
চীনের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ভালো হলেও দেশটির ঋণের ফাঁদে পড়বে না বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থা থেকে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ঋণ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশভিত্তিক বিবেচনায় জাপান থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ নেওয়া হয়। গতকাল শনিবার বার্তাসংস্থা সিএনএনের বিজনেস বিভাগের সম্পাদক রিচার্ড কোয়েস্টের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী বিজনেস সামিটের প্রথম দিনে ব্রিটিশ এই সাংবাদিকের মুখোমুখি হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভুয়া ভোট প্রতিরোধে সরকার ডিজিটাল পরিচয়পত্র ও স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স চালু করেছে। সবার জন্য নির্বাচনের অংশগ্রহণের পরিবেশ রয়েছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে সরকারবিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসতেও প্রস্তুত আছে।
দীর্ঘ সময় এক দলের ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশের মানুষ নতুন কিছু চায় কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ১৪ বছর টানা ক্ষমতায় থাকলেও দেশের জনগণকে নতুন নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের পর এবারের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় দেশ। যখনই মানবতার প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশ নির্যাতিতদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। অন্যায্য কোনো জোট গঠনে বাংলাদেশ আগ্রহী নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা নেই। তবে যুদ্ধের কারণে অস্থির বিশ্ববাজারের ফল ভোগ করতে হচ্ছে আমাদের। আমরা সংকট সামাল দিতে সক্ষম।
সৌদি বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক: বিজনেস সামিটের সাইডলাইনে সফররত সৌদি বাণিজ্যমন্ত্রী ড. মাজেদ বিন আবদুল্লাহ আল কাসাবির সঙ্গে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন।
বাংলাদেশে আরও সৌদি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি দেশটির মন্ত্রীকে বলেন, আমাদের অত্যন্ত স্থিতিশীল সরকার রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার কর্মসংস্থান, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এ সময় তিনি ১৭ কোটি মানুষের বড় বাজার বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক শ্রমিকের সহজলভ্যতার কথাও তুলে ধরেন।
ড. মোমেন জানান, সৌদি আরবের জন্য চট্টগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক জোনের প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। দেশটি বাংলাদেশের জ্বালানি, বন্দর, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে চায়। এ ছাড়া সৌদি সেদেশে বাংলাদেশের সার উৎপাদন করতে চায়। কারণ, সেখানে কম দামে উৎপাদনের সুবিধা রয়েছে। তবে এজন্য বাংলাদেশও সুবিধা পাবে বলে জানিয়েছেন সৌদি মন্ত্রী।