স্বল্প টাকায় মালয়েশিয়া নেওয়ার কথা বলে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ১২ যুবককে মিয়ানমারে নিয়ে বন্দি করে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে। তাদের মুক্ত করার জন্য পরিবারের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছে ওই দালাল চক্র। এরই মধ্যে নির্যাতনে আমিনুল নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।
মিয়ানমারে বন্দিদশায় যারা আছেন তারা হলেন উপজেলার মানিকপুর গ্রামের মো. নাদিম, চৈতনকান্দার রতন মিয়া, একই গ্রামের আছান, উলুকান্দির মনির হোসেন, বিশনন্দীর মো. সজীব, মো. কবির হোসেন, শরিফপুরের মো. জুয়েল, কড়ইতলার মো. বিল্লাল হোসেন, বিশনন্দী পশ্চিমপাড়ার মো. সজীব, চৈতনকান্দার সাফায়েত হোসেন, মো. সফিকুল ও রফিকুল ইসলাম।
ওই ১২ পরিবারের সদস্যরা ভুক্তভোগীদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে আড়াইহাজারের ইউএনওর কাছে একটি লিখিত আবেদন করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই আড়াইহাজার উপজেলায় শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে এক আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্র ও তাদের স্থানীয় এজেন্টরা। এই চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন গ্রামের অনেক যুবক। অনেকে আবার প্রাণ হারাচ্ছেন।
এরই মধ্যে আড়াইহাজারের কড়ইতলা, রামচন্দ্রদী, মানিকপুর, চৈতনকান্দা, দয়াকান্দা, টেটিয়া ও শম্ভুপুরা থেকে অনেক যুবককে এভাবে পাচার করা হয়েছে। জিম্মিদশায় থাকা অবস্থায় দালাল চক্রের নির্যাতনে নিহত হন আমিনুল (৩৯) নামে এক যুবক। এ ঘটনায় আড়াইহাজার থানা পুলিশ আবুল হোসেন নামে দালাল চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
মিয়ানমারে আটক বিল্লাল হোসেনের মা সেলিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, আমার ছেলেকে মিয়ানমারের জেলখানায় আটকে রেখে অনেক নির্যাতন করা হচ্ছে এবং আমাকে ফোন করে মুক্তিপণের জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছে দালালরা। টাকা দিতে পারিনি বলে আমার ছেলেকে মুক্ত করে আনতে পারছি না।
অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা ওকাপ নামের এক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম জানান, আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিখোঁজ ও জিম্মি ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করেছি। তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে ওকাপের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার আমরা তাই করব।
আড়াইহাজারের ইউএনও ইশতিয়াক আহাম্মেদ বলেন, আমি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করে তার পরামর্শ অনুযায়ী এবং প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
মন্তব্য করুন