ঘোষণা অনুযায়ী ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে ‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্ট শুরু হয় গতকাল শনিবার বিকেল ৪টায়। লাইনআপ অনুযায়ী প্রথমেই মঞ্চে ওঠে সিলসিলা। তারা পারফর্ম শেষ করার পর একে একে র্যাপ সংগীতশিল্পী পরিবেশন করেন সেজান ও হান্নান। ততক্ষণে ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামের আশপাশের যানবাহন থমকে গেছে। নেমেছে সন্ধ্যা। এরপর স্টেজে আসে আফটারম্যাথ। গেয়ে শোনায় শ্রোতাপ্রিয় একাধিক গান। এরপর বিরতি।
গতকাল দুপুর থেকেই ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে দর্শক উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো লক্ষ করা যায়। কালবেলার সঙ্গে আগত দর্শকের অনেকেই বলেন কথা। জানান তারা রাহাত ফতেহ ছাড়াও দেশীয় ব্যান্ডগুলোর গান উপভোগ করতে এসেছেন। এর মধ্যে অনেকেই আবার কালবেলার ক্যামেরায় পাকিস্তানি এই শিল্পীর গানও গেয়ে শুনান।
বিরতি শেষে স্টেজে ওঠে দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড চিরকুট। এরপর সুমির দল দেশাত্মবোধক গানের পাশাপাশি নিজেদের জনপ্রিয় সব গান গেয়ে শোনায়, তাদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে শ্রোতারও গায় জাদুর শহর, মরে যাব রে, কানামাছিসহ বেশকিছু গান। নিজেদের পাঁচটির মতো গান পরিবেশন করে ৭টার কিছু পরে মঞ্চ থেকে নামে ব্যান্ড চিরকুট। এরপর আবারও দেওয়া হয় বিরতি।
‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্টটি থেকে অর্জিত অর্থ ছাত্র-জনতার জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সহায়তায় খরচ করা হবে। এদিন ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামের এই চ্যারিটি কনসার্টের প্রধান আকর্ষণ ছিলেন জনপ্রিয় পাকিস্তানি সংগীতশিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খান। কনসার্টটি আয়োজন করেছে শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম স্পিরিট অব জুলাই। তাই এদিন আগত শ্রোতাদের সব অপেক্ষা যেন তাকে ঘিরেই ছিল।
এরপর বিরতি শেষের আগে মঞ্চে ওঠেন সমন্বয়ক নেতা সারজিস আলমসহ আরও কয়েকজন। তারা আগত শ্রোতাদের মাঝে জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি তুলে ধরেন। তারা মঞ্চ থেকে নামার পর রাত ৮টা ২০মিনিটে দেশের ব্যান্ডের মধ্যে সর্বশেষ স্টেজে আসে আর্টসেল। গেয়ে শোনায় নিজেদের কালজয়ী কয়েকটি গান। লিংকন-ফয়সালদের পারফর্ম শেষের মধ্য দিয়ে অপেক্ষা শেষ হয় সবার।
রাত ৯টার কিছু সময় পর কনসার্টের মধ্যমণি রাহাত ফতেহ আলী খান আসেন শ্রোতাদের সামনে। এ সময় মঞ্চের সামনে থেকে ভেসে আসে তার নামের ধ্বনি। তিনিও শ্রোতাদের এমন হৃদয় ভরা ভালোবাসা গ্রহণ করে ছুঁড়ে দেন সুরের মুগ্ধতা। মুহূর্তেই দখল হয়ে যায় আগত দর্শকদের কণ্ঠ। তার সঙ্গে সঙ্গে সবাই গাইতে থাকেন এই শিল্পীর জনপ্রিয় সব গান। তার গায়কি শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ আয়োজন। স্টেজ ছাড়ার আগে এমন ভালোবাসা পেয়ে জানিয়ে যান, ঢাকার দর্শক তার হৃদয় জুড়িয়ে দিয়েছে।
এদিন রাহাতসহ দেশীয় শিল্পী ও ব্যান্ডের গান উপভোগ করতে শ্রোতাদের গুনতে হয় ভিআইপি টিকিটের জন্য ১০ হাজার টাকা, ফ্রন্ট রো ৪ হাজার ৫০০ টাকা ও জেনারেল টিকিট ২৫০০ টাকা।