আইনের প্রয়োগ হয় না দাবি করে নির্বাচনের সময় পুরোপুরি ক্ষমতা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে নির্বাচনের সময় কেউ যেন হস্তক্ষেপ করতে না পারে, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কাছে সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
গতকাল বুধবার আগারগাঁয়ের নির্বাচন ভবনে সংস্কার কমিশনের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সচিব শফিউল আজিমের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলের মতবিনিময় সভায় এই প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ সময় সংস্কার কমিশন প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আইনে কমিশনের ক্ষমতার কোনো কমতি নেই; কিন্তু সমস্যা ছিল তার প্রয়োগে।
মতবিনিময় সভা শেষে ইসি সচিব শফিউল আজিম সাংবাদিকদের বলেন, হস্তক্ষেপ কোথা থেকে, কীভাবে হয় এবং আইনগত কর্তৃত্বের বাইরে নির্বাচনে কীভাবে হস্তক্ষেপ করে—এগুলো নিয়ে আমরা খোলামেলা আলোচনা করেছি। কোনো ধরনের রাখঢাক করিনি, যাতে সংস্কার কার্যক্রম ফলপ্রসূ হয়।
সচিব বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে আমরা যেটা বলেছি, নির্বাচন কমিশন তো নির্বাচন একা করে না। সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রের সব অর্গান নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করে এবং নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে, সংবিধান ও আইনে সেই ক্ষমতা যেন পুরোপুরি প্রয়োগ করা যায়। আইনের প্রয়োগ কিন্তু পুরোপুরি হয় না। আইনের প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে যাতে নির্বাচন কমিশন, কমিশনাররা ও কর্মকর্তারা কোনো ধরনের কোনো কর্তৃপক্ষের বাধাগ্রস্ত না হন, অন্য কেউ যাতে এখানে হস্তক্ষেপ করতে না পারে, আমাদের পক্ষ থেকে সেই সুপারিশ আছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ইসি সচিবের নেতৃত্বে কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমরা মতবিনিময় করেছি। তারা আগে নির্বাচন করেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন। তারা অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। কোন বিষয়ে আমাদের মনোযোগ দেওয়া দরকার এবং অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার, সে মতামত নিয়েছি আমরা। আইনকানুন, বিধিবিধান যেগুলো আরও শক্তিশালী করা দরকার, কমিশনের কার্যকারিতা কীভাবে বাড়ানো যায়, সেগুলোর বিষয়ে পরামর্শ ছিল। মাঠ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ যারাই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করে, তারা যেন আরও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, সেসব বিষয় নিয়ে আলোচন হয়েছে।
কমিশন প্রধান বলেন, একটা বিষয় সুস্পষ্টভাবে এসেছে। সেটা হলো, আমাদের আইনকানুন ও বিধিবিধানের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সেগুলো দূরীভূত করা দরকার। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো প্রয়োগ। নির্বাচন কমিশনকে সংবিধান ও আদালতের মাধ্যমে অগাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আপিল বিভাগের একটা রায়ে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা আছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের খাতিরে তারা বিধিবিধানের সঙ্গে সংযোজনও করতে পারে। অগাধ ক্ষমতা দেওয়া ছিল। এটা প্রয়োগের সমস্যা ছিল। এই সমস্যাটা দূর করতে হবে।