দেবাশীষ মণ্ডল আশীষ, নেছারাবাদ (পিরোজপুর)
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৩ জুলাই ২০২৩, ১২:৩৯ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বর্ষায় জমজমাট নৌকার হাট

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার আটঘর-কুড়িয়ানার ঐতিহ্যবাহী ভাসমান নৌকার হাট। ছবি: কালবেলা
পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার আটঘর-কুড়িয়ানার ঐতিহ্যবাহী ভাসমান নৌকার হাট। ছবি: কালবেলা

পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার আটঘর-কুড়িয়ানার ঐতিহ্যবাহী ভাসমান নৌকার হাট এখন জমজমাট। খালের পাড়ে বেঁধে রাখা সারি সারি ডিঙি নৌকা। খাল বেয়ে নৌকা নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা। বড় নৌকা কিংবা ট্রলারে করেও হাটে নিয়ে আসা হচ্ছে আবহমান বাংলার অতি পরিচিত এই জলযান। বর্ষা মৌসুমের শুরুতে জমজমাট থাকে এই হাট। এবারও অনেক ধরনের ছোট ছোট ডিঙি নৌকা উঠছে হাটে। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতা-বিক্রেতার পাশাপাশি এই হাট দেখতে আসেন পর্যটকরাও। আটঘর-কুড়িয়ানার খালে সপ্তাহে সোম ও শুক্রবার দুই দিন এই দৃশ্য চোখে পড়ে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে এই হাট। এটি দক্ষিণ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় নৌকার হাট নামে পরিচিত।

পিরোজপুরের নেছারাবাদ, ঝালকাঠির ভীমরুলি, বরিশালের বানারীপাড়াসহ দক্ষিণাঞ্চলের এই এলাকাগুলোয় ব্যাপক আকারে পেয়ারা ও আমড়ার চাষ হয়। হাটে আসা একাধিক নৌকা বিক্রেতা ও স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে এ উপজেলার দেশবরেণ্য কুড়িআনার আপেলখ্যাত পেয়ারা, আমড়া, চাই দিয়ে মাছ ধরা এবং গো-খাদ্য সংগ্রহে নৌকার কদর বেশি। মূলত এই আমড়া ও পেয়ারার চাষ হয় খাল তীরবর্তী বাগানে, যা সংগ্রহ করতে প্রয়োজন হয় নৌকার। একই সঙ্গে জলপ্রধান এলাকা বলে মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার জন্যও নৌকার দরকার হয়। আবার এসব এলাকার প্রায় প্রতিটি পরিবারই যাতায়াতের জন্য নিজস্ব নৌকা ব্যবহার করেন। আটঘর নৌকার হাটের মূল ক্রেতা তারাই।

নৌকা ব্যবসায়ী স্বপন হাওলাদার বলেন, হাটের দিন ভোরে কারিগরদের কাছ থেকে নৌকা কিনে ট্রলারে করে হাটে নিয়ে বিক্রি করেন। বেচা-বিক্রি ভালো হলে প্রতি হাটে ৫০ থেকে ৬০টি নৌকা বিক্রি হয়। নৌকাপ্রতি লাভ হয় ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। আবার কখনো লোকসানও গুনতে হয়।

নৌকা তৈরির কারিগর শেখর মজুমদার বলেন, এখন সুন্দরী কাঠ পাওয়া যায় না তেমন। কড়ই, চম্পল ও মেহগনি কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয় নৌকা। পূর্বপুরুষ এই পেশার সঙ্গে জড়িত ছিল, জন্মের পর থেকে আমিও নৌকা তৈরি করেই জীবনযাপন করি।

আটঘর-কুড়িয়ানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিঠুন হালদার বলেন, বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতা যাতে হয়রানির শিকার না হন, এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যটকদের বসার জন্য প্রয়োজনে বড় ছাতা ও শেডের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। বাজারকে ঘিরে আরও বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব উল্লাহ মজুমদার বলেন, ঐতিহ্যবাহী হাটটি শতবর্ষী। এখানে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা ভ্রমণ করতে আসেন। হাটের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে উপজেলা প্রশাসন সবসময় লক্ষ রাখছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সিমেন্ট শিল্পের সংকট ও সম্ভাব্য সমাধান শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

নাফীসের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানাল বিসিবি

মাসজুড়েই বন্যার শঙ্কা

আবারও মহাসড়ক অবরোধ করলেন রাবি শিক্ষার্থীরা

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে / চলমান শিক্ষক আন্দোলনের দ্রুত যৌক্তিক সমাধান জরুরি

কোয়ার্টারে ব্রাজিলের ম্যাচে আর্জেন্টিনার রেফারি

তিস্তার পানির ব্যবস্থাপনায় পাশে থাকবে মোদি জানালেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেবে সেভ দ্য চিলড্রেন

চাঁদ জয়ের প্রস্তুতি নিতে শিশুদের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

৬ষ্ঠ দিনেও আন্দোলনে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

১০

টিউলিপ কী মন্ত্রী হচ্ছেন?

১১

বন্যা নিয়ে দুঃসংবাদ দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রীর

১২

জিম্মিদের মুক্তিতে মার্কিন প্রস্তাবে সম্মত ফিলিস্তিনিরা

১৩

নিজ এলাকায় চিকিৎসা নিতে এমপিদের অনুরোধ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

১৪

দেশের প্রথম আইন বিশ্ববিদ্যালয় হবে শিবচরে : আইনমন্ত্রী

১৫

তাঁতীবাজার সড়ক অবরোধ / গান-কবিতায় বেগবান হচ্ছে জবি শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন

১৬

প্রথম কার্য দিবসে কী করবেন যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী?

১৭

এসিআইয়ে অভিজ্ঞতা ছাড়া চাকরি, আছে বিদেশ ভ্রমণের সুবিধা

১৮

বাবাকে খুঁজে পেতে নড়াইলের তরুণী পাবনায়

১৯

এবার বেনজীরের ডুপ্লেক্স বাড়ি জব্দ

২০
X