সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪৫ এএম
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০৪ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

সংবিধানের অগণতান্ত্রিক ধারাসমূহের অবসান চাই

সংবিধানের অগণতান্ত্রিক ধারাসমূহের অবসান চাই

দেশের সামগ্রিক অবস্থাটা যে ভালো নেই সেটা তো বোঝাই যাচ্ছে, প্রতিনিয়ত বুঝতে পারছি, যেদিকে তাকাই দেখি ঝুঁকি রয়েছে, ওত পেতে। জরিপ বলছে, বাংলাদেশের শতকরা ৯৭ জন মানুষই এখন কোনো না কোনো প্রকার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কারণ কী? উন্নতি তো হচ্ছে; জ্ঞানে-বিজ্ঞানে, উদ্ভাবনায়, চিকিৎসায় বিশ্ব অনবরত এগোচ্ছে; আমরাও পিছিয়ে নেই। আমাদের জন্য বিদ্যুৎ ক্রমশ দুর্মূল্য হচ্ছে বটে; কিন্তু তবু তো আমরাও ডিজিটাল হয়েছি, অ্যানালগে নেই, আমাদের দেশেও রোবট এসেছে, মাশাআল্লাহ আরও আসবে, এমনকি সব রকমের ঝুঁকি উপেক্ষা করে পারমাণবিক যুগেও সসম্মানে প্রবেশ করে ফেলেছি। তাহলে অসুবিধাটা কোথায়? অসুবিধার কারণইবা কী? কারণটা না বুঝলে করণীয় কী, তা ঠিক করা যাবে না।

অনেকে আছেন যারা একেবারেই নিশ্চিত যে, কারণটা হচ্ছে আমাদের নৈতিক অবক্ষয়। তাদের ভ্রান্ত বলা যাবে না। কিন্তু নৈতিকতা জিনিসটা তো আকাশে থাকে না, মনের ভেতরেই সে থাকে। এটা যখন মেনে নেই তখন এটাও তো কোনোমতেই অস্বীকার করতে পারি না যে, মন চলে বস্তুর শাসনে। গল্প আছে দুজন ভিক্ষুক কথা বলছিল নিজেদের মধ্যে। একজন আরেকজনকে জিজ্ঞেস করেছে, তুই যে লটারির টিকিট কিনলি, টাকা পেলে কী করবি? টিকিট-কেনা ভিক্ষুকটি বলেছে, টাকা পেলে সে একটা গাড়ি কিনবে। পরের প্রশ্ন, গাড়ি দিয়ে কী করবি? ভিক্ষুক বলেছে, ‘গাড়িতে চড়ে ভিক্ষা করব, হেঁটে হেঁটে ভিক্ষা করতে ভারি কষ্ট।’ ভিক্ষুকেরও মন আছে, কিন্তু সে মন ভিক্ষাতেই আটকে গেছে, তার বাইরে যেতে পারেনি। পারবেও

না। জীবন যার অনাহারে কাটে, স্বর্গে গিয়ে সে কোন সুখের কল্পনা করবে, পোলাও-কোরমা খাওয়ার বাইরে? কিন্তু বড়লোকের স্বর্গ তো ভিন্ন প্রকারের। কোটিপতির ছেলে জন্মের পর থেকেই গাড়িতে চড়ে বেড়ায়; জন্মের আগে থেকেও চড়ে। তার স্বপ্ন তো গাড়িতে চড়ে ভিক্ষা করার নয়, সে স্বপ্ন গাড়িতে চড়ে এয়ারপোর্টে যাওয়ার। এয়ারপোর্ট হয়ে কানাডা, আমেরিকায় উড়ে যাওয়ার। ভিক্ষুক ও কোটিপতি একই দেশে জন্মগ্রহণ করেছে, একই সময়েরই মানুষ তারা; কিন্তু তারা কে কোথায়? আকাশ-পাতাল ব্যবধান।

অন্যসব দেশের মতোই বাংলাদেশও ভালো নেই। রোগে ভুগছে। তার উন্নতিটা অসুস্থ। এই উন্নতি শতকরা পাঁচজনের, পঁচানব্বইজনকে বঞ্চিত করে; কেবল বঞ্চিত নয়, শোষণ করেও। তাই যতই উন্নতি হচ্ছে ততই বৈষম্য বাড়ছে। কোটিপতিরা কোটি কোটির পতি হচ্ছে; উল্টো দিকে সংখ্যা বাড়ছে ভিক্ষুকেরও। দূরত্ব বাড়ছে মাঝখানের।

গরিবের বিপদ তো সবদিক দিয়েই, তবে বিত্তবানরাও যে নিরাপদে আছেন তা নয়। একশ দুইশ নয়, পনেরো হাজার বিজ্ঞানী স্বাক্ষর করে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন, তাতে তারা বলছেন যে, বিশ্ব এখন গভীর সংকটে পড়েছে। সংকটের লক্ষণগুলোও চিহ্নিত করেছেন। যেমন, বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব, সমুদ্রপৃষ্ঠের ফুলে-ওঠা, যাতে ধরিত্রীর নিম্নাঞ্চল ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা। পাশাপাশি আবার মহাসমুদ্রগুলোর একাংশকে মৃত্যুদশায় পাওয়া। বলেছেন, বনাঞ্চলের ধ্বংস ক্রমবর্ধমান গতিতে ঘটে চলেছে। বিষাক্ত গ্যাস নিঃসরণ তো আছেই। ধরিত্রী যে তপ্ত হচ্ছে, জলবায়ুতে যে বিরূপ পরিবর্তন ঘটছে তার দুর্ভোগ এখন বিশ্বের সব অঞ্চলের মানুষের জন্যই। সব মিলিয়ে মানুষের সভ্যতা তো বটেই, মানুষের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়েছে বলে তারা জানাচ্ছেন। ওই বিজ্ঞানীরা বিশ্ববাসীকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে যেটা তারা করেননি, করলে ভালো করতেন, সেটা হলো রোগের প্রকৃতি-নির্ধারণ। বিজ্ঞানীরা বৈজ্ঞানিকভাবেই বলতে পারতেন যে রোগটা হলো পুঁজিবাদ। বুঝতে কোনো অসুবিধা নেই তারা উদারনীতির দ্বারা শাসিত। বলেন, আবার বলেনও না।

তারা এটাও বলেননি যে বিশ্বের সব মানুষ নয়, অল্প কিছু মানুষই মানবসভ্যতার এবং ধরিত্রীর এই ঐতিহাসিক মহাবিপদের জন্য দায়ী। বলতে পারতেন যে কর্তৃত্বে-প্রতিষ্ঠিত এই বিপদসৃষ্টিকারীরা পুঁজিবাদী; তারা মুনাফা চেনে, অন্য কিছু চিনবার আগে। তাদের মুনাফালোলুপতার কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। যে পুঁজিবাদী আদর্শে তারা দীক্ষিত, তাদের কাছে মানুষ, মনুষ্যত্ব, প্রকৃতি, প্রাকৃতিক প্রাণী, কোনো কিছুরই কোনো মূল্য নেই। পুঁজিবাদী লোলুপতা সবকিছুকে গ্রাস করে ফেলছে, এমনকি মানুষকেও। পৃথিবীর পঁচানব্বইজন মানুষ এই পাঁচজন ধনীর তুলনায় দুর্বল। তারা তাই বঞ্চিত ও শোষিত হয়। ঈশপের গল্পে নেকড়েটি যেমন মেষশাবকটিকে খাবেই, কোনো যুক্তি মানবে না, পুঁজিওয়ালাদের আচরণটাও হুবহু সেই রকমেরই। নেকড়ের ক্ষুধার তবু নিবৃত্তি আছে; খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে ঘাসে-পানিতে মুখ মুছে সে ঘুমিয়ে পড়ে অথবা বনের ভেতর মনের সুখে ঘুরে বেড়ায়; পুঁজিওয়ালাদের ওই রকমের কোনো তৃপ্তি নেই, সংযম নেই, যত পায় তত খায়, খাবার কেবলি সংগ্রহ করতে থাকে এবং যতই খায় ততই তার ক্ষুধা যায় বেড়ে, কারণ ভক্ষণের প্রক্রিয়ায় তার পাকস্থলীর স্ফীতি ঘটে এবং সেটিকে খাদ্যে ভরপুর না করতে পারলে অতৃপ্তির তো অবশ্যই যন্ত্রণারও অবধি থাকে না। মুনাফালোলুপ মানুষেরা জগতের সকল প্রাণীর অধম, তথাকথিত ইতর প্রাণীরাও অত ইতর নয়।

বর্বরতার নিকৃষ্টতম উন্মোচন ঘটে ধর্ষণে। ধর্ষণ ভোগবাদিতার চরম লক্ষণ। এ হচ্ছে প্রবলের নিষ্ঠুরতম অত্যাচার, দুর্বলের ওপর। ধর্ষণ থেকে প্রাপ্ত মুনাফার জন্য কোনো বিনিয়োগের দরকার পড়ে না, এমন মুনাফা পুঁজিবাদের জগতেও দুষ্প্রাপ্য। ধর্ষণ আগেও ছিল, এখন তার প্রকৃতি ও পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গণধর্ষণ চলে এসেছে। আর সেটা যে কী আকার ও রূপ পরিগ্রহ করতে পারে তার অতিশয় উজ্জ্বল নিদর্শন পাওয়া গেছে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা বিতাড়নের ক্ষেত্রে। সেখানে গণহত্যা চলছে। রোহিঙ্গা নামের কোনো মানুষ আরাকান রাজ্যে থাকতে পারবে না, তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হবে। বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে, ক্ষেতখামার, দোকানপাট সব দখল করে নিয়েছে, পুরুষদের হত্যা করেছে এবং আর যা করেছে তা বলা যায় কল্পনাতীত। সেটি হলো পাইকারি হারে ধর্ষণ। গণধর্ষণ একাত্তর সালে বাংলাদেশে ঘটেছে। হানাদাররা করেছে ওই কাজ। কিন্তু পাকিস্তানি হানাদাররা যা করতে পারেনি, তা করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তারা অন্য দেশে গিয়ে সে দেশের মানুষের ওপর আক্রমণ চালায়নি, অত্যাচার চালিয়েছে নিজের দেশের মানুষের ওপরই। আরাকানে রোহিঙ্গারা ভিন্ন দেশের মানুষ নয়, তারা ওই দেশেরই মানুষ। শত শত বছর ধরে রোহিঙ্গারা ওইখানে বসবাস করে আসছে। আরকানের বৌদ্ধ রাজসভায় এক সময় বাংলাভাষী গুণী মুসলমানদের স্থান ছিল, কবি আলাওল ওই রাজসভায় বসেই তার ‘পদ্মাবতী’ কাব্য রচনা করেছিলেন। মিয়ানমারের সেনারা স্বদেশবাসী একটি জনগোষ্ঠীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে, নেকড়ের চেয়েও হিংস্ররূপে এবং বন্দুকের জোরে নির্বিচারে মেয়েদের ধর্ষণ করেছে। শুধু তাই নয়, স্থানীয় অ-রোহিঙ্গাদেরও তারা লেলিয়ে দিয়েছে ওই জঘন্য কাজে। এমনটা পাকিস্তানি হানাদারদের পক্ষে করা সম্ভব ছিল না। যে বৌদ্ধরা অহিংসার জন্য জগদ্বিখ্যাত, তাদের একাংশ দেখা গেল বন্দুকধারীদের উসকানিতে উন্মাদের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছে, যোগ দিয়েছে লুণ্ঠনে ও ধর্ষণে মহোৎসাহে।

নৃবিজ্ঞান বলছে, আমাদের এই অঞ্চলের অনেক মুসলমানের পূর্বপুরুষই এক সময়ে বৌদ্ধ ছিল, ব্রাহ্মণদের অত্যাচারে তারা ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হয়েছে। বৌদ্ধরা মাথায় চুল রাখত না, তাদের ভেতর থেকে মুসলমানরা বের হয়েছে এ সুবাদেই বাংলার ব্রাহ্মণরা মুসলমানদের নেড়ে বলে ডাকত, এমন ধারণা প্রচলিত আছে। মিয়ানমারে গণহত্যার ব্যাপারটা মোটেই সাম্প্রদায়িক নয়। রোহিঙ্গারা সবাই যে মুসলমান এমনও নয়, তাদের ভেতর অ-মুসলিমও আছে; গণহত্যায় নিয়োজিত সামরিক কর্তৃপক্ষও এ কথা বলেনি যে তারা মুসলমান মারছে, বলেছে তারা অস্থানীয়দের দমন করছে, কারণ ওই অস্থানীয়রা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়েছে। নির্ভুলরূপে নেকড়ের যুক্তি মেষশাবক ভক্ষণ করার জন্য। রোহিঙ্গারা বিদ্রোহ করেনি; এমনকি স্বায়ত্তশাসনও চায়নি। তেমন শক্তি তাদের নেই। তারা একটি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী, সর্বসাকল্যে লাখ বিশেক হবে। তারা অকল্পনীয় বঞ্চনার শিকার। নাগরিক অধিকার নেই, লেখাপড়ার সুযোগ নেই, চলাফেরার স্বাধীনতা নেই, তাদের এক অংশকে আগেই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাকি অংশকেও পাঠানো হয়েছে। রোহিঙ্গাদের কোনো মুখপাত্রও নেই, কোনো প্রকাশনা পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের কথা তারা নিজেরা বলবে এমন শক্তি তাদের নেই।

একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদাররা খুশি হতো বাংলাদেশকে বাঙালিশূন্য করে যদি শূন্য ভূমির দখল পেত। সেটা সম্ভব ছিল না। বাঙালিদের সংখ্যা ছিল সাড়ে সাত কোটি, তাদের রাজনৈতিক সংগঠন ছিল, মুখপাত্র ছিল এবং তারা নিজেরা যুদ্ধে নেমেছিল আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই। জানা ছিল যে, শরণার্থী হিসেবে যারা সীমান্ত অতিক্রম করে গেছে তারা অবশ্যই ফিরে আসবে। রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে এই উপাদানগুলোর কোনোটিই নেই। সেটা তারা নিজেরা জানে; তাদের চেয়েও ভালো করে জানে মিয়ানমারের সামরিক সন্ত্রাসীরা। আরাকান রাজ্যে তারা রোহিঙ্গাদের নাম নিশানা মুছে ফেলার কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমেছে। প্রকল্পটি নির্ভেজালরূপে পুঁজিবাদী। রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে তাদের ঘরবাড়ি, ক্ষেতখামার, দোকানপাট, ব্যবসা-বাণিজ্য যা কিছু আছে সব দখল করবে। মাটির নিচে ও বনাঞ্চলে যে সম্পদ রয়েছে, তা হস্তগত করবে। ফাঁকা এলাকায় চমৎকার শিল্প এলাকা গড়ে তোলা যাবে। বিনিয়োগ আসবে চীন থেকে, ভারতীয় পুঁজিওয়ালারাও কম উদগ্রীব নয়। কাছেই রয়েছে সমুদ্র, তার সঙ্গে যুক্ত করে দিয়ে বাণিজ্যের সুবিধা হবে। আর কী চাই? স্বভাবই তারা অত্যন্ত উদ্দীপিত। বিশ্বের নানা জায়গা থেকে মৃদু কণ্ঠে কিছু প্রতিবাদ উঠেছে। একটা সময় ছিল যখন এরকমের ঘটনা ঘটলে সমাজতান্ত্রিক রাশিয়া ও চীন জোর গলায় বিরোধিতা করত; আক্রান্তদের পাশে আছে বলে তারা জানাত, জনমত সৃষ্টি করত, ফলে আক্রমণকারীরা কিছুটা সংযত হতো। কিন্তু এখন সেসব নেই। রাশিয়া তো পুঁজিবাদী হয়ে গেছেই, চীনও ওই পথ ধরে বেপরোয়া গতিতেই ছুটে চলেছে। এক সময়ে চীন রাশিয়াকে ‘নামে সমাজতন্ত্রী কাজে সাম্রাজ্যবাদী’ বলে গলা ফাটিয়ে গালাগাল করত, এখন সে নিজেই রাশিয়ার অধঃপতিত ভূমিকায় নেমে পড়েছে। একাত্তরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে চীন বলেছিল পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার; টের পাওয়া যাচ্ছিল যে তার রকমসকম সন্দেহজনক; জাতীয়তাবাদী পথে পুঁজিবাদী হওয়ার তালে আছে, যেজন্য গণহত্যাটা দেখেও সে দেখেনি। এবার একেবারে নাকের ডগায় গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে, তবু তার ওই একই আওয়াজ। জাতিসংঘের মহলগুলো থেকে নিন্দার যেসব প্রস্তাব উঠছিল, চীন সেগুলোর প্রত্যেকটিতে ভয়ংকরভাবে বাধা দিয়েছে। কারণ মুনাফার সুঘ্রাণ পেয়ে গেছে। সুযোগ-সুবিধা আগেও পাচ্ছিল, এখন গণহত্যায় সমর্থন দিচ্ছে যাতে করে বিপদের বন্ধু হিসেবে আরও সুবিধা আদায় করে নিতে পারে। চীনের এই পুঁজিবাদী অধঃপতন সাবেকি পুঁজিবাদীদের লজ্জায় ফেলে দেবে। প্রবাদে যে কথিত আছে—সদ্য-ধর্মান্তরিতরা সাবেকি ধার্মিকদের চেয়ে অধিক তেজি হয়, সে কথাটা মিথ্যা বলার সাধ্য কোথায়?

পুঁজিবাদের নির্লজ্জ বর্বরতার প্রমাণ এখন যত্রতত্র পাওয়া যাচ্ছে। মিয়ানমারে যেমন প্যালেস্টাইনেও তেমনি। ইহুদিরা একদা নাৎসিদের হাতে ভয়াবহ গণহত্যার এক কর্মসূচির শিকার হয়েছিল। স্মরণ করলে গা শিউরে ওঠে। পুঁজিবাদী বিশ্ব ইচ্ছা করলে ইহুদিদের নিজেদের বিস্তৃত সাম্রাজ্যের যে কোনো একটা এলাকায় পুনর্বাসিত করতে পারত। ইহুদিরা কোনো এক জায়গায় ছিল না, ছড়িয়ে-ছিটিয়েই ছিল। কিন্তু পুঁজিবাদী বিশ্ব ঠিক করল তাদের এনে রাখবে আরবভূমিতে। সেজন্য প্যালেস্টাইনের নিরীহ মানুষরা উৎখাত হলো এবং ইসরায়েল সেখানে আস্ত একটি রাষ্ট্র কায়েম করে ফেলল। প্যালেস্টাইনবাসী কোনো অপরাধ করেনি, কিন্তু তারা যে তাদের ভূমিতে আছে, সেটাই হয়ে দাঁড়াল তাদের জন্য মস্ত বড় অপরাধ; অবিকল সেই অপরাধ যা মেষশাবকটি করেছিল। অভাগা প্যালেস্টাইনবাসী দখলদার ইসরায়েলকে প্রথমটায় রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করতে চায়নি, না চাওয়াটা ছিল খুবই স্বাভাবিক। তারা যুদ্ধ করেছে। কিন্তু পুঁজিবাদীরা সবাই ইসরায়েলের পক্ষে; বেচারা প্যালেস্টাইনবাসী পারবে কেন? নিরুপায় হয়ে ইসরাইলিকে তারা মেনে নিয়েছে; বলেছে, ঠিক আছে, তোমরাও থাকো, আমরাও থাকি। দুটো রাষ্ট্রই থাক। মনের ভেতরে যাই থাকুক না কেন, আমেরিকাও মুখে ওই ব্যবস্থাকেই সমাধান বলে জানিয়েছিল; কিন্তু ইসরায়েল তা মানবে কেন? সে কম কিসে? পুঁজিবাদী তো! সবসময়ই তার ইচ্ছা ছিল একচ্ছত্র রাষ্ট্র কায়েম করা, প্রয়োজনে প্যালেস্টাইনীয়দের নিজ ভূমিতে দাসে পরিণত করা। সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বকে সে পেয়ে গেছে বন্ধু হিসেবে। বন্ধু বলেছেন তেলআবিব নয়, জেরুজালেমই হবে ইসরায়েলের রাজধানী। অন্য কোনো আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতো এত দূর অগ্রসর হননি। পুঁজিবাদ এগোচ্ছে বৈকি। মধ্যপ্রাচ্য কতটা উত্তপ্ত হবে, তার তাপে মানুষের কতটা ক্ষতি হবে, বর্ণবাদ ও ধর্মীয় মৌলবাদ কতটা উৎসাহ পাবে পুঁজিবাদের জন্য এসব কোনো বিবেচনার বিষয়ই নয়। ওদিকে পুঁজিবাদী ইসরায়েলিরা যে কতটুকু পূতপবিত্র বোঝা যায় তাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আচরণ থেকে। দুর্নীতির দায়ে তার বিচার হচ্ছে, তার দেশীয় আদালতেই। অথচ তারই নেতৃত্বে গাজাতে চলছে গণহত্যা।

ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন এলেন তখন মনে হয়েছিল নতুন পাগলের আগমন; পরে বোঝা গেল পাগল বটে, তবে সেয়ানা। জাত ব্যবসায়ী, কোথা থেকে কতটা মুনাফা আসবে ঠিকই বোঝেন। মধ্যপ্রাচ্যে জর্জ বুশের তৎপরতা দেখে লোকে বলাবলি করেছিল যে হিটলার ফিরে এসেছে, নতুন বেশে; তবে শেষ পর্যন্ত এটাও প্রমাণিত হয়েছিল যে, ইতিহাসে এক বীর দুবার আসে না, দ্বিতীয়বার আসতে চাইলে তাকে আসতে হয় ভাঁড় হিসেবে।

পুঁজিবাদের এই পতনকালে দেখা যাচ্ছে, তাদের এ নতুন কর্তা আগেরজনদের নানাভাবে লজ্জায় ফেলে দিয়েছেন। বুশ অধোবদন হয়েছেন ট্রাম্পের লম্ফঝম্প হম্বিতম্বির কাছে। তিনিও বলছেন, না, বাড়াবাড়ি হচ্ছে। হোয়াইট হাউসে ঢুকেই ট্রাম্প ঘোষণা দিয়ে ফেলেছিলেন মুসলমানদের ওপর চোখ রাখতে হবে এবং তাদের সহজে আমেরিকায় ঢুকতে দেওয়া যাবে না। ঘোষণা শেষ করেই প্রথম যে দেশে তিনি ছুটেছিলেন, সেটি হচ্ছে মুসলমানদের খাসভূমি বলে চিহ্নিত সৌদি আরব। সেখানে গিয়ে বাদশাহর সঙ্গে কোলাকুলি করতে তার আটকাল না। আসল উদ্দেশ্য ছিল অস্ত্র বিক্রি। কোলাকুলির ফাঁকে অস্ত্র বিক্রির ব্যাপারে এমন বড় একটা চুক্তি সই করিয়ে নিলেন, যেমনটা নাকি আগে কখনো সই হয়নি। বাদশাহ ভাবলেন মস্ত উপকার হলো। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবেন। কার বিরুদ্ধে ব্যবহার করবেন? শত্রু কে? বিধর্মী, মুসলমান-বিদ্বেষী ইসরায়েল কি শত্রু? বালাই ষাট। ইসরায়েল তো খাঁটি দোস্ত। খাঁটি পুঁজিবাদী। শত্রু হচ্ছে ইরান; বশ্যতা মানে না, বেয়াদবি করে! বুশ, ট্রাম্প, বাইডেন মুখোশ তাদের ভিন্ন; কিন্তু ভেতরের চেহারা অবিকল, উনিশ-বিশ।

ট্রাম্পের সৌদি আরব সফর সফল, সম্পূর্ণ সফল হয়েছিল। মুনাফার গন্ধ পেয়েছিলেন, মুনাফার ব্যবস্থা হয়েছে। আমেরিকার অস্ত্র ব্যবসায়ীরা ভালো ব্যবসা পাবে। এটা এমন এক ব্যবসা, যাতে মুনাফার কোনো অবধি নেই। টাকা আসবে, অস্ত্র কারখানায় লোকে কাজ পাবে। বুশ যে ইরাক দখল করেছিলেন, তার পেছনে একাধিক অনুপ্রেরণা ক্রিয়াশীল ছিল। ইরাকের তেলের ওপর কর্তৃত্ব অর্জন, মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে অবস্থান শক্ত করা; নতুন ঘাঁটি স্থাপন, এসব ছিল; কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রেরণাটা এসেছিল ব্যবসার লোভ থেকেই। যুদ্ধ বাধাতে পারলে অস্ত্র বিক্রি হবে, তাতে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। আবার ইরাককে যদি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা যায়, তাহলে পুনর্নির্মাণ কাজও শুরু করতে হবে। বলা বাহুল্য, ইরাকের টাকাতেই এবং সে কাজ আমেরিকানরাই করবে, তাদের শর্তে। এমনকি জাদুঘরে রাখা সভ্যতার নিদর্শনগুলোই-বা কম কিসে, বিক্রি হবে দু-পয়সা আসবে। যা যা পাওয়া গেছে সবই হাতিয়ে নেবে ঠিক করেছিল। নিয়েছেও।

বুশ আওয়াজ দিয়েছিলেন যে, সাদ্দাম হোসেনের হাতে ওয়েপনস অব মাস ডেস্ট্রাকশন আছে; তাই অবিলম্বে ওই হাত ভেঙে দেওয়া চাই, তা না হলে সে মানুষ মেরে শেষ করবে। বুশ বিলক্ষণ জানতেন যে ওরকম অস্ত্রশস্ত্র ইরাকের কাছে মোটেই ছিল না। অজুহাত তো একটা চাই, তাই দাঁড় করানো। মনে নেই, গল্পের নেকড়ে মেষশাবককে কী বলেছিল? বলেছিল, ‘তুই আমার খাবার পানি ঘোলা করছিস কেন?’ মেষশাবক বলেছিল, ‘আমি তো ঝর্ণার নিচের দিকে আছি, ওপরের পানি ঘোলা করব কী করে?’ নেকড়ে বলেছিল, ‘গত বছর তুই আমার বাবাকে অপমান করেছিলি।’ মেষশাবকটি জানিয়েছিল, তখন তার জন্মই হয়নি। নেকড়ে বলেছিল, ‘ভারি তর্ক শিখেছিস। ওতে কাজ হবে না। আমি তোকে খাব।’ বুশেরও ছিল একই কথা, মানববিধ্বংসী অস্ত্র নেই বলছিস। বললেই হলো? আমার গোয়েন্দারা বলছে লুকিয়ে রেখেছিস, আমার বিশ্বস্ত বন্ধু প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারও অতি গোপন সূত্রে খবর পেয়েছেন, অস্ত্র আছে; এসব নিয়ে এত তর্ক কীসের? এরপর গল্পের নেকড়েটির যা করার কথা বাস্তবের বুশ সাহেব হুবহু তাই করেছেন। গল্পের নেকড়েটি একাই ছিল, সঙ্গীর দরকার পড়েনি, ইতিহাসে বুশের সাঙ্গোপাঙ্গরা ছিলেন, তারা আহ্লাদিত হয়েছেন, সবচেয়ে নিকটে ছিলেন যিনি, তিনি তো মনে হয় আঙুলই নেড়েছেন। ইতিহাস এমনটাই বলছে।

ইতিহাস অবশ্য এও বলে যে, ওই তৎপরতার পরিণতিতে একটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ জনপদ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে, হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, লাখ লাখ মানুষ উৎপাটিত হয়ে উদ্বাস্তুদের দলে নাম লিখিয়েছে। মুনাফাখোরদের কোনো ক্ষতি হয়নি, লাভ ছাড়া। সাদ্দাম হোসেনকে হত্যা করতে গিয়ে যে শিয়া-সুন্নি-কুর্দি বিরোধকে চাঙ্গা করা হয়েছে, ইসলামিক স্টেট বাহিনী তৈরি করা হয়েছিল, তাতেও মুনাফা আছে, বিরোধে-লিপ্ত সবপক্ষের কাছেই অস্ত্র বিক্রি করা গেছে। বাজার খুঁজতে হয়নি, বাজার পড়ি-তো-মরি দৌড়ে এসে হাজির হয়েছে।

পুঁজিবাদের মুনাফালিপ্সায় দু-দুটি বিশ্বযুদ্ধ হয়েছে। ভাগবাটোয়ারার টানাহেঁচড়ায় পুঁজিওয়ালারাই বাধিয়েছে যুদ্ধ। মারা পড়েছে নিরীহ মানুষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে পুঁজিবাদী হিসেবে আমেরিকার আবির্ভাব। জয় দেখাতে পারেনি, তবে ভয় দেখাতে ছাড়েনি। যুদ্ধ যখন শেষ হয় গেছে, জার্মানরা পর্যুদস্ত, জাপানিরা বিপর্যস্ত, সেই সময়ে আমেরিকা নিজের সদ্য-উদ্ভাবিত আণবিক বোমা ফেলল জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে গিয়ে। লাখ লাখ মানুষ মারা গেল, জীবিতরা পঙ্গু হয়ে পড়ল, ধ্বংস হলো প্রকৃতি, নগর ও পরিবেশ। বর্বরতা জাপানি সৈন্যরাও অবশ্য কম করেনি। কিন্তু আমেরিকার রাষ্ট্রশাসকদের কাছে তা হার মেনেছে। আকাশ পথে উড়ে এসে নিরপরাধ মানুষ হত্যার অমন কাজ জাপানিরা করতে পারেনি। কেন ফেলল ওই বোমা? ভুল করে? মোটেই না, ফেলল স্থির সিদ্ধান্ত নিয়েই। সিদ্ধান্তের পেছনে অনুপ্রেরণা ছিল। প্রথম অনুপ্রেরণা ভয় দেখানোর। জাপান পরাজিত হয়েছে, কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন তো আছে। ভয় দেখানো চাই সোভিয়েত ইউনিয়ন ও তার মিত্র সমাজতন্ত্রীদের। আমেরিকা অস্থির; নেতৃত্ব কেড়ে নেবে পুঁজিবাদী বিশ্বের; তার প্রতি চ্যালেঞ্জ অন্য কোথাও থেকে আসবে না, আসবে শুধু সমাজতন্ত্রী সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে, যে নাকি বুকেপিঠে লড়াই করে হিটলারকে রুখে দিয়েছে, মহাপ্রলয় থেকে রক্ষা করেছে বিশ্বকে। জাপানিদের মেরে আমেরিকা ভয় দেখাল সমাজতন্ত্রীদের, বলে দিল আমার হাতে যে অস্ত্র আছে, অন্য কারও হাতে তা নেই। বোমা ফেলার দ্বিতীয় অনুপ্রেরণা, নতুন মারণাস্ত্রটির ক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখা। সেটাও দরকার ছিল; শত্রুকে ভয় পাইয়ে দেওয়ার জন্য যেমন, তেমনি নিজের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করার জন্যও বৈকি। সাফল্যের সঙ্গে বোমা ফাটিয়ে আমেরিকা জানিয়ে দিল পুরোনো পুঁজিবাদী জার্মানি ও জাপানকে হটিয়ে দিয়ে এসেছে এখন নতুন এই পুঁজিবাদী, যে কি না অনেক বেশি সুসজ্জিত মারণাস্ত্রে। পুঁজিবাদের জন্য ভয়ের কিছু নেই, সমাজতন্ত্র তাকে কাবু করতে পারবে না। কাজটা করতে গিয়ে অসংখ্য নিরীহ নিরপরাধ মানুষের যে প্রাণ পেল, ক্ষতি হলো অপরিমেয়, তাতে কী আসে যায়?

নিজেদের কথায় ফিরে আসি, কোটা আন্দোলন শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। দাবির কাছে সরকার কোটা বাতিল করে। পুনরায় চালু হওয়ার পর আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। তাতে সরকারি ঠেঙারে বাহিনী ও পুলিশি বর্বরতায় আন্দোলন রূপ পরিগ্রহ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে। সর্বস্তরের মানুষ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ালে নির্মম হত্যাযজ্ঞে কুলাতে না পেরে সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে ওঠে। কিন্তু সরকারের বিদায়েই যে সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেল, তা কিন্তু নয়। সমস্যা প্রতিনিয়ত, মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। যে সরকারের দাবি পূরণের কোনো ক্ষমতা কার্যত নেই। চারদিকে দাবি আদায়ের নানা কর্মসূচি দেখা যাচ্ছে। সরকারের ভূমিকা যথাযথ হচ্ছে বলে মনে করার কারণ নেই।

ওদিকে সুযোগের মওকায় নতুন আওয়াজ তুলেছে একাত্তরের পরাজিত শক্তি। জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা এবং সংবিধান নিয়ে। এতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও তপ্ত যে হবে তার আভাস এখনই পাওয়া যাচ্ছে। কোন অধিকারে জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা বদলের দাবি তোলে? তাদের সেই নৈতিক অধিকার তো নেই। তবে তাদের পেছনে কার বা কাদের ইন্ধন ক্রিয়াশীল? সেটাও ভাবতে হবে। আমরাও সংবিধানের অগণতান্ত্রিক ও সাম্প্রদায়িক ধারাসমূহের অবসান চাই। দেশের স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরও আক্ষেপে, হতাশায় বলতে হয় দেশ স্বাধীন হলেও, স্বাধীন দেশে গণতন্ত্র আলোর মুখ দেখল না। সামনে দেখবে কি না, সেটা নিকট ভবিষ্যৎই বলে দেবে।

লেখক: ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঢাকার যেসব এলাকায় আজ মার্কেট বন্ধ

আজকের নামাজের সময়সূচি

প্রথম দিনে উইন্ডিজ তুলল ২৫০ রান

গাঁজা-জাল নোটসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ

উইন্ডিজের প্রতিরোধ ভেঙে বাংলাদেশের স্বস্তি

টাইম ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস / ট্রাম্প ব্যবসায়ী, আমরাও একজন ব্যবসায়িক অংশীদার চাই

২০২৪ সালের হাইয়েস্ট কালেকশন দরদের : শাকিব 

নায়িকা পরীমনির প্রথম স্বামী নিহত

রাজনীতিতে আ.লীগের পুনর্বাসন ঠেকাতে হবে: নুর

১০

নির্বাচন যত দ্রুত হবে, সমস্যা তত কমে আসবে : মির্জা ফখরুল

১১

খাসজমির দখল নিয়ে সংঘর্ষে দুজন নিহত

১২

মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ক্রীড়াঙ্গন অন্যতম একটি মাধ্যম : আমিনুল হক 

১৩

তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল

১৪

আহত রানার পাশে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’

১৫

ফেসবুকে দাবি ‘মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ একই ব্যক্তি’, যা বলছে ফ্যাক্ট চেক

১৬

একদিকে প্রশান্তি, অশান্তিও বিরাজ করছে: শামা ওবায়েদ

১৭

চোর সন্দেহে খুঁটিতে বেঁধে যুবককে নির্যাতন

১৮

র‍্যানকন মটরসের সঙ্গে ক্র্যাক প্লাটুন চার্জিং সলুশনের চুক্তি

১৯

জনকল্যাণে কাজ করাই বিএনপির মূল লক্ষ্য : নয়ন

২০
X