সমাধান করতে পেরেছি; কিন্তু আগস্ট আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা রাজনৈতিক সংকট শেষ করতে পেরেছি এটা বললে বোধহয় অতিশয়োক্তি করা হবে। রাজনৈতিক সমস্যার দুটি দিক থাকে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ইতিবাচক দিক আর একটি নেতিবাচক দিক। নেতিবাচক দিকটি হচ্ছে বিদ্যমান রাজনৈতিক বাধাগুলো দূর করার সমস্যা। আর ইতিবাচক দিক হচ্ছে রাজনীতিতে নতুন ব্যবস্থা সৃষ্টি করা বা প্রতিস্থাপন করা। সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা রাজনীতিতে বিদ্যমান পুরোনো শত্রুদের উৎখাত করতে পেরেছি। কিন্তু সেই শূন্যস্থানে একটি সৃজনশীল, প্রোডাকটিভ, নন-ক্রনি, বৈষম্যবিরোধী এবং জাতীয়তাবাদী (সব ধরনের সাম্রাজ্যবাদ আধিপত্যবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক শক্তি) রাজনৈতিক শক্তিকে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠা করতে কি পেরেছি? এটা করা না গেলে আবারও সেই পুরোনো ব্যবস্থা জেঁকে বসবে, যা আমরা দীর্ঘদিন ধরেই প্রত্যক্ষ করে এসেছি। ১৯৯০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত আমরা দেখেছি একবার আওয়ামী লীগ এসে লুটপাট করে আর একবার বিএনপি এসে লুটপাট করে। যেহেতু তখনো পর্যন্ত কোনো না কোনো আকারে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু ছিল, তাতে নির্বাচন হতো, তারপর অভিযোগ সত্ত্বেও নির্বাচনী রায় মেনে নিয়ে দুটি দল পালাক্রমে ক্ষমতার হাত বদল করত। কিন্তু ব্যবস্থা বদলাত না, ব্যবস্থার কোনো সংস্কার হতো না। জনগণ হতাশ হয়ে বলতেন ‘যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ’। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে কটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার কোনোটিতেই একই রাজনৈতিক দল পরপর দুবার ক্ষমতায় আসতে পারেনি। এই অবস্থা চলছিল। কিন্তু শেষের বার এসে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করে ফেলে। অন্যদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ক্ষমতাসীন হলেও পরবর্তী সময়ে তারা আদালতের মাধ্যমে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধান থেকে বাদ দেয়। ফলে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ফের সংকট দেখা দেয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিলের ফল হলো ভয়াবহ। আওয়ামী লীগ বুঝতে পারে তাদের আর কেউ ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না। তারা তাই যা খুশি তাই করার মতো ক্ষমতা পেয়ে যায়। তারা বড় বড় মেগা প্রকল্প গ্রহণ করতে থাকে। এতে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি পেল ঠিকই; কিন্তু এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটে নেওয়ার রাস্তা উন্মুক্ত হলো। সরকার সমর্থক একটি গোষ্ঠী ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটে নেয়। তারা এই অর্থের ওপর কোনো ট্যাক্স প্রদান করেনি। অনেকেই সেই কালো টাকা বিদেশে পাচার করে দেয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্যোগে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি দুর্নীতি এবং অর্থ পাচারের যে পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে, তাতে এই ভয়াবহ চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। সাধারণভাবে আমরা যে পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে বলে মনে করতাম, প্রকৃতপক্ষে তার চেয়ে অনেক বেশি মাত্রায় দুর্নীতি হয়েছে। যদিও কারও কারও দৃষ্টিতে প্রকাশিত পরিসংখ্যানের পরিমাণগত মাত্রা নিয়ে আপত্তি রয়েছে; কিন্তু মানুষ যখন খোদ প্রধানমন্ত্রীর মুখে শুনেছে যে তার বাসার পিয়নের হাতেই জমা হয়েছে ৪০০ কোটি টাকা—তখন মানুষ আর এসব তথ্য অবিশ্বাস করতে পারছে না।

আমরা যাত্রা শুরু করেছি উত্তরাধিকারী সূত্রে প্রাপ্ত স্বৈরাচার এবং স্বজনপ্রীতি ও লুটপাটের সমস্যা নিয়ে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর ড. মোহাম্মদ ইউনূস বললেন, আমরা কিছু সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করব। তারপর ২০২৫ সালে শেষে অথবা ২০২৬ সালের প্রথম দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করব। এখন প্রশ্ন হলো, গত সাড়ে ১৫ বছরে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অঙ্গনে যে জঞ্জাল সৃষ্টি হয়েছে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ অথবা ২০২৬ সালে প্রথম দিকের আগে কি তা পরিষ্কার করা সম্ভব হবে? যদি সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন না করেই জাতীয় নির্বাচন দেওয়া হয়, তাহলে পরবর্তী সময়ে যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতেও পারেন আবার বন্ধ রাখতেও পারেন। অতএব এখানে একটি উভবিরোধের বিষয় রয়েছে। সুতরাং একদিকে ড. ইউনূস সংস্কার সমাপ্ত করে নির্বাচন দিতে চাইলে তার সমর্থক রাজনৈতিক শক্তির ঐক্য ভেঙে গিয়ে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা আছে, অন্যদিকে সংস্কার না করে নির্বাচন দিলে এমন শক্তি নির্বাচিত হতে পারে, যারা সংস্কারের প্রস্তাব ও কর্মসূচিগুলো ডিপফ্রিজে ফের পাঠিয়ে দিতে পারেন! ফলে শেখ হাসিনা বিতাড়িত হলেও তার প্রবর্তিত ব্যবস্থা অটুট থেকে যাবে।

কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, যেসব সংস্কার দীর্ঘমেয়াদি সেগুলোর কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে কীভাবে? দুই বছর পর যারা ক্ষমতায় আসবেন তারা কি সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করবেন? যে কোনো সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হলে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট প্রয়োজন হবে। কিন্তু আমাদের দেশে এখন যেসব রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয় বা আসীন হওয়ার যোগ্যতা রাখে, তাদের মধ্যে সেই কমিটমেন্ট কি আছে? প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অতীত ও সাম্প্রতিক ইতিহাস থেকে দেখা যায় যে, তাদের গঠন প্রক্রিয়াই হচ্ছে প্যাট্রন-ক্লায়েন্ট সম্পর্ক নির্ভর তথা অর্থ, মাস্তানি এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতানির্ভর। জেনারেল জিয়া ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রাজনৈতিক দল গঠন করেন। এরশাদও ক্ষমতায় আসীন হয়ে একসময় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় রাজনৈতিক দল গঠন করেন। আওয়ামী লীগ পাকিস্তান আমলে তৃণমূলে কাজ করে দল গঠন করেছিলেন; কিন্তু ক্ষমতাসীন হওয়ার পর সে ঐতিহ্য আর রক্ষিত হয়নি। অন্যান্য দেশে মাঠপর্যায়ে রাজনীতি চর্চার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হয়। আধুনিক বুর্জোয়া দেশগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো ধনীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চলেন; কিন্তু তা জোগাড় ও ব্যয়ের স্বচ্ছতার আইন সেখানে থাকায় মানুষ জানতে পাওর কোন দল কোন ধনীর পকেটে রয়েছেন।

কিন্তু আমাদের দেশে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়। এবারও প্রশ্ন এসেছে ড. ইউনূস কিংস পার্টি গঠন করবেন কি না। ড. ইউনূস বলে দিয়েছেন তিনি কোনো পার্টি গঠন করবেন না। কিন্তু তার তরুণ শিষ্যরা এরই মধ্যে পার্টি গঠনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। রাজনৈতিক দল গঠন করা একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে রাজনৈতিক দল গঠন করছেন কি না। সামরিক সহায়তা নিয়ে রাজনৈতিক দল করছেন কি না। অথবা কায়েমি স্বার্থেও টাকা-পয়সা দিয়ে রাজনৈতিক দল গঠন করছেন কি না। তার চেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, তাদের নতুন কোনো রাজনৈতিক আদর্শ আছে কি না, থাকলে সেটা কোন দিক দিয়ে অন্যদের চেয়ে উন্নত?

অতীতে যারা ক্ষমতার বিরুদ্ধে রাজনীতি করেছেন বা রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন তাদের সেই অতীত প্রচেষ্টা ছিল জনগণনির্ভর। এমনকি আওয়ামী লীগও জনগণের ওপর নির্ভর করেই গড়ে উঠেছিল। পরবর্তী সময়ে তারা জনসম্পৃক্ততা হারিয়ে ফেলে। বঙ্গবন্ধু বলতেন, আমি দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। সেই অবস্থা থেকে আওয়ামী লীগ ১৯৭৪ সালেই বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকাকালেই সরে আসতে শুরু করেছিল।

অতএব বলা যায়, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক অঙ্গনে যেসব সমস্যা ছিল, তা আগামীতেও রাজনৈতিক দলগুলোর সংস্কার না হলে থেকেই যাচ্ছে বা যাবে। কাজেই আমি খুব একটা আশাবাদী নই যে, ২০২৬ সালে আমরা ৫ আগস্টের গণতন্ত্র ও বৈষম্যবিরোধী চেতনায় সমৃদ্ধ একটি দেশ পেতে যাচ্ছি। ভালো সংস্কারের পক্ষে ভালো রাজনৈতিক শক্তি তৈরি করতে না পারলে কোনো কিছুরই মৌলিক পরিবর্তন হবে না।

আগামী বছরও মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কারণ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আগে যেসব বাজার নিয়ন্ত্রক সুপারিশ করা হয়েছিল, সেগুলো বাস্তবায়নের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে মনে হয় না। তাই এ ক্ষেত্রে দৃশ্যমান কোনো উন্নতি আশা করা যায় না। আগামী বছর প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে। কারণ উচ্চপ্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে ব্যক্তি খাতে বর্ধিত হারে বিনিয়োগ প্রয়োজন। কিন্তু যারা বিনিয়োগ করবেন বা বিনিয়োগের সামর্থ্য রাখেন তাদের অনেকেই রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিদেশে পালিয়ে গেছেন। যারা দেশে আছেন তারাও নতুন বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ‘ধীরে চলো’ নীতি গ্রহণ করতে পারেন। এ ছাড়া তাদের ওপর ব্যাংকের পাওনা পরিশোধের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় তারা চাইলেও নতুন বিনিয়োগ খুব একটা করতে পারবেন না। এ ছাড়া দেশে যেহেতু এখনো রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে, তাই বিদেশি বিনিয়োগও খুব একটা বাড়বে বলে মনে হয় না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, বিগত সরকার আমলে প্রবৃদ্ধির হার বাড়িয়ে দেখানো হতো। প্রদর্শিত প্রবৃদ্ধির চেয়ে বাস্তব প্রবৃদ্ধি অনেক কম ছিল। আগামীতে মূল্যস্ফীতি, অর্থনৈতিক মন্দা, স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ আহরণ, রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা এসব সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। কাজেই আগামী দু-এক বছর দেশের অর্থনীতি খুব একটা ভালো পর্যায়ে যেতে পারবে বলে আমি মনে করি না। এর সঙ্গে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তো আছেই।

এই লেখার প্রধান দুর্বলতা হলো সমস্যার চিত্রায়ণ করা হয়েছে; কিন্তু সমাধানের কোনো পথ তুলে ধরা হয়নি। ভালো রাজনৈতিক বিকল্প লাগবে, কিন্তু কীভাবে তা গঠিত হবে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। তবে সুযোগ পেলে পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।

লেখক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ, জমায়েত হোয়াইট হাউসের বাইরেও

ফিফটির পর মুমিনুলেরও বিদায়, চাপে বাংলাদেশ

ছাত্রনেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান ছাত্রদলের

সুনামগঞ্জে সড়ক অবরোধ, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে যানবাহন চালু

বিজিবির বাধায় মাটি কাটা বন্ধ করল বিএসএফ

অনলাইন ক্যাসিনো আসক্তি থেকে যুবকের আত্মহত্যা

আ.লীগের মিছিল নিয়ে রাশেদ খানের স্ট্যাটাস

কাভার্ডভ্যান চুরি করে ভাঙারি হিসেবে বিক্রি, গ্রেপ্তার ৩

নসরুল হামিদের ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্ট জব্দ, ৭০ অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ

বাবর-রিজওয়ানদের জন্য আবারও নতুন কোচের সন্ধানে পিসিবি

১০

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় রাজি ইরান!

১১

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম

১২

ধর্ষণের পর বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধে হত্যা

১৩

সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তেলাপোকা-কৃমি-কেঁচোতে আক্রান্ত : ব্যারিস্টার ফুয়াদ 

১৪

নারী বিশ্বকাপ খেলতে ভারতে যাবে না পাকিস্তান

১৫

‘হাসিনা-কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ মিলেছে’

১৬

সিইসির সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি

১৭

আনন্দ-উল্লাসে আবুধাবিতে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত

১৮

জ্বালানি খাতে ২৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ শোধ করেছে সরকার

১৯

নারী পোশাক শ্রমিককে গলাকেটে হত্যা, স্বামী পলাতক

২০
X