আমজাদ হোসেন শিমুল, রাজশাহী
প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৪৯ এএম
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১১ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

৫ হাজার টাকা দিলেই সুস্থ মানুষ পান প্রতিবন্ধী কার্ড!

বাঘা সমাজসেবা কার্যালয়
৫ হাজার টাকা দিলেই সুস্থ মানুষ পান প্রতিবন্ধী কার্ড!

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের মালিয়ানদহ গ্রামের মনোয়ারা বেগম। বছরখানেক আগে দুর্ঘটনায় ডান হাতের আঙুলে আঘাত পেয়েছিলেন। আঙুলে ক্ষতচিহ্ন থাকলেও তিনি পুরোপুরি সুস্থ। অথচ এই আঙুল দেখিয়ে ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে পেয়েছেন শারীরিক প্রতিবন্ধীর কার্ড। এরই মধ্যে প্রতিবন্ধী ভাতার ৭ হাজার টাকাও তুলেছেন।

একই গ্রামের নবম শ্রেণির ছাত্র আকবর আলী (ছদ্মনাম)। ছোটবেলায় পেটে একটুখানি পুড়ে গিয়েছিল। এখন পোড়া দাগও তেমন দেখা যায় না। অথচ ৩ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে তাকেও দেওয়া হয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধীর কার্ড। একই ইউনিয়নের জোতকাদিরপুর গ্রামের ববিতা বেগমকেও ৩ হাজার টাকার বিনিময়ে শারীরিক প্রতিবন্ধীর কার্ড দেওয়া হয়েছে। তিনিও পুরোপুরি সুস্থ। মালিয়ানদহ গ্রামের বৃষ্টি খাতুনকে (২৪) দেওয়া হয়েছে শ্রবণ প্রতিবন্ধীর কার্ড। তিনি পরিপূর্ণ সুস্থ ও কানে ঠিকঠাক শোনেন।

এ তো গেল চারজনের কথা। এভাবে ঘুষের বিনিময়ে বাঘা উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে বিভিন্ন এলাকার অন্তত ৭১২ জনকে ‘প্রতিবন্ধী কার্ড’ করে দেওয়ার তথ্য মিলেছে। আর এই জালিয়াতির প্রধান কারিগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন। তার বিরুদ্ধে ভিক্ষুক পুনর্বাসনে দোকান করে দেওয়ার টাকাতেও ভাগ বসানোর অভিযোগ রয়েছে। অসহায়-গরিব মানুষের এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে স্বল্প সুদে নিজে ও আত্মীয়ের নামে ঋণ নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এদিকে কালবেলার অনুসন্ধানের বিষয়টি জানাজানি হলে কর্তৃপক্ষ সমাজসেবা কার্যালয়ের এই কর্মকর্তার জালিয়াতির তথ্য অনুসন্ধানে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। রাজশাহীর পি এইচ টি সেন্টারের তত্ত্বাবধায়ক (সহকারী পরিচালক) মোহাম্মদ তৌহিদুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

এরই মধ্যে এ কমিটি তদন্ত শুরু করেছে। আর গত সোমবার সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালকের নেতৃত্বে একটি টিম ঢাকা থেকে এসে সরেজমিন তদন্ত করে গেছে।

কালবেলার অনুসন্ধানে জানা গেছে, সানোয়ার হোসেন গত বছরের ১২ অক্টোবর বাঘায় সমাজসেবা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হিসেবে যোগদান করেন। এ সময়ের মধ্যে তার পূর্ববর্তী তিনজন কর্মকর্তার (যারা বাঘায় সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন) স্বাক্ষর জাল করে তিন কিস্তিতে ‘ব্যাক ডেটে’ টাকার বিনিময়ে অধিকাংশই সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষকে ভুয়া প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। কালবেলা অনুসন্ধান চালিয়ে এমন ৭১২টি প্রতিবন্ধী কার্ড হাতে পেয়েছে। এই কার্ডগুলোর কিছু ১৬ মার্চ ২০২১, ৭ এপ্রিল ২০২২ এবং কিছু কার্ড ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালের ইস্যু করা। এসব কার্ডে যখন যে কর্মকর্তা দায়িত্বে ছিলেন সংশ্লিষ্ট সেই কর্মকর্তা স্বাক্ষর রয়েছে। তবে ভিন্ন সন-তারিখে প্রতিবন্ধী এসব কার্ড ইস্যু হলেও বর্তমান কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেনের সময়ই বিতরণ করা হয়েছে। সানোয়ার হোসেন এসব ভুয়া কার্ড ইস্যুর সঙ্গে সরাসরি জড়িত, এমন কিছু কল রেকর্ড কালবেলা প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিতে মো. রিয়াদ মোবারক নামের এক যুবককে ব্যবহার করেন সানোয়ার হোসেন। এই যুবকই সমাজসেবা কার্যালয়ের ‘প্রতিবন্ধী বানানোর আজব এই কারখানা’র গোমর ফাঁস করে দিয়েছেন। প্রতিবেদকের কাছে রিয়াদ অকপটে সবকিছু স্বীকারও করেছেন। মূলত এই রিয়াদকেই সমাজসেবা কর্মকর্তা সানোয়ার নাটের গুরু হিসেবে ব্যবহার করেছেন। রিয়াদকে প্রথমে ‘ফাঁদ’ হিসেবে বাঘার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার জনপ্রতিনিধিদের কাছে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার বার্তাবাহক হিসেবে পাঠানো হতো। রিয়াদ বিভিন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও কাউন্সিলদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এলাকার গরিব-অসহায়দের টাকার বিনিময়ে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতেন। রিয়াদ সংশ্লিষ্ট মেম্বার-কাউন্সিলরদের থেকে গরিব-অসহায় মানুষদের প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ছবি ও ‘ঘুষের টাকা’ সানোয়ারকে এনে দিতেন। আর সানোয়ার ব্যাক-ডেটে সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষকে সর্বনিম্ন দেড় হাজার থেকে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে করে দিতেন ভুয়া প্রতিবন্ধী কার্ড। অনুসন্ধানে টাকার বিনিময়ে উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নে ৪০টি, মনিগ্রাম ইউনিয়নে ২০টি, আড়ানি ইউনিয়নে ১৩০টি, আড়ানী পৌরসভা এলাকায় ১৬০টি, গড়গড়ী ইউনিয়নে ১৫২টি, বাজুবাঘা ইউনিয়নে ৪০টি, চকরাজাপুর ইউনিয়নে ১০টি এবং বাঘা পৌরসভা এলাকায় ১৬০টি প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। সব মিলিয়ে ৭১২ জনকে এই প্রতিবন্ধী কার্ড দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে অন্তত ২৫ লাখ টাকা।

পাকুড়িয়া ইউনিয়নের মালিয়ানদহ গ্রামের সাবিনা খাতুন বলেন, ‘আমি কানে কম শুনি বলে ৩ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে কার্ড করতে দিয়েছি। কিন্তু সেই কার্ড এখনো হাতে পাইনি। শুনেছি, কয়েকদিনের মধ্যেই কার্ড পেয়ে যাব।’

একই এলাকার আমিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমার এলাকায় অনেক অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী মানুষ আছে, অথচ তারা কার্ড পায়নি। কিন্তু হাজার হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে অনেক সুস্থ-সবল মানুষ প্রতিবন্ধী কার্ড করে নিয়েছে। শুধু পাকুড়িয়া ইউনিয়নেই নয়, উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় এমন অনেক সুস্থ মানুষকে টাকার বিনিময়ে ভুয়া কার্ড করে দেওয়া হয়েছে।’

বাঘা পৌরসভার সদ্য সাবেক সংরক্ষিত (৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড) কাউন্সিলর হাজেরা বেগম বলেন, ‘প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য গত বছর ৫০ জনের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা ও কাগজপত্র সংগ্রহ করে দেড় লাখ টাকা সমাজসেবা কর্মকর্তা সানোয়ারকে দিয়েছি। তিনি প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিয়েছেন। এরপর ভাতা করে দেওয়ার নাম করে আরও ২ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। কিন্তু ভাতা করে দিচ্ছেন না। এখন আমি এলাকার লোকজনের চাপ সামাল দিতে পারছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভিক্ষুকের জন্য ৫০ হাজার টাকা এসেছিল। আমাকে সানোয়ার সাহেব ডেকে বললেন, একজন ভিক্ষুক খুঁজে দেন তাকে ৫০ হাজার টাকা দেব। কিন্তু তার আগে ওই ভিক্ষুকের কাছ থেকে আমাকে ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। আমি এক ভিক্ষুকের থেকে ১০ হাজার টাকাও নিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ২০ হাজার টাকাই দাবি করেন। উনি (সানোয়ার) বলেন, ২০ হাজার দিতে না পারলে অন্যজনকে দেব। পরে ওই টাকা কাকে দিয়েছেন জানি না।’

বাজুবাঘা ইউনিয়নের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান (১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড) রুমা খাতুনের স্বামী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সমাজসেবা কর্মকর্তা সানোয়ার রিয়াদের মাধ্যমে আমাকে বলেন, ৩ হাজার করে টাকা দিলেই একজন ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়া হবে। তাদের কথামতো, আমার এলাকার ৩০ জনের কাছ থেকে ৩ হাজার করে টাকা নিয়ে মোট ৯০ হাজার টাকা তুলে প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য অফিসারকে দিই। পরে আমাকে ৩০টি প্রতিবন্ধী কার্ডই দেওয়া হয়। কিন্তু ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে গিয়ে দেখি, এসব কার্ড দিয়ে আবেদন করা যাচ্ছে না। তার মানে ভুয়া কার্ড দিয়েছে। এলাকার লোকজন আমার বাড়িতে এসে টাকা চাচ্ছে। কিন্তু অফিস থেকে আমাকে এই টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে না।’

আড়ানী ইউনিয়নের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান (৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড) আদুরি বেগম বলেন, “আগের দুই বছর প্রতিবন্ধী কার্ড করতে কোনো টাকা লাগেনি। পরে সমাজসেবা অফিসে খুবই অসুস্থ এক রোগী নিয়ে গেলাম। বর্তমান অফিসার চোখ তুলে তাকালেনই না। তখন রিয়াদ অফিসারের সামনেই ছিলেন। বাইরে বের হয়ে এসে রিয়াদ বললেন, ‘আপনারটা হবে, তবে কিছু টাকা লাগবে।’ টাকা দিয়ে সেই কার্ড হলো। এভাবে কার্ডের জন্য ৩ হাজার আর ভাতার জন্য ২ হাজার টাকা করে দিয়ে আরও বেশ কিছু কার্ড করলাম। এখন এসব কার্ড ভাতার জন্য অনলাইনে নিচ্ছে না। আমি এলাকার মানুষের কাছে বেইজ্জতি হচ্ছি। এর চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো।”

একই অভিযোগ আড়ানী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নওশাদ আলী সরকার, সাবেক মহিলা কাউন্সিলর মর্জিনা বেগম এবং ওই এলাকার সমাজসেবক মো. এমরান আলীরও। তারা সবাই রিয়াদের মাধ্যমে টাকা দিয়ে প্রতিবন্ধী কার্ড করেছেন। কিন্তু এই কার্ড দিয়ে কেউই ভাতার জন্য আবেদন করতে পারছেন না।

গত বছরের ৩১ জুলাই থেকে ১২ অক্টোবর বাঘা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা ছিলেন মো. রাশেদুজ্জামান। তারও সই নকল করে হয়েছে প্রতিবন্ধী কার্ড। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবকিছুই অনলাইনে এন্ট্রি থাকে। আমি মাত্র সাড়ে তিন মাস দায়িত্বে ছিলাম। এ সময়ে যে কার্ডগুলো করেছি, সেগুলোর ডকুমেন্টস আছে। এগুলো ছাড়া যদি আমার স্বাক্ষর কেউ জাল করে কার্ড করে থাকে, তাহলে সেগুলো নিঃসন্দেহে ভুয়া। আমি চাই, যে বা যারা এগুলো করেছে প্রকৃত দোষীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কর্মকর্তার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত রিয়াদ মোবারক বলেন, ‘উনি (সানোয়ার) আমার মাধ্যমে ভালো মানুষকে প্রতিবন্ধী কার্ড করাতেন। মূলত আমি বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে এসে স্যারকে দিতাম। স্যার কার্ড করে দিলে আমি সেগুলো তাদের কাছে পৌঁছে দিতাম। এর বিনিময়ে স্যার প্রথম দিকে আমাকে ৩ হাজার এরপর ৬ হাজার, পরে ৯ এবং সর্বশেষ ১১ হাজার টাকা মাসে দিতেন। এ ছাড়া তিনি ফরমপ্রতি আমাকে ৫০ টাকা দিতেন। আমি কাজ ঠিকঠাকই করছিলাম। কিন্তু তিনি আমার মাধ্যমে যে কার্ডগুলো করে দিতেন, তাতে তার স্বাক্ষর ছিল না। তার কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে ব্যাক ডেটে এগুলো ইস্যু করে দিতেন। এ নিয়ে আমি স্যারের কাছে জানতেও চেয়েছিলাম। তিনি বলেছেন, এগুলো যদি আমি বর্তমান সময়ে দেখাই, তাহলে এগুলো তো সার্ভারে থেকে যাবে। তখন হেড অফিস থেকে বলবে যে, একমাসে এত প্রতিবন্ধী আমি কীভাবে পাচ্ছি। এজন্য ব্যাক ডেটে করে দিচ্ছি।’

রিয়াদ আরও বলেন, ‘বর্তমানে প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন চলছে। কিন্তু তিনি (সানোয়ার) যে কার্ডগুলো করে দিয়েছেন, সেগুলো অনলাইনে নিচ্ছে না। এখন জনপ্রতিনিধিরা আমাকে এসে ধরছেন। আমি বিষয়টি স্যারকে জানালে তিনি বলেন, আপাতত কয়েক মাস ঢাকায় গিয়ে আত্মগোপনে থাক। আর আমিও দ্রুত বদলি নিয়ে অন্যত্র চলে যাব। পরে ভাবলাম বিপদে তো আমিই পড়ে যাচ্ছি। এজন্য তিনি যা করেছেন সব ফাঁস করে দিয়েছি।’

রিয়াদ বলেন, ‘আমার থেকে কয়েকজন গরিব মানুষকে ঋণ করে দেবেন বলে ভোটার আইডি নিয়েছেন। পরে তিনি সেই ভোটার কার্ড দিয়ে নিজে ও তার এক মামাকে ঋণ নিয়ে দিয়েছেন। এমন আরও অনেক অনিয়ম-দুর্নীতি তিনি করেছেন।’

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সবকিছু অস্বীকার করে অভিযুক্ত বাঘা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি যতটুকু শুনেছি, আমার পূর্ববর্তী তিনজন কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে আমি যোগদানের আগে এই কার্ডগুলো ইস্যু করা হয়েছে। এসব বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। সম্প্রতি অনলাইনে আবেদন শুরু হওয়ার পর যারা আবেদন করতে পারছেন, তারা আমার কাছে আসছেন। তখন আমি তাদের বলি, এগুলো ফেইক, আমার অফিস থেকে দেওয়া না। আর আপনার (প্রতিবেদক) কাছে যে কার্ডগুলো আছে সেগুলো সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছি এমন কোনো প্রমাণ কেউ দেখাতে পারবেন না।’

রিয়াদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কী—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি উপজেলার একজন অফিসার, সে এখানকার একজন সুবিধাভোগী। এ কারণে অফিসে আসত। এর বাইরে তার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।’

উপজেলা কর্মকর্তার এমন ভয়াবহ জালিয়াতির বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের রাজশাহীর বিভাগীয় পরিচালক (যুগ্মসচিব) সৈয়দ মোস্তাক হাসান বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জানার পর রাজশাহী থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এরই মধ্যে কমিটি তাদের কাজ শেষ করেছে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে অতিরিক্ত পরিচালকের নেতৃত্বে একটি টিম রাজশাহীতে এসে তদন্ত করে গেছে। দুটি তদন্ত কমিটি ফাইন্ডিংস সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে যাবে। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে কর্তৃপক্ষ ও তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে মাঝ সমুদ্রে জাহাজ বিকল

বিপিএল উত্তাপে আলোচনায় সাকিব

‘অপরাধীদের প্রতি কোনো ক্রমেই নমনীয় হবে না পুলিশ’

অপশক্তির প্ররোচনায় সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ড, বাসার নিন্দা ও প্রতিবাদ

এবার সানা বিমানবন্দরে ইসরায়েলের হামলা

‘ভারত বাংলাদেশকে একটি নতাজানু দেশ হিসেবে দেখতে চায়’

চাঁদা না পেয়ে হামলার অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও ঘটেনি : চরমোনাইর পীর

সারজিসের বিরুদ্ধে সমন্বয়ক মিতুর শ্লীলতাহানির অভিযোগ দাবিতে ভুয়া ভিডিও

অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশের দল ঘোষণা

১০

নাম গোপন রেখে চাকরি নেওয়ার কারণ জানালেন ইরফান

১১

এবার এভারটনকেও হারাতে পারল না সিটি

১২

‘উসকানি দিয়ে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করা যাবে না’

১৩

আসন ফাঁকা রেখেই বন্ধ হলো নোবিপ্রবির ভর্তি কার্যক্রম

১৪

জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি বাতিলে তারেক রহমানকে স্মারকলিপি

১৫

কুর্দিদের প্রতি এরদোয়ানের ক্ষোভের মূল কারণ

১৬

কাকরাইল মসজিদে সাদপন্থিদের সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ

১৭

যুব মহিলা লীগ নেত্রী সাজেদা গ্রেপ্তার

১৮

ঝিনাইদহে পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

১৯

৯৯৯ থেকে কল এলে সাবধান, পুলিশের সতর্কবার্তা

২০
X