সদ্য ঘোষিত বগুড়ার শেরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করার। অন্যদিকে হত্যা মামলায় জেলও খেটেছেন সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া কমিটির অনেকেই বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সন্তান বলেও অভিযোগ দলটির নেতাকর্মীদের।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের স্থানীয় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ কর্মিসভা ডেকে শেরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের ১৩ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। প্রকাশ্যে নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে মাইকে এ ঘোষণা দেন বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা ও সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু। জানা গেছে, নতুন কমিটির সভাপতি গালিব সরকার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের গ্রাফিক
আর্টস ইনস্টিটিউটের ছাত্র থাকাকালীন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন। পরে তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করা হয়। সে মামলায় গ্রেপ্তারও হন তিনি। এ ছাড়া গালিবের বাবা আব্দুল বাসেত স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ফেসবুকে দেওয়া তার আপত্তিকর মন্তব্যের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোরাফেরা করছে। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ড্যানিও হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। ২০১৯ সালে জেলার শাজাহানপুর উপজেলার রাজারামপুর গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে খুন হন আলমগীর হোসেন। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মনিরুজ্জামান শাজাহানপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সে মামলার অন্যতম আসামি ড্যানি। ওই মামলায় জেলও খেটেছেন তিনি। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন।
পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ আহম্মেদ সুমন বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির উপজেলায় ছাত্রলীগের এমন করুণ পরিস্থিতি মেনে নিতে পারছি না। এই পকেট কমিটি ছাত্রলীগের জন্য লজ্জার। শেরপুরের ছাত্রলীগকে ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে। তাই এই নোংরা রাজনীতি।
উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মিলন হাসান, সুঘাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরীফসহ একাধিক ছাত্রলীগ নেতা ঘোষিত কমিটিকে ভুয়া ও অবৈধ দাবি করে বলেন, কাউকে না জানিয়ে গোপনে ওই পকেট কমিটি করা হয়। যারা সভাপতি-সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন, তারা ছাত্রলীগের রাজনীতি করেন না; বরং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করেছেন। তারা হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি।
তবে অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গালিব সরকার ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ড্যানি। তারা বলেন, তাদের নেতৃত্বে গঠিত উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় ফেসবুকসহ সর্বত্র মিথ্যাচার চালানো হচ্ছে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা বলেন, শেরপুর ছাত্রলীগের কমিটি নিয়মতান্ত্রিকভাবেই হয়েছে।