কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পদ্মাপাড়ে গাড়ির ভেতর থেকে সম্রাটের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আবদুল মমিনের স্ত্রী সীমা খাতুনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল রোববার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুমী খাতুনকে আদালতে সোপর্দ করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঈশ্বরদী থানার এসআই তহিদ হোসেন। পরে শুনানি শেষে পাবনা আমলি আদালত-২-এর বিচারক শামসুজ্জামান দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ঈশ্বরদী থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, গত শনিবার রাতে সম্রাটের বাবা আবু বক্কার মামলাটি করেন। অর্থ আত্মসাতের জন্য সম্রাটকে হত্যা করা হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন তিনি। মামলায় সম্রাটের বন্ধু আবদুল মমিন ও তার স্ত্রী সীমা খাতুনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও তিন থেকে চারজনকে আসামি করা হয়েছে। সীমাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, তবে প্রধান আসামি আবদুল মমিন এখনো পলাতক।
ওসি আরও জানান, আটক সীমার দেওয়া তথ্য, মামলার এজাহারসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। মামলার অন্য আসামি আবদুল মমিনকে ধরার চেষ্টা চলছে।
নিহত সম্রাটের বাবা আবু বক্কারের দাবি, মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে বন্ধু মমিন ও তার স্ত্রী সীমা কৌশলে সম্রাটকে হত্যা করেছে। তাদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে।
গত শনিবার সকালে কুমারখালীর চরসাদিপুর ইউনিয়নের সাদিপুর খেয়াঘাট এলাকার পদ্মাপাড়ে একটি গাড়ির ভেতর থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে এর ভেতর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় সম্রাটের লাশ উদ্ধার করে। সম্রাট রূপপুর প্রকল্পে ‘নিকিমত’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। ওই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউরি ফেদারোপের ব্যবহৃত গাড়িটি চালাতেন তিনি।
এ ঘটনার পর পুলিশের হাতে আটক সীমা খাতুন জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে সম্রাট তার বাসায় গিয়ে জানায়, তার মাথা ধরেছে। এ কথা বলেই তিনি বিছানায় শুয়ে পড়েন। স্বামী মমিন ওষুধ আনতে গেলে সম্রাট তার শরীরে হাত দেন। ক্ষুব্ধ হয়ে হাতুড়ি দিয়ে সম্রাটের মাথায় ও শরীরে আঘাত করে সীমা। এতেই সম্রাটের মৃত্যু হয়। পরে মমিন বাসায় ফিরলে লাশটি বস্তায় ভরে ওই গাড়িতে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে সীমা ও মমিন। পরে মমিন তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে শিলাইদহে গাড়িটি রেখে সটকে পড়ে।
এদিকে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, গত বুধবার থেকে খেয়াঘাট এলাকায় গাড়িটি পড়ে ছিল। তারা প্রথমে মনে করেছেন, গাড়ি রেখে পদ্মা পার হয়ে কেউ কাজে গেছেন। শনিবার সকালে গাড়ির ভেতর থেকে দুর্গন্ধ বের হতে থাকলে তারা পুলিশে খবর দেন। আর কুমারখালী থানার ওসি মহসীন হোসাইন বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে এক পুলিশ কর্মকর্তাও গাড়িটি দেখেছেন। তবে কেউ বেড়াতে এসেছেন ভেবে দেখে চলে যান।