শারমীন এস মুরশিদ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি একজন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ‘ব্রতী’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তিনি বাংলাদেশ ‘মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা’র সদস্য ছিলেন। উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রের সংকটসহ বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কালবেলার সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন কালবেলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রীতা ভৌমিক
স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও কেন আমরা নির্বাচনী সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারিনি?
শারমীন এস মুরশিদ : স্বাধীনতার ৫৩ বছরে কিছু কিছু জায়গায় আমরা একটা প্যাটার্ন দেখতে পাই। একটি হলো, সরকার এসেছে, সরকার গেছে। যে সরকার যেভাবেই আসুক না কেন, আমরা দেখেছি, প্রথম দুটো সরকারের সময়ে একটির মেয়াদ তিন বছর, আরেকটির মেয়াদ ছয় বছর। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় একটি, জিয়াউর রহমানের সময় একটি। এই দুটো সরকারের স্বল্প সময়ে আমাদের প্রত্যাশা বেশি হলেও আমরা বেশি কিছু অর্জন করতে পারিনি। কিন্তু কাঠামোগত দিক থেকে যে গণতান্ত্রিক কাঠামো আমরা চেয়েছিলাম, একাত্তর-পরবর্তী বাংলাদেশ রাষ্ট্রে আমরা সেই কাঠামো তৈরি
করতে পারিনি। অর্থাৎ প্রাতিষ্ঠানিক ভিত, মানে গণতন্ত্রকে ধারণ করার জন্য যে কাঠামোগুলো প্রয়োজন হয়—যেমন স্বতন্ত্র একটি বিচারব্যবস্থা; সেটা আমরা গড়ে তুলতে পারিনি। রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে গণতন্ত্র গড়ে তুলতে পারিনি।
ধরা যেতে পারে, আমাদের নির্বাচন কমিশন এবং তার যে রীতিনীতিগুলো একটা মানের মধ্যে প্রয়োগ করে নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বতন্ত্র জায়গায় স্বাধীনতা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে পারিনি। অর্থাৎ একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন তৈরি হয়নি। যদি ধরে নিই, আমাদের গণতান্ত্রিক যাত্রায় ’৭০-এর নির্বাচন একটি মাইলফলক—তার মধ্য দিয়ে একটি যুদ্ধ, একটি স্বাধীন দেশ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, উদারতন্ত্র, একটি সমাজ ব্যবস্থার স্বপ্নিল প্রত্যাশায় একটি নতুন দেশের জন্ম হয়েছে। সেই দেশকে আমরা যে শাসন ব্যবস্থায় নিয়ে এলাম, সেখানে গণতন্ত্রকে সেভাবে জায়গা দিতে পারিনি।
’৯০ সাল থেকে যদি আরেকটা মাইলফলক হয়ে থাকে, একনায়কত্বকে অতিক্রম করে একটি গণতান্ত্রিক ধারায় নির্বাচনে ফিরে এলাম। সেই মাইলফলকে নির্বাচনটি হলো একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে। একই ধারায় কয়েকটি নির্বাচন হলো। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে যে নির্বাচনগুলো হয়, সেই নির্বাচন তুলনামূলকভাবে সুষ্ঠু হয়। মানুষের অংশগ্রহণও ব্যাপক হয়। এরশাদের আমলে নির্বাচনকে নির্বাচন বলা হয় না। ’৭৩-এর নির্বাচনও ত্রুটিমুক্ত ছিল না। এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে যে প্রয়াসগুলো আমরা দেখতে পাই, সেখানে দেখা যায়, একটা শক্ত নির্বাচন কমিশন কিছুদিনের জন্য দাঁড়ায় ওই সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য। একটি উন্মুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা হয়। কিন্তু নির্বাচিত সরকারগুলো ক্ষমতায় এসে কেউ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে ভিত শক্ত করেনি। তারা আর ক্ষমতা ছেড়ে যেতে চান না। বিকৃত নির্বাচনের ভেতর দিয়ে তারা ক্ষমতায় থেকে যান। আজ অবধি কোনো রাজনৈতিক দল তার নিষ্ঠা-সততা প্রমাণ করতে পারেনি যে, ক্ষমতায় থেকে তারা গণতান্ত্রিক। তারা যখন বিরোধী দলে থেকেছেন তারা মহাগণতান্ত্রিক। তারা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়ে ফেলেছেন। মিছিলের পর মিছিল করেছেন। আমাদের দুর্ভাগ্য, আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বড় রকমের অন্যায় করেছেন এ দেশের মানুষের প্রতি। তারা গণতন্ত্রের প্রতি অনুগত ছিলেন না। না হয় পনেরো বছরের এ সংকটেই আমরা পড়তাম না।
একানব্বইয়ের নির্বাচন যখন হলো, দেখলাম দলগুলো সব একত্রিত হলো। সবাই একমতে আসলেন, সেই মুহূর্তটা খুবই আনন্দের ছিল—আমরা একটা ব্যবস্থা পেলাম। যে ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে ভালো নির্বাচন হলো। সেই ভালো নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যেই জিতুক না কেন, সেই হবে দেশের নেতা। ’৯১ সালে আমাদের এই বোধটা হলো। ২০০৮ সালেও আমাদের এই বোধটা হলো। ’৯১ সালে যখন সব রাজনৈতিক দল একত্রিত হয়েছিল, ২০০৮ সালে কিন্তু তা হয়নি বা হতে পারেনি। এই প্রতিটি জায়গায় যেখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে, প্রত্যেকটার অন্তর্বর্তীকালীন পদ্ধতিটা কিন্তু ভিন্ন। তবে তখন তুলনামূলকভাবে কম সহিংসতা হয়েছে। আমাদের সরকার এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভেতরে তফাতটা হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংগ্রাম করতে থাকে গণতান্ত্রিক কাঠামোগুলো আবার সুশাসনের মধ্যে নিয়ে আসার জন্য। বিশেষ করে নির্বাচন কমিশনকে কেন্দ্র করেই আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সবমিলিয়ে বলতে গেলে এক—আমরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো বড্ড অবজ্ঞা করেছি; ভেঙেছি, গড়ে উঠতে দিইনি। দুই—প্রতিটি নির্বাচিত সরকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় এসে সে প্রক্রিয়াটাই ভেঙে ফেলেছে।
কালবেলা : নির্বাচন ব্যবস্থা যে ভেঙে পড়ল—এজন্য প্রধানত কারা দায়ী বলে আপনি মনে করেন।
শারমীন এস মুরশিদ : নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে ফেলার জন্য আমরা সবাই দায়ী। নির্বাচন কমিশন দায়ী, রাজনৈতিক দলগুলো প্রধানত দায়ী। কারণ তারা ক্ষমতার জোরে নির্বাচন কমিশনকে দাঁড়াতে দেয় না। তারা সেটাকে দলীয়করণ করে দলের হাতিয়ার বানিয়ে দেয়। তাকে বাধ্য করে, তাদের ইচ্ছে পূরণের একটা ক্ষেত্রে পরিণত করা। এই দেশে গণতন্ত্র গড়ে না ওঠার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে একটা বড় দায় নিতে হবে। অথচ বারবার আমরা বলে থাকি রাজনৈতিক দলগুলোই তো দেশ শাসন করবেন। আদর্শগত দিক থেকে, মতাদর্শের দিক থেকে তারা যত কথাই বলুক না কেন, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, সাম্যের কথা। নিজেরা সেটার চর্চা করেননি। আর আমাদের নাগরিক, সুশীল সমাজ, বিজ্ঞজনরা কেন দায়ী, বুদ্ধিজীবীরা কেন দায়ী! প্রতিটিবার একটি রাজনৈতিক দল যখন এই অন্যায়গুলো করে, তারা তাদের প্রশ্রয় দেয়। যারা সুশীল সমাজের উপকারভোগী এবং বুদ্ধিজীবীরা তাদের অন্যায়গুলোকে জায়েজ করার জন্য অনৈতিক যুক্তি দাঁড় করিয়ে দেয়। আমরা কতবার প্রতিবাদ করেছি কিন্তু আওয়ামী লীগ দলের পক্ষে যারা ছিলেন, তাদের চোখের সামনে কতটা অন্যায় ঘটেছে, তারা মুখ ফিরিয়ে ছিলেন কেন? তারা বোবা হয়েছিলেন কেন? তারা নীরব ছিলেন কেন? তাদের প্রথম দায়িত্ব ছিল নেত্রীর কাছে যাওয়া, তাদের অঞ্চলের নেতাদের কাছে যাওয়া এবং বলা—এই যে কাজগুলো হচ্ছে, এই পদ্ধতিতে হলে আমরা বেশিদিন টিকে থাকতে পারব না। এই কথাগুলো যথেষ্টভাবে বলা হলো না কেন! আমাদের দায়টা হচ্ছে আমরা নীরব থেকেছি, মুখ ফিরিয়ে থেকেছি। আমরা সত্যকে সত্য বলিনি, মিথ্যেকে মিথ্যে বলিনি। যেখানে ডিআইএসের মতো একটা আইন থাকে, কালাকানুন থাকে। যিনি প্রতিবাদ করেন, তাকে ধরেবেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়। গুম হয়ে যায়, সেখানে কীভাবে কথা বলব! যে ক্ষমতায় যাবে, বিরোধী দলকে একেবারে নিঃশেষ করে দেবে। ২০০০ সালেও আমরা দেখেছি এই প্রতিহিংসা। যখন বাংলা ভাই গড়ে উঠল। উগ্র ধর্মীয় ইসলামিক ভাষণ আমরা শুনতে শুরু করলাম, এগুলো কারও না কারও রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে হয়েছে। তা টিকে থাকেনি, সেটা অন্য কথা। কিন্তু এই অস্থিরতাগুলো, সন্ত্রাসগুলো রাজনৈতিকভাবে করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত দায়িত্বহীন কাজ। দেশপ্রেমিক মানুষ এগুলো করতে পারে না। ২০০৮ সালের পর ২০০৯-এর স্থানীয় সরকার নির্বাচন তুলনামূলকভাবে কিছুটা গ্রহণযোগ্য হওয়ার পর থেকে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, একটাও গ্রহণযোগ্য হয়নি। আমরা যারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি, মানদণ্ড নিয়ে আমরা সমালোচনা করেছি। কোনোটাই আমরা একেবারে নিষ্কলুষ মার্ক দিয়ে বলিনি এই নির্বাচনটা ভালো হয়েছে। ২০১৪, ’১৮ ও ’২৪-এর নির্বাচন খারাপ থেকে খারাপতর হতে শুরু করল। সে ক্ষেত্রে আমি বলব, আমাদের সমাজ কেন প্রতিবাদ করতে পারল না। যারা ’৭১-কে এত সম্মান, ভালোবাসা দিয়ে চেতনাকে লালন করে, তারা কী করে ভুলে গেল ’৭১ ছিল আমার ন্যায়বিচার পাওয়ার সংগ্রাম। আমার গণতন্ত্র পাওয়ার সংগ্রাম। আমার অন্যায়ের ভেতর শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম। ’৭১-এর চেতনা নিয়ে যারা কথা বলেন, তারা কীভাবে ২০১৪, ’১৫, ’১৬, ’১৭, ’১৮-তে ভুলে গেলেন একাত্তরের কথা! তারা এতটুকু সুষ্ঠু সমালোচনার কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারল না সরকারকে। সরকার নিজেকে এতই শক্তিমান মনে করা শুরু করল যে, অপব্যবহার শুরু হলো। গণতন্ত্র থাকলে জবাবদিহি থাকে। গণতন্ত্র থাকলে ন্যায্য বিরোধিতা, প্রাতিষ্ঠানিক বিরোধিতা থাকে। সব ধ্বংস হয়ে গেল। সংরক্ষিত মহিলা আসনে ৩০ জনের স্থলে ৫০ জন করা হলো। কিন্তু একটা কণ্ঠও শোনা যায়নি যে, এভাবে চলবে না। এটা কোনো গণতন্ত্র ছিল না। এর দায় দেশের সব মানুষকেও নিতে হবে। বিশেষ করে যারা কর্ণধার ছিলেন এই ১৫ বছরে। তাদের সহযোগী, সহকারী, সুবিধাভোগীর সংখ্যা কিন্তু কম নয়। নীরবতা কিন্তু অন্যায়। এই অন্যায়টা আমার দেশের আপামর জনতা করেছেন। আমি জানি, এর বিপক্ষে অনেক যুক্তি থাকবে। একজন সরকারি কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করলে বলেন, আপা আমাদের হাত-পা তো বাঁধা ছিল। হাত-পা এমনি বাঁধা ছিল, আপনার চোখের সামনে গুম করে দিচ্ছে কিছুই বলছেন না। এমন যুক্তি কি মেনে নেওয়া যায়! আমার তো মনে হয়, মেনে নেওয়া যায় না। নিশ্চয়ই সবাই এজন্য দায়ী।
কালবেলা : নির্বাচন পদ্ধতি ও নির্বাচনী ব্যবস্থার কোন কোন ক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন?
শারমীন এস মুরশিদ : অনেক আলোচনার মাধ্যমে আমরা ২০০৮-এর নির্বাচনের আগে একটি সংস্কার করেছিলাম। ভোটার তালিকা নবায়ন করার প্রস্তাবটা বেসরকারি সংগঠন ‘ব্রতী’ করেছিল। নির্বাচনের ওপর একটি ভোটার জরিপ করেছিল ‘ব্রতী’। সেই জরিপের ফল আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম। সেখানে দেখা গিয়েছিল, ভোটার তালিকার ত্রুটি প্রায় ৪৩ শতাংশ। নানা কারণে এর ত্রুটি বিশাল। এর ফলে একটা জাগরণ সৃষ্টি হয়েছিল, বিরোধী দলগুলো আন্দোলন করল, ভোটার তালিকা সংশোধন করতে হবে। অনেক টাকা খরচ করে নির্বাচন কমিশন নতুন ভোটার তালিকা তৈরি করল। এটা অনেক কষ্টসাধ্য কাজ ছিল। সিস্টেমেটিক্যালি করা হয়েছিল। সেদিন আমরা অনুভব করেছিলাম, বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের ভোটার তালিকা সেরা। সেই ভোটার তালিকা যদি নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মধ্যে থাকত, প্রতি বছর এটাকে যদি আপডেট করা হতো, তাহলে কাজটা সহজ হতো। ত্রুটিগুলো একটা সীমার মধ্যে থাকত। সেটা থাকেনি। আমাদের ভোটার তালিকা পর্যবেক্ষণ করে যদি এখন দেখি—আমি হলফ করে বলতে পারি, বিশাল ত্রুটি থাকবে। যন্ত্রগুলোকে আমরা একটা একটা করে নষ্ট করে ফেলেছি। নতুন করে বলতে হলে, আমাদের নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বতন্ত্র জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিতে হবে, স্বাধীনভাবে দাঁড় করিয়ে দিতে হবে আমাদের বিচার ব্যবস্থাও। প্রধান বিচারপতি কিছুদিন আগে বলেছেন, বিচারপতিকে প্রশাসন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে দিতে হবে। এক্সিকিউটিভ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে দিতে হবে। কেউ যেন এর ওপর আর হাত না দিতে পারে। সেরকমভাবে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে নির্বাচন কমিশন নির্ভয়ে কাজ করতে পারবে। নির্বাচন কমিশন ভয়ে কাজ করতে পারে না। এটা আমরা মানতে পারি না। নির্বাচন কমিশনে যিনি প্রধান তিনি যদি দেখেন পারছেন না, তাহলে তিনি তা ছেড়ে দেবেন। না হয় সংবিধান যে ক্ষমতা তাকে দিয়েছে সেই বলে তিনি লড়াই করবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রধান যে অর্গানগুলো—নির্বাচন কমিশন কার কাছে যাবে, যদি আমাদের বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন না হয়। তিনি বিচার পাবেন না। তার হস্তক্ষেপ তো পাবেন না। এ জায়গা থেকেই আমাদের সিস্টেমটা ভেঙে যাচ্ছিল। এই ভেঙে যাওয়ার মূল জায়গা হচ্ছে, এক্সিকিউটিভের হাতের বাইরে জুডিশিয়ালকে, নির্বাচন কমিশনকে রাখতে হবে। পার্লামেন্টকে কার্যকরী করতে হবে। পার্লামেন্টে একটি রেসপনসিবল বিরোধী দলের জায়গা নিশ্চিত করতে হবে। এটা নিশ্চিত করতে পারলে পার্লামেন্টে সরকারবিরোধী দলের অংশগ্রহণটি ‘চেক অ্যান্ড ব্যালান্স’ হবে। এটা নিয়েও আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে। ৫৩ বছর আমরা ওয়েস্ট মিনিস্টার স্টাইলের একটি গণতন্ত্র করতে চাইলাম। সম্পূর্ণ ফেল করেছি আমরা। আমরা কি আরও ৫০ বছর এই লাইনেই চলব! নাকি আমরা ভিন্ন লাইনে চিন্তা করব। তাই, শুধু নির্বাচন কমিশনকে নতুন করে রিভিউ করা নয়, আমাদের সরকারকে কী ধরনের সরকার হওয়া উচিত, তা নিয়েও ভাবার সময় এসেছে।
আমরা এখন একটা অভিনব অবস্থায় রয়েছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে একটা বিশাল ধ্বংসযজ্ঞের মধ্য দিয়ে, সংকটকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জনতার আন্দোলনের ফলে যে পটপরিবর্তন হয়েছে, তা বৈপ্লবিকই বটে। একটি সরকার ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে গেল। দেশ একটি সংকটের ভেতরে বিপ্লব, নেতৃত্বের জায়গা থেকে প্রফেসর ইউনূসকে দায়িত্ব নেওয়ার অনুরোধ করা হলো। সেই জায়গা থেকে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়।
এ দেশের জন্য সৌভাগ্য যে, প্রফেসর ইউনূসকে আমরা প্রধান হিসেবে পেয়েছি। জনগণ, তরুণরা যে কথাটা বলছে, আমাদের সংস্কার করতে হবে। মেরামত ও পুনর্গঠন করতে হবে। পুনর্গঠন করে এমন একটা জায়গায় নিতে হবে, যাতে একটি সভ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা কিছু দায়িত্বশীল মানুষকে ক্ষমতায় পেতে পারি।
কালবেলা : অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের দায় কতটা।
শারমীন এস মুরশিদ : অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের দায় শতভাগ। সরকার যদি হস্তক্ষেপ না করে, রাজনৈতিক দলগুলো অবাধে অংশগ্রহণ করতে পারবে। আমাদের মতো দেশে সরকার হচ্ছে সর্বেসর্বা। কারণ সরকার চাইলে যে কাউকে চুরমার করে দিতে পারে, আবার একটা বিদগ্ধ জায়গা থেকে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হতে দিতে পারে। সুষ্ঠু নির্বাচন হতে দেওয়ার জায়গাতে সরকারকে আমরা পেলাম না। যে শাসন করছে, দুদিন আগে বিরোধী দলে ছিল। বিরোধী দলে থাকাকালে তারা রাস্তায় চিৎকার করেছে, হরতাল করেছে, সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করেছে। সরকার সেটা উপভোগ করেছে। এটা ঘটতে দিয়েছে। কারণ তার মৌলিক অধিকার-দাবিগুলো পূরণ করেনি সরকার। তাহলে কী পাচ্ছি আমরা। রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা যুদ্ধে, সংঘর্ষে দেখছি। তারা একবিন্দু এ দেশের মানুষকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি। হয় আমি সরকারি চাপের ওপর আছি, নয় হরতালের চাপের ওপর আছি; নয়তো যে অরাজকতাগুলো ঘটে যায় আমাদের জীবনে, সেগুলোর চাপে আছি। আমাদের সাধারণ মানুষের জীবনটা কঠিন থেকে কঠিনতর হতে চলেছে। কোনো একটা দলীয় সরকার জনগণের দায়িত্ব নেয়নি।
কালবেলা : সংস্কারের জন্য আপনারা কতটা সক্ষম?
শারমীন এস মুরশিদ : আমরা আশাবাদী, নির্বাচন কমিশনের রীতিনীতিগুলোকে সংস্কার করে, রিভিউ করে একটি জায়গায় নিয়ে আসতে পারব। সরকারের ভেতর সুশাসনের কিছু ব্যবস্থা আমরা করতে পারব। স্বাধীন জুডিশিয়াল, দুদক, নির্বাচন কমিশন তৈরি করতে পারব। আগামী দিনের শাসন ব্যবস্থায় এগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাঠামো হবে। এগুলোকে স্বাধীন করে দিয়ে যেতে পারব। রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল করে যেতে হয়তো আমরা পারব না। এ ক্ষেত্রে আমরা তাদের কাছে আবেদন করতে পারব যে ঘটনাটা ঘটে গেল, তাদের জীবনে যাতে একই ঘটনা আর না ঘটে, সেই কথা মাথায় রেখে ভবিষ্যতের কথা ভেবে তারা যাতে দায়িত্বশীল ও সুচিন্তিতভাবে নিজেদের ভেতরের কাঠামোটা পরিবর্তন করে। এ দেশের মানুষকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেন তারা যে, আর কোনোদিন স্বৈরশাসনের দিকে ধাবিত হবেন না। কথা না হয় দেবেন! রাখবেন তো! এ আস্থাটা আমরা রাখতে পারব তো? আমি বিশ্বাস করতে চাই, এতজন ছেলেমেয়ে, জনগণকে আমরা হারিয়েছি। স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ প্রতিবন্ধিতার শিকার হয়েছে। তাদের একটি বড় অংশ অন্ধ, পঙ্গু। মূলধারার জীবনে তারা কীভাবে ফিরে আসবে আমি জানি না। রাজনৈতিক দলের নেতাদের মাথায় এই ছবিটা কি থাকবে? আমাদের দেশের সন্তানরা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিতে শিখে গেছে। এই রাজনৈতিক দলগুলো যদি সেই জায়গাটায় আবার বেইমানি করে, আমাদের সন্তানরা, জনগণ আর থেমে থাকবে না। তারা একটা হুঁশিয়ারি বাণী মেনে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করে নিজেদের ভেতর সংস্কার এনে যেন জনগণের সামনে দাঁড়ায়। এতকিছু হওয়ার পরও বিএনপির নামে চাঁদাবাজি হচ্ছে। জায়গা দখল হচ্ছে। এটা যদি দলের নেতারা না থামাতে পারে তাহলে বিএনপির জনপ্রিয়তা জনগণের কাছে রাখতে পারবে না!
নির্বাচন স্বচ্ছ হতে হলে সব প্রধান দলকে আসতে হবে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি সবাইকে জায়গা দিতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে আমার একটি শর্ত রয়েছে, জামায়াতকে আসতে হলে একাত্তরের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। সেই ক্ষমা চাওয়ার কাজটা জামায়াতকে করতে হবে। সেটা আজ পর্যন্ত জামায়াত করেনি। আর আওয়ামী লীগকে আসতে হলে, আগে আওয়ামী লীগের বিচার হবে। যারা খুন করেছে খুনের দায়ে, যারা দেশের টাকা লুটপাট করে আমাদের শূন্য জায়গায় দাঁড় করিয়েছে তাদের লুটপাটের দায়ে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। নেতৃস্থানে যারা থেকেছেন, যাদের দেশের মানুষ নেতা হিসেবে সম্মান দিয়েছে, তারা এবং তাদের পরিজনরা যে অন্যায় করেছে—এ দেশের জনগণ তাদের ক্ষমা করে দেবে! তাদেরও বিচারের অধীনে আনতে হবে। আওয়ামী লীগ যদি নিজেকে শুদ্ধ করে জনগণের সামনে এমন একটা ইমেজ তৈরি করতে পারে যে, না আমরা নতুন চেহারায় মানুষের সামনে আসব। আমরাও ২০০৫-এর আগে ফিরে যাব না। হয়তো জনগণ তাদের ক্ষমা করবে। রাজনৈতিক জায়গায় আমরা হয়তো বলতে পারব না যে, ব্যান্ড করে দাও। কিন্তু বিচার না হলে সে যোগ্যতা অর্জন করবে কীভাবে?
রাজনৈতিক দলগুলোকে দেশের স্বার্থে পরিবর্তিত হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের একটা জিনিস বুঝতে হবে, ২০২৪ সালে রাজনৈতিক দলের প্রতি মানুষের কোনো আস্থা নেই। তারা ডাক দিলে, তাদের সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে কয়েক লাখ মানুষ জমায়েত করতেই পারে। তার মানে এই নয়, মানুষ ভুলে যাবেন, তারা কী করেছেন। একাত্তরের চেতনা চব্বিশের চেতনায় পরিণত হয়েছে। এটাকে বড় করে দেখছি—তার একটা মাত্র কারণ হচ্ছে, আমাদের আগামী প্রজন্ম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাজনীতিবিদদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলেছে, তোমরা মিথ্যে বলেছ, তোমরা মিথ্যে কাজ করেছ, তোমরা অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছ। তোমরা আমাদের ভবিষ্যৎ আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছ। কোটা সংস্কার আন্দোলন তো মাত্র ছোট্ট একটা উদাহরণ। কোটা আন্দোলন ছিল, আমাদের মেধা থাকলেও আমরা চাকরি পাব না। ওরা ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছিল না। আমরা বড়রা যেভাবে দেশ চালিত করছিলাম, এই শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ আমাদের ব্যবস্থাপনার মধ্যে পায়নি। আমরা যে সমাজব্যবস্থা তাদের সামনে তুলে ধরেছি, ওরা তা আবর্জনা হিসেবে ফেলে দিয়েছে। আগামী দিনের রাজনৈতিক দলকে বিষয়টি মনে রাখতে হবে।
কালবেলা : ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধে নির্বাচন আসলে কতটা ভূমিকা রাখতে পারে?
শারমীন এস মুরশিদ : যে ধরনের সংসদব্যবস্থা আমরা তৈরি করেছি, এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। বিএনপি নেতাদের অনেকে বলেন, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট একটি পার্লামেন্ট করা। আপার হাউস, লোয়ার হাউস। কংগ্রেস, সিনেট আমেরিকায় যেমন আছে। আমরা প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশনের দিকে যেতে পারি কি না? আমার মনে হয়, প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশনের দিকে আমাদের যাওয়া ভালো হবে। এই আন্দোলনের ফলে কয়েক বছরে নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি হবে। এই আন্দোলন অনেকের রাজনৈতিকে আসা তৈরি করেছে। তরুণ নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক দল তৈরি হবে। পরিবেশভিত্তিক রাজনৈতিক দল তৈরি হবে। নারীভিত্তিক রাজনৈতিক দল তৈরি হবে। সম্ভাবনা অনেক কিছুই হতে পারে। এই আন্দোলন আমাদের ভাবনার জগৎটাকে উন্মোচিত করে দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রধান দুই দলের ভেতর চিরচরিত যে যুদ্ধ—এবার সেটা কিন্তু নাও হতে পারে। প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক নির্বাচনে যে যতটুকু ভোট পায়, তার ভোট অনুযায়ী তার প্রতিনিধি সংসদে আসেন। যিনি ১০টা ভোট পাবেন তিনি একজন প্রতিনিধি, ৩০টা ভোট পেলে তিনজন প্রতিনিধি সংসদে নিতে পারবেন। বর্তমান সংকট থেকে বের হয়ে আসার জন্য একটি ভালো উপায় হিসেবে অংশীদারত্বের জায়গায় নতুন একটা মাইলফলক হতে পারে। আদিবাসীদের অংশগ্রহণ চলে আসবে। যেখানে বিভিন্ন সম্প্রদায় যতটুকু ভোট পাবে, সেভাবে চলে আসবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটা নতুন যাত্রা শুরু করতে পারে। গণতন্ত্রকে আরও ভিন্নভাবে দেখা। ইউরোপীয় অনেক দেশ, নেপাল এই পদ্ধতিতে আছে। আমরাও চেষ্টা করে দেখি না।
কালবেলা : মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় মহিলা অধিদপ্তরের কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পে বই কেনা নিয়ে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের আর কোনো দুর্নীতি না হয় এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?
শারমীন এস মুরশিদ : মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে কোনো মনিটরিং মেকানিজম নেই। প্রকল্প আসে, প্রকল্প শেষ হয়ে যায়। প্রকল্পে কিছু টাকা বরাদ্দ হলো। কীভাবে খরচ হলো, প্রকল্পের কোন কোন কাজে লাগল, এর ইমপ্যাক্ট কী—এর কোনো রিপোর্ট আমি পাইনি। কোনো বেইজ লাইন রিসার্চ নেই। কোনো মান নিয়ন্ত্রণ নেই। প্রগ্রেস মনিটরিং নেই। শেষ ফলের রিপোর্ট নেই। আমি এই জায়গাটা শক্ত হাতে ধরেছি। এটা আমি পরিবর্তন করব। কাজটা শুরু করেছি। আমাদের দুরকমের মনিটরিং হবে। নিজেদের সিস্টেমের ভেতরে এবং মন্ত্রণালয়ে যে স্ট্রাকচার রয়েছে সে জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ কর্মপদ্ধতি হবে মনিটরিং এবং ইভ্যালুয়েশন (মূল্যায়ন)। এই প্রোগ্রাম সাইকেলটা অনুসরণ করবে। প্রোগ্রাম ডিজাইন করা, বাস্তবায়ন করা, মনিটরিং করা, রিভাইস করা আবার রিডিজাইন করা, শোধরানো এবং আবার প্রয়োগ করা। এই প্রক্রিয়াটা চালু করতে হবে। এটা আমার লক্ষ্য। এটা আমি প্রতিষ্ঠিত করে যেতে চাই। পরবর্তীতে এটা যাতে ধ্বংস করতে না পারে সেজন্য এটাকে মন্ত্রণালয়ের মূল কাঠামোর ভেতরে আনব। এজন্য যদি সরকার, রাষ্ট্রের অনুমোদন লাগে, তা আমি নিশ্চিত করব। কিন্তু এই মূল্যায়ন যথেষ্ট নয়। কারণ পচে যাওয়া একটা পদ্ধতির ভেতর মানুষগুলো অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে। তাদের একক মূল্যায়নে মূল্যায়িত হবে না। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবে নিরপেক্ষ মনিটরিং। এটাও হবে কাঠামোগত বাধ্যবাধকতা। কোনো রিপোর্ট ভ্যালিডেট, ক্রস চেক করতে বাইরের অডিট হতে হবে। উপদেষ্টা বা মন্ত্রীর নিজস্ব একটা টিম থাকতে হবে। এর মাধ্যমে দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনা, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটা নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে আনা এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। এ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যাই তৈরি করা হোক না কেন, ইচ্ছে সৎ না হলে ওটাও ভেঙে যায়।
কালবেলা : কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য নারীর ক্ষমতায়ন। এর মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের ক্ষমতায়ন হচ্ছে। তবে প্রকল্পের মেয়াদ প্রায় শেষপর্যায়ে। এর মেয়াদ বাড়ানোর ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে কি? এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?
শারমীন এস মুরশিদ : যেসব প্রকল্প আমাদের শিশু-কিশোর-কিশোরীদের জন্য শুভ, আমরা চাইব সেগুলো চলমান থাকুক। কিন্তু সেগুলো একটা রিভিশনের মধ্য দিয়ে হবে। আমরা চেষ্টা করব দ্রুত এগুলোকে রিভিশনের আওতায় আনার। যেখানে যেখানে নতুন করে চিন্তার জায়গা আছে, তা ভেবে দেখা। কারণ আমাকে জানতে হবে এখানে অনিয়ম, দুর্বলতা কতখানি রয়েছে। এরপর আমরা পুনর্ব্যবস্থায় যাব।
কালবেলা: সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
শারমীন এস মুরশিদ : আপনাকেও ধন্যবাদ।