কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
আপডেট : ১৯ জুলাই ২০২৩, ০৮:২৫ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

হ‍ুমায়ূনবিহীন এগারোটি বছর

হুমায়ুন আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত
হুমায়ুন আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত

আজ বাংলা ভাষার জনপ্রিয় লেখক হ‍ুমায়ূন আহমেদের প্রয়াণ দিবস। ১১ বছর আগের এই দিনে তিনি লাখো পাঠক-ভক্ত-অনুরাগীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, চিরনিদ্রায় শায়িত হন তার প্রাণের নুহাশপল্লীর প্রিয় লিচুতলায়।

সৃজনশীলতায় হ‍ুমায়ূন আহমেদের সক্রিয়তা বহুধারায় প্রবাহিত হয়েছিল। তিনি একাধারে ছিলেন ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম একজন তিনি—তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও জনপ্রিয় লেখক বলে গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। অন্যদিকে তিনি আধুনিক বাংলা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিরও পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে তার সুনাম কিংবদন্তিতুল্য। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। তার বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত। মিসির আলি এবং হিমু তার সৃষ্ট অন্যতম দুটি জনপ্রিয় চরিত্র। কী লেখায়, কী নাটকে—জীবনের খুবই কঠিন রহস্যময় ব্যাপারকেও সহজভাবে নেওয়ার একটা দৃষ্টিভঙ্গি হ‍ুমায়ূন তার লেখায় নানাভাবে প্রয়োগ করেছিলেন, যা কয়েক দশক ধরে বাঙালি পাঠক ও দর্শক হৃদয়ে নিদারুণ এক উন্মাদনার জোয়ার তুলতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশের সাহিত্যে হ‍ুমায়ূন আহমেদের অবস্থান সম্পর্কে বলতে গিয়ে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

বলেন, ‘বাংলাদেশের সাহিত্য জগতে হুমায়ূন এমন একটা সময়ে আবির্ভূত হয়েছিল, যখন বাংলাদেশ একটি নতুন রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। চারদিকে কেমন একটা শূন্যতা। কথাসাহিত্যেও সেই শূন্যতা বিরাজ করছিল। সেই সময়ে আমাদের যারা প্রতিষ্ঠিত কথাসাহিত্যিক ছিলেন, তারাও প্রবীণ হয়ে গেছেন বা কেউ কেউ আর লিখছেন না, কেউ অল্প লেখেন। এমন একটা সময়ে শূন্য জায়গাটিতে এমনই একজন লেখকের প্রয়োজন ছিল।’

সদ্যস্বাধীন দেশে নতুন যে প্রজন্ম এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণি বিকশিত হচ্ছিল, তারা তাকে এক বাক্যে গ্রহণ করেছে। হুমায়ূন আহমেদ তাদের প্রয়োজনীয়তা আর আগ্রহকে নিজের অদ্ভুত এক জাদুময়তার মাধ্যমে পূরণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নন্দিত এ কথাশিল্লীর মরণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপর তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যান। সেখানে ২০১২ সালের ১৬ জুলাই তিনি লাইফ সাপোর্টে চলে যান। ১৯ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ২৩ জুলাই দেশে ফিরিয়ে আনা হয় হুমায়ূন আহমেদের মরদেহ। ২৪ জুলাই তাকে দাফন করা হয় তার গড়ে তোলা গাজীপুরের নুহাশপল্লীর লিচুতলায়।

বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৪ সালে ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৯০), লেখক শিবির পুরস্কার (১৯৭৩), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (১৯৯৩ ও ১৯৯৪) ও বাচসাস পুরস্কার (১৯৮৮) লাভ করেন।

হুমায়ূন আহমেদের প্রয়াণ দিবসটিকে আজ তার পরিবারে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে পালন করা হবে এবং তার গড়া স্বপ্নের স্কুল শহিদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ, কেন্দুয়া রিপোর্টার্স ক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে শোকর্যালি, দোয়া মাহফিল, হুমায়ূন স্মরণে আলোচনা সভাসহ হুমায়ূনের লেখা গান পরিবেশন করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে লাখ টাকা জরিমানা

ক্রেতা সেজে মাদক কারবারিকে ধরল ডিবি পুলিশ

যোগদান করলেন বাকৃবির নবনিযুক্ত উপাচার্য

ডর্‌পের কর্মশালায় ‘স্মোকিং জোন’ বিলুপ্তির প্রস্তাব

হত্যা মামলায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাহ আলী গ্রেপ্তার

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ইবিতে মিছিল

সিলেটে পাথরবোঝাই ট্রলিচাপায় কিশোর নিহত

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ববিতে বিক্ষোভ

ব্রাহ্মণপাড়ায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মারধর ও লাঞ্ছিতের অভিযোগ

হাতিয়া উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদককে শোকজ

১০

বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে চবিতে মশাল মিছিল

১১

শহীদদের স্মরণে ববিতে দ্রোহের গান ও আজাদী সন্ধ্যা

১২

খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত

১৩

দেশকে নতুন করে সাজাতে হবে : ডিআইজি মঞ্জুর মোরশেদ

১৪

বনানীতে বিপুল পরিমাণ মদ জব্দ

১৫

দিনমজুরকে গলা কেটে হত্যা, ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন

১৬

জাবিতে কোনো কমিটিই নেই, হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে : ছাত্রদল

১৭

মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রাণ গেল গৃহবধূর

১৮

সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গ্রেপ্তার

১৯

দেশের ৩ অঞ্চলে হিট ওয়েভের শঙ্কা

২০
X